শিরোনাম
◈ ফেব্রুয়ারি এখন নোংরামির মাসে পরিণত: শায়খ আহমাদুল্লাহর সতর্কবার্তা ◈ দুই কুমিরের মারামারিতে এক কুমির আহত ◈ জয় বাংলা স্লোগান ও তসলিমার বই বিক্রি, বের করে দেওয়া হলো লেখককে ◈ আর যদি মব করেন, তাইলে আপনাদেরও ডেভিল হিসাবে ট্রিট করা হবে: উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের হুঁশিয়ারি ◈ নির্বাচনের কথা শুনলেই অনেকের গাত্রদাহ শুরু হয়ে যায়: মির্জা আব্বাস  ◈ দ্রুত নির্বাচনের জন্য আমরা আবারও তাদের তাগাদা দিয়েছি : মির্জা ফখরুল ◈ অন্তর্বর্তী সরকার আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে : মির্জা ফখরুল  ◈ আয়ারল্যান্ডের কাছে জিম্বাবুয়ের পরাজয় ◈ ইতিহাসের পাতায় ব্রিটজকে ◈ সিরাজগঞ্জে বিএনপি কার্যালয়ে আগুন

প্রকাশিত : ২৩ জুন, ২০২৪, ০৬:২৮ বিকাল
আপডেট : ২৪ জুন, ২০২৪, ০৩:১৬ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

গ্যাসের উৎপাদন বৃদ্ধির পরিকল্পনা ও বাজেটে বরাদ্দ কমানো স্ববিরোধী: সিপিডি

মনজুর এ আজিজ: [২] সরকারের আমদানিনির্ভরতা জ্বালানি খাতে আরও ঝুঁকি তৈরি করছে বলে মনে করছে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)। সিপিডির গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, দেশে গ্যাসের উৎপাদন বাড়াতে ৫০টি কূপ খননের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করছে সরকার। অথচ প্রস্তাবিত বাজেটে (২০২৪-২৫) জ্বালানি খাতে আগের চেয়ে বরাদ্দ কমানো হয়েছে। এটা স্ববিরোধী। এতে কূপ খননের কাজ ব্যাহত হবে।  

[৩] ‘জাতীয় বাজেটে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাত: চ্যালেঞ্জ ও প্রস্তাবিত পদক্ষেপ’ শিরোনামে আয়োজিত সংলাপের মূল নিবন্ধে এসব কথা বলা হয়েছে। রোববার রাজধানীর ব্র্যাক সেন্টারে এটির আয়োজন করে সিপিডি। এতে বলা হয়, টেকসই জ্বালানি নিশ্চিতে ব্যর্থ হয়েছে প্রস্তাবিত বাজেট। তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানিনির্ভরতার কারণেই জ্বালানি খাতে বরাদ্দ কমেছে।

[৪] ফরিদপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য এ কে আজাদ বলেন, নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ-গ্যাস সরবরাহ নিশ্চিত করার শর্তে গ্যাসের দাম দ্বিগুণ দিতে রাজি হয়েছিলেন ব্যবসায়ীরা। লোডশেডিং বন্ধ হয়নি। এখনো ৭ থেকে ৮ ঘণ্টা ডিজেলে জেনারেটর চালাতে হয়। গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধি, লোডশেডিং, ডিজেল কেনা, ব্যাংকঋণে সুদের হার দ্বিগুণ করায় অনেক কারখানা বসে গেছে।

[৫] তিনি বলেন, দেশে ১ কোটি ২৯ লাখ বেকার। তাদের কর্মসংস্থানের জন্য নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ ও গ্যাসের সরবরাহ লাগবে। সরকারের প্রতিটি স্তরে জবাবদিহি নিশ্চিত না হলে কোনো কিছুই ঠিক হবে না।

[৬] সিপিডির নিবন্ধ বলছে, সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ উৎপাদনের সময়েও অলস বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা ছিল ৪৬ শতাংশ। ২০৩০ সালে বিদ্যুতের যে চাহিদা তৈরি হবে, তা পূরণের মতো সক্ষমতা ইতোমধ্যেই হয়ে গেছে। তবু নতুন বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করা হচ্ছে। অতিরিক্ত সক্ষমতার কারণে বিদ্যুৎকেন্দ্রের ভাড়া (ক্যাপাসিটি চার্জ) বাড়ছে। এতে পিডিবির লোকসানও বাড়ছে। এরপরও নতুন নতুন বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করা হচ্ছে, যা পিডিবির আর্থিক বোঝা বাড়াবে।

[৭] ২০২৩-২৪ অর্থবছরে টানা লোডশেডিং দেখা গেছে বলে নিবন্ধে উল্লেখ করেছে সিপিডি। এতে বলা হয়, জ্বালানিসংকট ও সঞ্চালন লাইনের সমস্যায় লোডশেডিং হচ্ছে। প্রস্তাবিত বাজেটে উৎপাদন থেকে সঞ্চালন ও বিতরণ লাইন উন্নয়নে জোর দেওয়া হয়েছে। এটা ইতিবাচক। তবে সঞ্চালন লাইন নির্মাণে ধীরগতি আছে, এতে জোর দিতে হবে। নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে এখনো নজর কম।

[৮] বিদ্যুৎ বিভাগের নীতি-গবেষণা প্রতিষ্ঠান পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক মোহাম্মদ হোসাইন বলেন, শতভাগ ব্যর্থ বলার সুযোগ নেই। কিছুটা লোডশেডিং হলেও সারা দেশের মানুষ বিদ্যুৎ সুবিধা পাচ্ছে। জ্বালানি সরবরাহ থাকলে বিদ্যুৎ খাত নিয়ে এত কথা হতো না। মূল সমস্যা হচ্ছে প্রাথমিক জ্বালানির সংকট। আর পিডিবির লোকসানের পেছনে কেন্দ্র ভাড়ার দায় অতটা নয়, ডলারের দাম বেড়ে যাওয়ায় আর্থিক চাপ বেড়েছে পিডিবির।

[৯] সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের জ্বালানিবিষয়ক উপদেষ্টা ম. তামিম বলেন, দেশে কোনো জ্বালানি নীতিমালা নেই। সর্বশেষ নীতিমালাটি ১৯৯৬ সালের, এটা এখনকার পরিস্থিতির সঙ্গে যায় না। তাই একের পর এক পরিকল্পনা করে কাজে আসছে না। পুরো খাত চলছে জোড়াতালি দিয়ে। আর বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি বিশেষ বিধান আইন বাতিল করে প্রতিযোগিতায় ফেরাতে হবে। 

[১০] কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) জ্বালানি উপদেষ্টা এম শামসুল আলম বলেন, বিদ্যুৎ খাতে সরকারের মূল লক্ষ্য ছিল শতভাগ বিদ্যুতায়ন ও বিদ্যুৎ সরবরাহ লোডশেডিং মুক্ত রাখা। এটি ব্যর্থ হয়েছে। আর জ্বালানি তেলের দাম স্বয়ংক্রিয়ভাবে সমন্বয়ের নামে বিপিসির দুর্নীতির স্বয়ংক্রিয় সমন্বয় করা হয়েছে। বিপিসি আকণ্ঠ দুর্নীতিতে নিমজ্জিত একটি সংস্থা। এখানে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা হচ্ছে না।

[১১] বাংলাদেশ পাওয়ার ম্যানেজমেন্ট ইনস্টিটিউটের রেক্টর মোহাম্মদ আলাউদ্দিন বলেন, প্রস্তাবিত বাজেটে প্রথমবারের মতো নবায়নযোগ্য জ্বালানির উন্নয়নে আলাদা করে বরাদ্দ রাখা হয়েছে, এটা ইতিবাচক। তবে সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদন খাতে কর-শুল্ক মিলে ৮৯ শতাংশ হয়ে যায়, এটা বেসরকারি খাতের বিনিয়োগে বাধা। এটা কমাতে পারলে উৎসাহ বাড়বে। সম্পাদনা: সালেহ্ বিপ্লব

এমএএ/এসবি/একে

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়