শিরোনাম
◈ কালরাত স্মরণে এক মিনিটের ‘ব্ল্যাক আউটে’ বাংলাদেশ ◈ নারায়ণগঞ্জে বঙ্গবন্ধু ও তাঁর মাকে নিয়ে কটূক্তি করায় বিএনপি নেতা আটক ◈ যুক্তরাষ্ট্রের মিসিসিপিতে টর্নেডোর আঘাতে ২৩ জনের মৃত্যু ◈ আওয়ামী লীগকে এবার ইফতার পার্টি না করার নির্দেশনা প্রধানমন্ত্রীর ◈ বাংলার সমৃদ্ধি ক্ষতিপূরণ পেল ২৩৭ কোটি টাকা ◈ আওয়ামী লীগের নেতৃত্বের ব্যর্থতায় ২৫ মার্চের গণহত্যা হয়েছিল: মির্জা ফখরুল ◈ দুবাইয়ে আরাভ খান আটক হওয়ার তথ্য জানা নেই: আইজিপি ◈ নারী অধিকার কর্মীদের প্রতি ‘কোমল’ মনোভাব দেখানোর জন্যে ১০ বিচারপতিকে মৃত্যুদণ্ড সৌদি সরকারের ◈ একাত্তরের গণহত্যার জন্য পাকিস্তানের কাছে ক্ষতিপূরণ দাবি ◈ গণহত্যা দিবসের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আদায়ে  সকলকে ভূমিকা রাখতে হবে : রাষ্ট্রপতি

প্রকাশিত : ২৭ জানুয়ারী, ২০২৩, ০৮:০৫ রাত
আপডেট : ২৮ জানুয়ারী, ২০২৩, ০৮:৩৯ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

রাজধানীতে বিক্রি হচ্ছে জমজমের পানি!

জমজম কূপের পানি

ডেস্ক রিপোর্ট: কাবাঘরের ফজিলতের সঙ্গে জমজম কূপের মাহাত্ম্য ওতপ্রোতভাবে জড়িত। পবিত্রতা ও বৈশিষ্ট্যে জমজম কূপের পানি পৃথিবীর সকল পানির চেয়ে উত্তম। জমজমের অশেষ কল্যাণ ও বরকতের কথা অনেক হাদিসে এসেছে। হজ বা ওমরাহ পালন করতে গেলে এ পানি পান, ওজু ও গোসলের জন্য ব্যবহারের সুযোগ পান দূরবর্তী এলাকার মানুষ। ফেরার সময়ও তারা এই পানি নিয়ে আসেন পরিবার-পরিজনের জন্য। সৌদি আরবে ব্যবহারের সময় বা দেশে নিয়ে আসার সময় পানির জন্য কোনও টাকা দিতে হয় না। তবে এই জমজমের পানি বিক্রি হচ্ছে রাজধানীতে। বাংলা ট্রিবিউন

পবিত্র কাবাঘর থেকে ২১ মিটার দক্ষিণ-পূর্ব কোণে অবস্থিত এই জমজম কূপ। হাদিসে এসেছে হজরত আবুবকর সিদ্দিক (রা.) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুল (সা.) জমজমের পানি সম্পর্কে বলেছেন যে, জমজমের পানি হচ্ছে বরকতময় ও তৃপ্তিদায়ক। 

জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররম মার্কেট এলাকায় জমজম কূপের এই পবিত্র পানির ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন অন্তত আড়াইশ’ আতর-টুপি-গোলাপজল ব্যবসায়ীরা। লিটারপ্রতি অন্তত সাড়ে ৩ হাজার টাকায় বিক্রি করছেন জমজমের পানি। তবে এই জমজমের পানি কীভাবে সংগ্রহ করা হয়েছে? বছরব্যাপী কীভাবে জমজমের পানি বিক্রি করা হয়? কত দামে বিক্রি করা হচ্ছে? জমজমের পানির সঙ্গে সাধারণ পানি মেশানো হচ্ছে কিনা? এমন প্রশ্নের জবাব দিতে অনিচ্ছুক সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা।

বায়তুল মোকাররমের ব্যবসায়ীরা বলেন, হাজিদের উন্নতমানের এহরামের কাপড়, টাওয়ালসহ জায়নামাজ, আতর, টুপি ইত্যাদি বিক্রি করা হয়। এর পাশাপাশি জমজমের পানিও বিক্রি করি। জমজমের পানির অনেক চাহিদা। কিন্তু আমরা সেই অনুযায়ী চাহিদা মেটাতে পারি না। আমরা হজ করতে যাওয়া মুসল্লিদের সঙ্গে কথা বলে তাদের পর্যাপ্ত সম্মানি দিয়ে জমজমের পানি সংগ্রহ করি। আমরা ইনটেক বোতলে ৫ লিটার জমজমের পানি ৩ হাজার ৬০০ টাকা বিক্রি করি। তবে কত টাকা করে পানি কেনা হয়েছে তা বলতে অস্বীকৃতি জানায় বিক্রেতারা।

বিক্রেতারা আরো জানান, হাজিরা হজ শেষে নিয়ে আসেন জমজমের পানি। এই পানি আবার সবসময় পাওয়া যায় না। আমাদের আগে থেকেই অর্ডার দিয়ে রাখতে হয়। তখন আমরা সেই অনুযায়ী জমজমের পানি সংগ্রহ করি। বায়তুল মোকাররম এলাকায় জমজমের পানি কেউই রেগুলার বিক্রি করতে পারে না। অনেকে হাজিদের সঙ্গে সম্পর্ক রেখে জমজমের পানি সংগ্রহ করে। আবার অনেকে বিভিন্ন এজেন্সির মাধ্যমে পানি সংগ্রহ করে। আমরা তাদের সম্মানি দেই। পরবর্তীতে আমাদের খরচ আর দোকানের খরচের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে জমজমের পানি বিক্রি করি।

বায়তুল মোকাররমের আরেক ব্যবসায়ী বলেন, অনেক দোকানদার একবার ৫ লিটার জমজমের পানি এনে সারা বছর খুচরা বিক্রি করে। তারা জমজমের পানির সঙ্গে সাধারণ পানি মিশিয়ে বিক্রি করে। সামনে জমজম পানির একটা বোতল রেখে দেয়, তারপর ওই বোতল দেখিয়ে ব্যবসা করে। এটা নিয়ে কয়েকবার ঝামেলাও হয়েছে। খুচরা কিনলে তো সাধারণ মানুষ আর বোঝে না কোনটা আসল জমজমের পানি আর কোনটা ভেজাল। তবে এমন বাজে কাজ খুব কম দোকানদার করে। যাদের ভেতর ইসলামের ন্যূনতম জ্ঞান আছে তারা কখনও এমন জঘন্য কাজ করতে পারে না। এই পানি ৫ লিটারের বোতল আনা হয়। কেউ এটা একসঙ্গে বিক্রি করেন, আবার কেউ খুচরা বিক্রি করেন। তবে খুচরা বিক্রি করলে মাঝে মধ্যে ঝামেলায় পড়তে হয়। দুই-একজন দোকানদারের কারণে অনেকে বিশ্বাস করতে চান না এটা যে জমজমের পানি। এখানে প্রায় সব দোকানেই ২৫০ মিলি জমজমের পানি তিনশ’ থেকে সাড়ে তিনশ’ টাকা খুচরা দরে বিক্রি করা হয়। পাইকারিতে পরিচিত মানুষের কাছে দুই আড়াইশ’ টাকার মধ্যে সেল দেওয়া হয়।

জমজমের অশেষ কল্যাণ ও বরকতের কথা অনেক হাদিসে এসেছে। হজরত আবুবকর সিদ্দিক (রা.) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, 'রাসুল (সা.) জমজমের পানি সম্পর্কে বলেছেন যে, জমজমের পানি হচ্ছে বরকতময় ও তৃপ্তিদায়ক।'  হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, ‘রাসুল (সা.) বলেছেন, পৃথিবীর সর্বোত্তম পানি হচ্ছে জমজমের পানি।'

এ পানি শুধু তৃষ্ণাই নিবারণ করে না, এর মধ্যে ক্ষুধাও নিবারণের যোগ্যতা রয়েছে। মানুষের শরীরের স্বস্তিও প্রবৃদ্ধি করে এবং হজমে সহায়তা করে। এছাড়া জমজমের পানির বাহ্যিক বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য রয়েছে। এ পানি সম্পূর্ণ জীবাণুমুক্ত। জমজম কূপের আরও একটি অসাধারণ বৈশিষ্ট্য হচ্ছে- এ থেকে লাখ লাখ লিটার পানি উত্তোলন করলেও এর পানিতে কখনও স্বল্পতা দেখা যায় না। মূলত জমজম কূপ মহান আল্লাহতায়ালার এক কুদরতের নিদর্শন। 

১৯৭৯ সালে (জামাদিউল উলা মাসের ১৭ তারিখ ১৩৯৯ হিজরী) ভালো করে পাক পবিত্রকরে একজনকে নামান হয়, এ পানির ভিতর পরিস্কার করার জন্য। তিনি জমজম কুপের নিচ থেকে বিভিন্ন প্রকার আসবাব (থালা, বাটি), ধাতব পদার্থ(মুদ্রা), মাটির পাত্র পান, কিন্তু বিভিন্ন প্রকার জিনিস ফেলার পরও এ পানি কুদরতী ভাবে সম্পুর্ন দোষন মুক্ত ছিল।

রাসুল (সা.) বলেছিলেন, অসুস্থতা থেকে এটি একটি আরোগ্য/শেফা। জমজমের পানি কোন লবন যুক্ত বা তরলায়িত পানি নয়, তবে এ পানি পান করলে এটার একটি স্বতন্ত্র স্বাদ অনুভুত হয়, যা কেবল পানকারী অনুভব করতে পারে। জমজম কুপের পানি হচ্ছে এমন একটি পানি, যা কখনো জীবানু দ্বারা আক্রান্ত হয়নি। রিপোর্ট: হ্যাপি আক্তার

এইচএ/এসবি২

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়