সালেহ্ বিপ্লব: আজ ৫ ডিসেম্বর, ১৯৭১ সালের এই দিনে মৌলভীবাজার জেলার জুড়ী উপজেলা পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর কবল থেকে মুক্ত হয়েছিল। মুক্তিযোদ্ধা ও মিত্রবাহিনীর সিদ্ধান্তে ৪ নম্বর সেক্টরের রানীবাড়ী সাব-সেক্টরের সব ক্যাম্পের মুক্তিযোদ্ধা একসঙ্গে দেশে ঢুকতে প্রস্তুত হন। ৩ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় ভারতের বাগপাশা থেকে রওয়ানা হয়ে হয়ে সীমান্তের রাঘনা নামক স্থানে জুড়ী নদীর ওপর অস্থায়ী সেতু নির্মাণ করেন।
এই সেতু দিয়েই বাংলাদেশে প্রবেশ করেন মুক্তিযোদ্ধারা, সঙ্গে মিত্র বাহিনী। সীমান্তবর্তী ফুলতলা বাজার বিনা বাধায় নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নেন। সেই রাতেই তারা সাগরনাল ইউনিয়নে পাক বাহিনীর ক্যাম্প দখল করে নেন।
ক্যাপ্টেন সুখ লালের নেতৃত্বে কিছু সংখ্যক সৈন্য রয়ে যান সাগরনাল। বাকিরা জুড়ীর দিকে অগ্রসর হন। রত্না চা বাগানের কাছে বাধা দেয় পাকিস্তানী বাহিনী। মুক্তিযোদ্ধাদের প্রবল বিক্রমের সামনে টিকতে না পেরে পাকিস্তানীরা পিছু হটে, তারা কাপনাপাহাড় চা বাগানের দিকে চলে যায়। মুক্ত এলাকায় অবস্থান নেয় যৌথ বাহিনী।
পরদিন সকাল থেকেই আক্রমণে নামে পাকিস্তানী বাহিনী। সমানতালে জবাব দেয় মুক্তিবাহিনী। দুপক্ষেরই বেশ কয়েক জন প্রাণ হারান। এক পর্যায়ে পাকিস্তানী হানাদাররা জুড়ীর দিকে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়।
কাপনাপাহাড় চা বাগানে যৌথবাহিনীর সৈন্যরা দুইভাগে বিভক্ত হয়ে যান। একদল কুলাউড়ার দিকে অগ্রসর হতে থাকে, অপর দলটি জুড়ীর দিকে।
পরদিন ৪ ডিসেম্বর। যৌথবাহিনীর বিমান জুড়ী ও কুলাউড়াতে বোমাবর্ষণ করে। বোমার মুখে দখলদার বাহিনী ওইদিন রাতেই পালিয়ে যায়। শত্রুমুক্ত হয় জুড়ী উপজেলা। ৫ ডিসেম্বর সকালে জয় বাংলা স্লোগানে আকাশ বাতাস কাঁপিয়ে মুক্তিযোদ্ধারা শহরে প্রবেশ করেন লাল-সবুজ পতাকা হাতে। সম্পাদনা: খালিদ আহমেদ
আপনার মতামত লিখুন :