শিরোনাম
◈ দক্ষিণ ভারতে ইন্ডিয়া জোটের কাছে গো-হারা হারবে বিজেপি: রেভান্ত রেড্ডি ◈ ইরানের ওপর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের নতুন নিষেধাজ্ঞা ◈ আবারও বাড়লো স্বর্ণের দাম  ◈ ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় মোহন কোয়াত্রার ঢাকা সফর স্থগিত ◈ বিএনপি নেতাকর্মীদের জামিন না দেওয়াকে কর্মসূচিতে পরিণত করেছে সরকার: মির্জা ফখরুল ◈ ব্রিটিশ হাইকমিশনারের সঙ্গে বিএনপি নেতাদের বৈঠক ◈ মিয়ানমার সেনার ওপর নিষেধাজ্ঞা থাকায় তাদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করা সম্ভব হচ্ছে না: সেনা প্রধান ◈ উপজেলা নির্বাচন: মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়দের সরে দাঁড়ানোর নির্দেশ আওয়ামী লীগের ◈ বোতলজাত সয়াবিনের দাম লিটারে ৪ টাকা বাড়লো ◈ রেকর্ড বন্যায় প্লাবিত দুবাই, ওমানে ১৮ জনের প্রাণহানি

প্রকাশিত : ১৬ মার্চ, ২০২৩, ১২:৩৮ রাত
আপডেট : ১৬ মার্চ, ২০২৩, ১২:৩৯ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

ওজন না বাড়ার কারণ ও কীভাবে বাড়ানো যায়

নাজিয়া আফরিন

নাজিয়া আফরিন: যে কারণ গুলোর জন্য ওজন বাড়ে না

জেনেটিক কারণ: শরীরের প্রকারের ক্ষেত্রে একটি ভূমিকা পালন করে এবং কিছু লোকের প্রাকৃতিকভাবেই চর্বিহীন শরীরের ধরন নির্দেশ করে। এছাড়াও অন্যান্য কিছু বিষয়ও জড়িত থাকে -

হাইপারথাইরয়েডিজম: হাইপারথাইরয়েডিজমে আক্রান্ত ব্যক্তিদের অত্যধিক সক্রিয় বিপাকক্রিয়া থাকে এবং প্রায়ই সারা দিন বেশি ক্যালোরি পোড়ায়। সঠিক ওষুধ ব্যতীত, হাইপারথাইরয়েডিজম ওজন বাড়ানোর সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে, এমনকি সঠিক পরিমাণে খাদ্য গ্রহন করা স্বত্ত্বেও ওজন বাড়ে না।

টাইপ ১ ডায়াবেটিস: টাইপ ১ ডায়াবেটিস হল এক ধরনের অটোইমিউন অবস্থা যেখানে শরীর অগ্ন্যাশয়ের কোষগুলিকে ধ্বংস করে যা ইনসুলিন উৎপাদনের জন্য দায়ী। অন্যদিকে ইনসুলিন হল গ্লুকোজ বিপাকের জন্য দায়ী হরমোন। যখন টাইপ ১ ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে যায়, তখন এটি রক্তে গ্লুকোজের উচ্চ মাত্রা সৃষ্টি করে, যা পরে প্রস্রাবে নির্গত হয়। এই অতিরিক্ত গ্লুকোজ নিঃসরণ এর কারণে অনিচ্ছাকৃতভাবেই ওজন হ্রাস হয়।

প্রদাহজনক পেটের রোগ: ইনফ্ল্যামেটরি বাওয়েল ডিজিজ অন্ত্রের প্রদাহ জনিত একটি অবস্থা। এই অবস্থাগুলি, যেমন ক্রোনের রোগ এবং আলসারেটিভ কোলাইটিস, কারো কারো সঠিক বা কাম্য ওজন বজায় রাখার ক্ষমতার উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। এই অবস্থায় একজন ব্যক্তি খেতে পারে এমন খাবার এবং পরিমাণ সীমিত করতে হবে। নয়তো ঘন ঘন ডায়রিয়ার কারণ হতে পারে, যা কিছু ক্ষেত্রে ওজন হ্রাস করতে পারে।

অ্যানোরেক্সিয়া নার্ভোসা: যা কিনা চরম ওজন হ্রাস কারী এক ধরণের কম খাওয়ার রোগ। সাধারণত মেয়েদের মধ্যেই বেশি দেখা যায় এই রোগ। এতে রোগীর খাওয়ার ইচ্ছা অস্বাভাবিক রকম কমে যায়। অল্পবয়স্ক মেয়েদের স্লিম হওয়ার বাসনা থেকে অনেক সময় এই সমস্যার শুরু হয় তবে অন্যান্য মানসিক চাপও থাকতে পারে। ধীরে ধীরে খাওয়ার ইচ্ছা কমতে থাকে, ওজন কমতে থাকে। রক্তশূন্যতাসহ অস্টিওপোরোসিস, মাসিক বন্ধ হয়ে যাওয়া, বন্ধ্যত্ব, রক্তে লবণের ভারসাম্যহীনতা, এমনকি হৃদ্রোগে আক্রান্ত হওয়া সহ মারাত্নক অপুষ্টিতে আক্রান্ত হয় ও রোগ প্রতিরোধক্ষমতা কমে গিয়ে ভেন্ট্রিকুলার ফিব্রিলেশন হয়ে আকস্মিক মৃত্যু পর্যন্ত ঘটতে পারে।

বুলিমিয়া নার্ভোসা: বুলিমিয়া নার্ভোসা হলো এমন একটি মানসিক অবস্থা যা কিনা ব্যক্তির অতিরিক্ত খাদ্য গ্রহণ করা এবং সাথে সাথেই তা শরীর থেকে বের করে ফেলার জন্য অতিরিক্ত প্রচেষ্টা গ্রহণ করা যেমন: জোর করে বমি করা, ওজন কমানোর ঔষধ গ্রহণ করা, অতিরিক্ত ব্যায়াম করা এবং প্রায়ই উপোস থাকা। কিশোরী ও তরুণী মেয়েদেও মধ্যে এমনটি বেশি ঘটে এবং ওজন একেবারে হঠ্যাৎ করেই কমে আকস্মিকভাবে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।

যেভাবে ওজন বাড়াতে পারেন:

কিছুক্ষণ পরপর অল্প পরিমাণে খাবার খাওয়া: কিছুক্ষণ পরপর অল্প পরিমাণে খাবার খাওয়া সারাদিনে আরও বেশি ক্যালোরি গ্রহণ করতে সহায়তা কওে এক্ষেত্রে পেট না ভরেই বেশি ক্যালোরি গ্রহণ করা সম্ভব।

উচ্চ ক্যালোরিযুক্ত খাদ্য গ্রহণ:  কম ক্যালোরিযুক্ত খাবার যেমন চর্বিহীন প্রোটিন এবং শাকসবজির বদলে বেশি ক্যালোরিযুক্ত গোটা শস্যজাতীয় ও স্বাস্থ্যকর চর্বিযুক্ত খাদ্য গ্রহণ করতে হবে।  ফলের মধ্যে পাকা কলা, খেজুঁর, কিশমিশ, আখরোট খেতে পারে। এছাড়া সব রকম সবজির পাশাপাশি প্রতিদিন সাথে আলু রাখা যেতে পারে। তেল এর বদলে মাঝে মাঝে মাখন, ঘি ইত্যাদি খাওয়া যেকে পারে।


প্রোটিন শেক গ্রহণ: কিছু প্রোটিন শেক বিশেষভাবে তৈরি করে গ্রহণ করা যেতে পারে যেমন বিভিন্নরকম বাদাম ও দুধ দিয়ে তৈরি মিল্ক শেক । দুধ ও ডিমের তৈরি পুডিং, বিভিন্নরকম বাদাম ও চিকেনের তৈরি সালাদ ইত্যাদি। বিভিন্ন রকম মাছ, মাংস,ডিম এবং কয়েক রকমের ডাল একত্রে মিশিয়ে রান্না করে দৈনিক খাদ্য তালিকায় রাখতে পারে।

নিয়ম মেনে পানি পান: সারা দিন ঘন ঘন পানি পান করা গুরুত্বপূর্ণ, তবে খাবারে খাওয়ার আগে খুব বেশি পানি পান করা এড়িয়ে চলতে হবে।

পর্যাপ্ত ঘুম: দৈনিক পর্যাপ্ত ৬-৮ ঘন্টা ঘুম স্বাস্থ্য সুরক্ষা ও সঠিক ওজনের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই ঘুমের দিকেও নজর দিতে হবে।

ইতিবাচক মনোভাব: যে খাবারই সামনে আসুক না কেন সন্তুষ্ট চিত্তে খুশি হয়ে তা গ্রহণ করা উচিত। ইতিবাচক মনোভাবও কাম্য ওজনের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ।

সব কিছু মেনে চলার পরও যদি ওজন অবস্থার উন্নতি না হয় তাহলে অবশ্যই একজন প্রশিক্ষিত পুষ্টিবিদ বা ডাক্তার কাছে যেতে হবে যাতে স্বাস্থ্যকর উপায়ে ওজন বাড়াতে সাহায্য করার জন্য একটি  দৈনিক খাদ্য পরিকল্পনা দিয়ে ওজন বাড়াতে সাহায্য করতে পারে।

নাজিয়া আফরিন: স্বাস্থ্য ও পুষ্টি কর্মকর্তা, মানবিক সাহায্য সংস্থা 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়