শিরোনাম
◈ ভুটানের রাজার সঙ্গে থিম্পু পৌঁছেছেন তথ্য প্রতিমন্ত্রী ◈ চট্টগ্রামের জুতার কারখানার আগুন নিয়ন্ত্রণে ◈ জিয়াও কখনো স্বাধীনতার ঘোষক দাবি করেনি, বিএনপি নেতারা যেভাবে করছে: ড. হাছান মাহমুদ ◈ আওয়ামী লীগ সবচেয়ে বড় ভারতীয় পণ্য: গয়েশ্বর ◈ সন্ত্রাসীদের ওপর ভর করে দেশ চালাচ্ছে সরকার: রিজভী ◈ ইফতার পার্টিতে আওয়ামী লীগের চরিত্রহনন করছে বিএনপি: কাদের ◈ বাংলাদেশে কারাবন্দী পোশাক শ্রমিকদের মুক্তির আহ্বান যুক্তরাষ্ট্রের ফ্যাশন লবি’র ◈ দক্ষিণ আফ্রিকায় সেতু থেকে তীর্থ যাত্রীবাহী বাস খাদে, নিহত ৪৫ ◈ ২২ এপ্রিল ঢাকায় আসছেন কাতারের আমির, ১০ চুক্তির সম্ভাবনা ◈ ইর্ন্টান চিকিৎসকদের দাবি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী’র সঙ্গে কথা বলেছি: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

প্রকাশিত : ০৫ অক্টোবর, ২০২২, ০৭:১০ বিকাল
আপডেট : ০৬ অক্টোবর, ২০২২, ০৫:১৯ বিকাল

প্রতিবেদক : মনজুর এ আজিজ

জাতীয় গ্রিডে বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের তদন্ত শুরু

বিদ্যুৎ বিপর্যয়

মনজুর এ আজিজ : জাতীয় গ্রিডের বিপর্যয় সামলে স্বাভাবিক হয়েছে দেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ। কিন্তু হঠাৎ করে এমন বিপর্যয় কেন? এর কারণ অনুসন্ধানে তদন্ত শুরু করেছে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশের (পিজিসিবি) তদন্ত কমিটি। বুধবার তদন্ত সংস্থার প্রধান এবং পিজিসিবির নির্বাহী পরিচালক (পিএন্ড ডি) ইয়াকুব এলাহী চৌধুরী গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানিয়েছেন।

তবে ঘোড়াশাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের দুটি সাব-স্টেশনের মাঝখানে যে ইন্টার কানেকশন রয়েছে, সেখানেই সমস্যা হওয়ার কারেণই মূলত বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের ঘটনা ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে মনে করছেন বিদ্যুৎ সচিব মো. হাবিবুর রহমান। তবে তদন্ত কমিটি ঘোড়াশাল বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে ঢাকায় ফিরে না আসা পর্যন্ত কী কারণে সমস্যা হয়েছিল তা বলা সম্ভব নয় বলেও গণমাধ্যমকে জানান বিদ্যুৎ সচিব।  

বিদ্যুৎ সচিব বলেন, আমাদের তদন্ত কমিটি বুধবার সকালে ঘোড়াশাল বিদ্যুৎকেন্দ্রে গেছে। তারা ঢাকায় ফিরলে আমরা প্রাথমিক ধারণা পাবো। তার আগে বলা যাচ্ছে না কী কারণে সমস্যা হয়েছিল। তবে তিনি বলেন, ঘোড়াশাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের দুটি সাব-স্টেশনের মাঝখানে যে ইন্টার কানেকশন রয়েছে, সেখানেই মূলত সমস্যা। কিন্তু সমস্যাটা কেন হলো সেটা এখনো জানা যায়নি। তা উদ্ঘাটনের জন্য আমাদের অভিজ্ঞ টিম সেখানে গেছে। সেটা জানতে পারবো তদন্ত কমিটি ফিরলে। তবে সারাদেশে বিদ্যুৎ পরিস্থিতি এখন স্বাভাবিক আছে বলে জানান তিনি।

এদিকে গ্রিড বিপর্যয়ের কারণ চিহ্নিত করতে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়কে আরও দুটি তদন্ত কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। ভবিষ্যতে আর কোনো বিপর্যয় যাতে না হয় সেদিকেও খোয়াল রাখার সুপারিশ করেন তিনি। তবে ওই দুটি কমিটি এখনো গঠিত হয়নি বলেও জানিয়েছেন বিদ্যুৎ বিভাগের এক কর্মকর্তা।

পিজিসিবি এবং বিপিডিবির কর্মকর্তারা মনে করেন, মঙ্গলবারের গ্রিড বিপর্যয় আশুগঞ্জ-সিরাজগঞ্জ আন্তঃসংযোগ ট্রান্সমিশন লাইনের কোনো একটি স্থান থেকে শুরু হয়েছিল। ফলে সারা দেশে বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো ব্যাপকভাবে বন্ধ হয়ে যায়। এদিকে সরকারি সূত্র জানিয়েছে, তদন্ত কমিটিকে তদন্ত শেষ করতে তিনদিন সময় দেয়া হয়েছে।

এদিকে পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ লিমিটেডের এক প্রকৌশলী জানান, এখনো কিছু বলা যাচ্ছে না। তদন্ত দল ঘুরে ঘুরে সব দেখছে। তারা প্রতিবেদন দেবেন। তদন্ত টিমের সদস্যদের হাতে প্রতিবেদন দেওয়ার মতো সময় আছে। আশা করি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করবেন তারা। 

তবে এখনো সারাদেশে শতভাগ বিদ্যুৎ ফেরেনি উল্লেখ করে তিনি বলেন, একটা সমস্যা হলে তা পুরোপুরি সমাধান হতে অন্তত ২৪ ঘণ্টা সময় লাগে। তবে শতভাগ সমাধান খুব দ্রুতই হবে।

তদন্ত কমিটির প্রধান ইয়াকুব এলাহী চৌধুরী বলেন, আমরা বুধবার সকালে গ্রিড বিপর্যয়ের সম্ভাব্য কারণ খুঁজে বের করার জন্য আমাদের তদন্ত শুরু করেছি। গ্রিড ভেঙে পড়ার কারণ চিহ্নিত করতে সাবস্টেশন ও পাওয়ার স্টেশন এবং অন্যান্য প্রাসঙ্গিক সুযোগ-সুবিধা পরিদর্শন করা হবে। তবে গ্রিড সিস্টেমের অনেক প্রযুক্তিগত সমস্যা এর সঙ্গে জড়িত থাকায় এর উপসংহারে পৌঁছাতে আরও সময় লাগতে পারে বলে জানান তিনি।

মঙ্গলবার দুপুর ২টা ৫ মিনিট থেকে দেশব্যাপী গ্রিড বিপর্যয়ের কারণ অনুসন্ধানের জন্য পিজিসিবির নির্বাহী পরিচালক ইয়াকুব এলাহী চৌধুরীর নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে সংস্থাটি। এর মধ্যে আরও রয়েছেন বাংলাদেশ পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট বোর্ড (বিপিডিবি), বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) এবং অন্যান্য বিদ্যুৎ খাতের সংস্থার প্রতিনিধিরা। 

জানা যায়, মঙ্গলবার ৩ ঘণ্টার নিরলস প্রচেষ্টার পর পিজিসিবি প্রথমে কল্যাণপুর গ্রিড সাব-স্টেশনে বিদ্যুৎ চালু করতে সফল হয় এবং পরে বিকাল ৫টায় রাষ্ট্রপতির সরকারি বাসভবন বঙ্গভবন ও প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে বিদ্যুৎ সরবরাহ চালু করে। ধীরে ধীরে এলাকার অন্যান্য অংশে বিদ্যুৎ সরবরাহ পুনরুদ্ধার করা হয় এবং রাত সাড়ে ১০টার মধ্যে সারা দেশে বিদ্যুৎ মোটামুটি স্বাভাবিক হয়।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশের জাতীয় পাওয়ার গ্রিডে বিপর্যয়ের সবচেয়ে বড় ঘটনাটি ঘটেছিল ২০১৪ সালের ১ নভেম্বর। সেসময় সারাদেশ ১৭ ঘণ্টা বিদ্যুৎবিহীন ছিল।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়