শিরোনাম
◈ ইফতার পার্টিতে আওয়ামী লীগের চরিত্রহনন করছে বিএনপি: কাদের ◈ বাংলাদেশে কারাবন্দী পোশাক শ্রমিকদের মুক্তির আহ্বান যুক্তরাষ্ট্রের ফ্যাশন লবি’র ◈ দক্ষিণ আফ্রিকায় সেতু থেকে তীর্থ যাত্রীবাহী বাস খাদে, নিহত ৪৫ ◈ ভারত থেকে ১৬৫০ টন পেঁয়াজ আসছে আজ! ◈ ২২ এপ্রিল ঢাকায় আসছেন কাতারের আমির, ১০ চুক্তির সম্ভাবনা ◈ ইর্ন্টান চিকিৎসকদের দাবি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী’র সঙ্গে কথা বলেছি: স্বাস্থ্যমন্ত্রী ◈ উন্নয়ন সহযোগীদের একক প্ল্যাটফর্মে আসা প্রয়োজন: পরিবেশমন্ত্রী ◈ ড. ইউনূসের পুরস্কার নিয়ে ভুলভ্রান্তি হতে পারে: আইনজীবী  ◈ ত্রিশালে বাসের ধাক্কায় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রসহ অটোরিকশার ৩ যাত্রী নিহত ◈ এসএসসি পরীক্ষায় আমূল পরিবর্তন, বদলে যেতে পারে পরীক্ষার নামও

প্রকাশিত : ১৬ মে, ২০২২, ০১:৩৮ দুপুর
আপডেট : ২৯ আগস্ট, ২০২২, ০৩:৩১ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রস্তাবনা সম্পর্কে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী

রেহমান সোবহান ও ড. ইউনূস দায়িত্ব নিতে রাজি হবেন কিনা জানি না

ভূঁইয়া আশিক রহমান: ড. রেহমান সোবহান ও ড. ইউনূস অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দায়িত্ব নিতে রাজি হবেন কিনা জানেন না বলে জানিয়েছেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রস্তাবনা সম্পর্কে এই প্রতিবেদককে তিনি বলেন, ড. ইউনূস কেন, আওয়ামী লীগ তো কোনোটাই চায় না। বিএনপিও কি চায়? শুধু আওয়ামী লীগকে দোষ দিয়ে কী লাভ। 

তিনি বলেন, ড. ইউনূস একজন স্বাধীন মানুষ। সারাবিশ্ব তাঁকে মাথায় তুলে নাচে। তাঁকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে আনা যাবে কিনা আমি জানি না। তবে ড. ইউনূস অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দায়িত্ব নিলে বাংলাদেশর সুনাম হবে। দেশে সুশাসন আসবে। নির্বাচনটা ভালো হবে। 

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে জন্য যাদের নাম প্রস্তাব করেছি, তাদের কারও সঙ্গেই আমার কথা হয়নি। আমি যাদের ভালো ও যোগ্য মনে করেছি, তাদের নাম প্রস্তাব করেছি। কারও সঙ্গে আলাপ করিনি। ড. রেহমান সোবহান কিংবা ড. মুহাম্মদ ইউনূস কি চাকরি খোঁজেন? না। তাদের সরকারের আনতে পারলে বাংলাদেশের জন্যই মঙ্গল বা ভালো হবে। তারা দায়িত্ব নিতে রাজি হবেন কিনা আমি জানি না। 

আমার প্রস্তাব রাজনৈতিক দলগুলো কীভাবে নিয়েছে আমি জানি না। তবে আমার এ প্রস্তাবে রাজনৈতিক দলগুলো স্তম্ভিত হয়ে হয়ে গেছেন! তারা ভাবতে পারছে না কী করবে, কী বলবে। প্রস্তাবিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকার নিয়ে আলাপ-আলোচনা করুক। প্রস্তাব আলোচনায় আসছে ধীরে ধীরে। চারদিকে আলাপ হচ্ছে। বিএনপি বা আওয়ামী লীগ এখনো আমার সঙ্গে কোনো যোগাযোগ করেনি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ব্যাপারে।
 
সুশীল সমাজের অনেকেই ফোন করছেন। তবে সুশীল সমাজের লোকজন তো আন্দোলন করেন না। আমার শর্ত হলো, যারা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে থাকবেন, ২০২৮ সাল পর্যন্ত কোনো নির্বাচন করতে পারবেন না। কোনো দলকানা হতে পারবেন না। নিজেদের আয়-রোজগারের হিসাব দিতে হবে জনগণের কাছে। তবেই তারা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সদস্য হতে পারবেন। 

স্বজ্জন-সাহসীরা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে সদস্য হতে পারবেন। দেশের জন্য সুষ্ঠু নির্বাচন করাবেন। সুশাসন নিশ্চিত করবেন। যাদের নাম আমি প্রস্তাব করেছি, তারা যোগ্য মানুষ। আমার অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রস্তাব ব্যক্তিগত নয়। দেশের শান্তি, সমৃদ্ধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হোক দেশে, সেটা চাই আমি।


প্রস্তাবিত অন্তবর্তীকালীন সরকারের ফর্মুলা

এর আগে দুই বছর মেয়াদের অন্তবর্তীকালীন সর্বদলীয় সরকারের ফর্মুলা দিয়েছিলেন ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। রোববার রাতে তিনি লিখিত আকারে তার প্রস্তাব তুলে ধরেছেন। 

তিনি বলেছেন, সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার পরিবর্তন নীতিতে আস্থা সৃষ্টি এবং সুশাসন প্রতিষ্ঠার জন্য প্রয়োজন রাষ্ট্রপতির অধ্যাদেশ ও গণভোটে নির্বাচিত এই জাতীয় সরকার। 

তার প্রস্তানুযায়ী রাষ্ট্রপতি হবেন অধ্যাপক রেহমান সোবহান, অথবা ড. কামাল হোসেন। জনসংযোগ, স্বরাষ্ট্র ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে প্রধানমন্ত্রী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

দুর্নীতি দমনে বিগ্রেডিয়ার জেনারেল (অব.) সাখাওয়াত হোসেন, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ও শহীদদের তালিকা প্রণয়নে প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্বে ইশতিয়াক আজিজ উলফাত, জবাবদিহিতামূলক গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য ড. বদিউল আলম মজুমদার এবং সাবেক সেনা প্রধান জেনারেল (অব.) ইকবাল করিম ভুইয়া প্রতিরক্ষা।

আইন, সংসদ ও সংবিধান সংস্কারে ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন। সঙ্গে মানবাধিকার ও আইন কমিশনে অধ্যাপক আসিফ নজরুল; আবুল হাসান চৌধুরী (কায়সার) পররাষ্ট্র ও বৈদেশিক সম্পর্কে, প্রতিমন্ত্রী বিএনপির শ্যামা ওবায়েদ, অর্থ ও দরিদ্রতা নিরসনে ড. বিনায়ক সেন অর্থনীতিবিদ, ব্যাংক ও মানিলন্ডারিং নিয়ন্ত্রণে ড. সালেহ উদ্দিন আহমদ, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ও সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণে এস এম আকরাম, সংখ্যালঘু ও আদিবাসীর দায়িত্বে অধ্যাপক সুকোমল বড়ুয়া, আন্তর্জাতিক বাণিজ্য সম্পর্কিত দায়িত্বে ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য।

শিক্ষা ও মানব উন্নয়নে অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে থাকবেন অধ্যাপক কাজী কামরুজ্জামান। সঙ্গে ওষুধ প্রশাসনের প্রধানের দায়িত্বে বিএসএমএমইউ অধ্যাপক সাইদুর রহমান খসরু এবং মেডিকেল ও প্যারামেডিকেল শিক্ষার ব্যাপক প্রসারের দায়িত্বে গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য অধ্যাপক আবুল কাশেম চৌধুরী, শিল্প বাণিজ্যের দায়িত্বে শেখ বসিরুদ্দিন আকিজ, তথ্য সম্প্রচার ও মিডিয়া দায়িত্বে শিল্পপতি-মিডিয়া মালিক এ কে আজাদ; স্থানীয় শাসন ও প্রদেশ সৃষ্টি সংক্রান্ত মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে ড. তোফায়েল আহমেদ।

নৌপথ, নৌবন্দর, আন্তর্জাতিক নদীর পানির অধিকার সংক্রান্ত মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে প্রকৌশলী ইনামুল হক, বিদ্যুৎ ও জ্বালানীর দায়িত্বে প্রকৌশলী সামসুল আলম, নগর উন্নয়ন ও যোগাযোগে স্থপতি মুবাশ্বের হোসেন। প্রবাসী কল্যাণ এবং বৈদেশিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে সংযোগ স্থাপন স্থাপনে প্রবাসী শিক্ষাবিদ অধ্যাপক হাসনাত হোসেন, এমবিই।

ধর্ম ও নৈতিকতায় শিক্ষাবিদ অধ্যাপক পারভীন হাসান, সংস্কৃতি-যাত্রা ও মেলার প্রসারে গায়িকা শিল্পী নবনীতা চৌধুরী, পরিবেশ ও প্রাণীজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে অ্যাডভোকেট সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, শ্রমিক কল্যাণ ও নিরাপদ সড়ক দায়িত্বে বাম সম্মিলিত জোট প্রতিনিধি মনজুরুল আহসান। নারী ও যুব উন্নয়নে বিএনপি প্রতিনিধি ব্যারিষ্টার জাইমা রহমান, মানবাধিকার ও সমাজ কল্যানে আওয়ামী লীগ প্রতিনিধি শেখ রেহানা এবং খাদ্য সরবরাহ ও রেশনিং-এ মতিয়া চৌধুরী। সংগে কৃষি ও কৃষক সমবায় প্রসারে ড. শওকত আলী, সাবেক সচিব। 

জাতীয় সরকারের সদস্য, ন্যায়পাল ও বিভিন্ন কমিশনের চেয়ারম্যানরা ২০২৮ সন পর্যন্ত কোন নির্বাচনে অংশ নেবেন না। তাদের সকল আর্থিক তথ্য জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে।

জাতীয় সরকারের প্রধান করণীয়

প্রথম তিন মাসের মধ্যে নতুন করে নির্বাচন কমিশন গঠন, নির্বাচনী আইনের কতক ধারার সংস্কার, গণভোট এবং না ভোটের প্রচলন, প্রকাশ্যে পান সেবন ও ধূমপান নিষিদ্ধকরণ এবং ১৯৮২ সনের জাতীয় ওষুধ নীতিপুরোপুরি কার্যকর।

পরবর্তী ছয় মাসের মধ্যে করণীয়: বিএনপি নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াসহ সকল রাজনৈতিক কর্মী ও আলেমদের জামিন নিশ্চিত করা। এক বৎসরের মধ্যে তাদের বিচার শেষ করে রায় কার্যকর করা।

সুশাসন ও সকল অঞ্চলের উন্নয়নের জন্য বাংলাদেশকে ১৫/১৭টি প্রদেশে ভাগ করা। জাতীয় নির্বাচনের পূর্বে সকল সরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদের নির্বাচন নিশ্চিত করা হবে।

পরবর্তী ৯ মাসের মধ্যে করণীয়: ২ কোটি দরিদ্র পরিবারের জন্য সাপ্তাহিক রেশনিং চালু, মাসিক ১০০ টাকায় তিন বালবের বিদ্যুৎ সুবিধা এবং মাসিক ২০০ টাকার প্রিমিয়ামে ওষুধসহ সকল প্রাথমিক স্বাস্থ্য পরিচর্যা চালু। 

দুর্নীতির শ্বেতপত্র প্রকাশ করা হবে। অভিযুক্ত ব্যক্তি নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করতে পারবে না। ভোটার তালিকা সংশোধন, জাতীয় পর্যায়ে রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন সহজ করা হবে। 

পেশাজীবী, বয়োজ্যেষ্ঠ অবসরপ্রাপ্ত রাজনীতিবিদ ও সরকারি-বেসরকারি ব্যক্তিদের নিয়ে জাতীয় ও প্রাদেশিক সংসদের উচ্চকক্ষ গঠন করা হবে।

ইলেকট্রনিক ভোটার মেশিন প্রত্যাহার করে নয় মাসের মধ্যে সুষ্ঠ জাতীয় নির্বাচন সমাপন। আইন শৃংখলা নিশ্চিত করে পরবর্তী ছয় মাসের মধ্যে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করা হবে। একই সাথে প্রদেশের সংসদের নির্বাচন পরিচালনা করা হবে। কেন্দ্রীয় সরকার প্রদেশের গভর্নর মনোনয়ন দেবেন, তাঁরা নির্বাচিত হতে পারেন প্রাদেশিক সাংসদ দ্বারা।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়