শিরোনাম
◈ পাগলপ্রায় পরিস্থিতি! সাইফকে কোপানোর সময়ের ভিডিও প্রকাশ্যে ◈ যারা ফ্যাসিস্ট দলটিকে পুনর্বাসনের জন্য তৎপরতা দেখাচ্ছেন, আপনারা জাতীয় স্বার্থের সঙ্গে বেইমানি করছেন : হাসনাত ◈ সচিবালয়ের সামনে বিক্ষোভ মিছিলে পুলিশের লাঠিচার্জ, আহত ৭ ◈ সর্বদলীয় বৈঠকে থাকছে বিএনপি, অংশ নিচ্ছেন সালাউদ্দিন আহমেদ ◈ শেখ পরিবারের নামে থাকা ১৩ বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তন ◈ লুৎফুজ্জামান বাবর দীর্ঘ ১৭ বছর পর কারামুক্ত ◈ দুর্নীতিবিরোধী মন্ত্রী আজ নিজেই দুর্নীতিগ্রস্ত: টিউলিপকে ইলন মাস্কের খোঁচা ◈ বাইডেন রাজনৈতিক জীবনের ইতি টানলেন বিদায়ী ভাষণে ◈ জুলাই ঘোষণাপত্র নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে আজ সর্বদলীয় বৈঠক ◈ শিশুর ভুল চোখে অস্ত্রোপচার: অভিযুক্ত চিকিৎসক গ্রেফতার

প্রকাশিত : ০৬ ডিসেম্বর, ২০২৪, ০৮:০৯ রাত
আপডেট : ১৬ জানুয়ারী, ২০২৫, ০১:০০ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

বিশ্বকে বার্তা: দেশের স্বার্থে সবাই ঐক্যবদ্ধ

মহসিন কবির: দেশের বিদ্যমান পরিস্থিতিতে সব রাজনৈতিক দলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, এখন গোটা বিশ্বকে জানাতে হবে, আমরা এক। আমরা যা পেয়েছি তা একসঙ্গে অর্জন করেছি। যারা আমাদের বুকে চেপে ধরেছিল তাদের আমরা বের করে দিয়েছি। আমরা নিজেদের মুক্ত করেছি। 

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, 'আমাদের এই স্বাধীনতা অনেকের কাছে পছন্দ হচ্ছে না। নানাভাবে এটাকে উল্টে দেওয়ার চেষ্টা চলছে। ৫ আগস্টের পর থেকে নানাভাবে এটা চলছে। সারাদেশে শান্তিপূর্ণভাবে দুর্গাপূজা পালন হয়েছে। আমরাও পূজার আনন্দে শরিক হয়েছিলাম। কোথাও কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা হয়নি। সেটাও অনেকের পছন্দ হয়নি। দেশকে নতুন করে অস্থির করার চেষ্টা চলছে।'

রাজনৈতিক দলের নেতাদের উদ্দেশে ড. ইউনূস বলেন, 'আপনারা সবাই ভালো বোঝেন। সবাই মিলে আমরা একজোট হয়ে যেন কাজটা করতে পারি, সবাই একত্র হয়ে বললে একটা সমবেত শক্তি তৈরি হয়।

ড. ইউনূসের ডাকে সমগ্র বিশ্বকে জানাতে হবে দলমত নির্বিশেষে বাংলাদেশের সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। সবাই বলেছে, যত বাধা আসুক আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে মোকাবেলা করবো। 

বিশ্লেষকরা বলছেন, আওয়ামী লীগ দুঃশাসনের বিরুদ্ধে এই দলগুলোর মধ্যে আগে থেকেই ঐক্য ছিল। রাষ্ট্রের মৌলিক বিষয়ে প্রশ্ন উঠলে ঐক্যবদ্ধ থাকাই স্বাভাবিক। তারপরও নতুন করে ঐক্যের ডাক দেওয়ার কারণ হচ্ছে সম্প্রতি কিছু বিষয়ে দলগুলোর সাময়িক বিরোধকে কাজে লাগিয়ে ষড়যন্ত্রীরা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। 
দেশে-বিদেশে তাদের নানামুখী অপপ্রচার ও ষড়যন্ত্র রুখতে সারা বিশ্বকে জানান দিতেই এই সংলাপ ডাকা হয়েছে। 

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সংলাপের পর বুধবার একটি স্বস্তির আভাস পাওয়া গেছে সরকারের আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুলের একটি ফেসবুক পোস্টে। তিনি ‘আলহামদুলিল্লাহ’ লিখে এক শব্দের এই পোস্টে স্বস্তির বিষয়টিকেই নির্দেশ করেছেন বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করেন। ওই দিন সংলাপে জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছিলেন, ‘দু-একদিনের মধ্যে সুখবর পাবেন আশা করি।’ আবার গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর বলেন, ‘আমরা জাতীয় সরকার গঠন করার প্রস্তাব করেছি, যেন দু-তিন বছরের জন্য জাতীয় সরকার কাজ করতে পারে।’ সংলাপে অংশ নেওয়া বিএনপির প্রতিনিধি দলের সদস্য ও দলটির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান বলেন, ঐক্য করতে গিয়ে আবার নতুন করে যদি বাকশাল করে ফেলি তাহলে কিন্তু সেই ঐক্যে

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন গণমাধ্যমকে বলেছেন, সংলাপে জাতীয় সরকারের প্রস্তাব ওঠা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, জাতীয় ঐক্য, আর জাতীয় সরকার এক না। এটা নিয়ে কেউ সন্দেহ করেছে বলে আমার কাছে মনে হয়নি। একটা দল (গণঅধিকার পরিষদ) অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে জাতীয় সরকারের প্রস্তাব দিয়েছে, এটা সত্য। তবে মনে রাখতে হবে এটা হলো জাতীয় ঐক্য। জাতীয় সরকার ছাড়াও জাতীয় ঐক্য হতে পারে।’

খন্দকার মোশাররফ বলেন, ‘নুরুল হক নুররা প্রস্তাব দিয়েছে এটা সঠিক। সেটা একটা প্রক্রিয়া হতে পারে জাতীয় ঐক্যের। সেই প্রস্তাব আর কেউ দেয়নি। তবে জাতীয় ঐক্যের ব্যাপারে সবাই সমর্থন দিয়েছে। দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বের স্বার্থে দলগুলো ঐক্যবদ্ধ। 

নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না গণমাধ্যমকে বলেছেন, আধিপাত্যবাদীদের বিরুদ্ধে আমরা ঐকমত্য ছিলাম। সবাইকে সেই ঐক্যের কথা জানান দিতেই অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ডেকেছিল। আমাদের ঐক্য কীভাবে ধরে রাখা যায় তার জন্য একাধিক প্রস্তাব এসেছে। তার একটা হচ্ছে একটা দিবস পালন করা যায় কিনা। আরও কিছু রয়েছে যেমন সবগুলো দল মিলে একটা সমাবেশ করা যায় কিনা। এসব বিষয়ে আলোচনা চলছে। এর বাইরে কোনো কিছু আলোচনা হয়নি।

গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি বলেছেন, আমাদের সার্বভৌমত্বের ওপর একটা আঘাত এসেছে, এ জন্য আমরা সব দল বাংলাদেশের পক্ষে আছি। এটাই জানান দিতে জাতীয় ঐক্যের ডাক। সরকার থেকে একটা প্রস্তাব এসেছে কোনো একটা দিন ঘোষণা করে জাতীয় পতাকা হাতে সবাই দাঁড়াতে পারি কিনা। আমরা রাজনৈতিক দলগুলোকে নিয়ে একটা জাতীয় কাউন্সিলর করার প্রস্তাব করেছি।

বদিউল আলম মজুমদার বলেন, দেশের সার্বভৌমত্ব, দেশের শান্তিশৃঙ্খলা, নিরাপত্তা এসব বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলো ঐকমত্য হতে পারে। দেশের নিরাপত্তা প্রশ্নে, হুমকির বিষয়ে ঐকমত্য হতে পারে। তবে সর্বস্তরের জনগণ এবং রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য বিরাজ করছে। দলগুলোর স্বার্থসংশ্লিষ্ট মতবিরোধ থাকতে পারে, তবে জাতীয় ইস্যুতে ঐক্যবদ্ধ থাকার জন্য জাতীয় ঐক্য দরকার। যখন রাষ্ট্রের মৌলিক বিষয়ের প্রশ্ন ওঠে তখন দল-মত নির্বিশেষে ঐক্য থাকতে হবে। এটাই জাতীয় ঐক্যের ডাক। 

এর আগে একই লক্ষ্যে গত মঙ্গলবার জুলাই আন্দোলনের ছাত্রনেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন প্রধান উপদেষ্টা। এ ছাড়া গতকাল বৃহস্পতিবার ধর্মীয় নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। সংলাপে অংশ নেওয়া রাজনৈতিক দলগুলোর নেতাদের সঙ্গে কথা বলে এটা পরিষ্কার যে, জাতীয় ইস্যুতে বাংলাদেশ একটা বার্তা বিশ্ববাসীর কাছে পৌঁছে দিতেই এই সংলাপ ডাকা হয়েছিল।

বিশ্বের দরবারে বাংলাদেশের জাতীয় ঐক্যের তথ্য তুলে ধরার আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মাওলানা মুহাম্মদ মামুনুল হক। 

জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ বলে জানিয়েছেন জনপ্রিয় আলেম ও ইসলামি আলোচক শায়েখ আহমাদুল্লাহ। বুধবার (৪ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে এ কথা বলেন তিনি।

শায়েখ আহমাদুল্লাহ লিখেছেন, বাংলাদেশে আমরা নানা বিষয়ে একে অন্যের সঙ্গে ভিন্নমত পোষণ করতে পারি। কিন্তু স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব এবং জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়