ডেস্ক রিপোর্ট: জেলে প্রবেশের পর থেকেই ২০ বছর বয়সী তরুণ রামি আবু মোস্তফার ভাবনায় ছিল অন্য কিছু। ২০০২ সালে ইসরায়েলি দখলদার সৈন্যরা আটক করে ফিলিস্তিনি এ তরুণকে। এরপর তাঁর ২০ বছর কারাদণ্ড হয়। ২০ বছর আগে ফিলিস্তিনের ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব গাজায় ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন রামি আবু মোস্তফা। ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের পড়াশোনা শেষ করতে না পারলেও এ সময়ে তিনি সনদসহ পুরো কোরআন হিফজ করেন। পাশাপাশি বিভিন্ন একাডেমিক ডিগ্রি লাভ করেন। তিনি পাঁচ বছরে সনদসহ হাফেজ হয়েছেন। কালের কন্ঠ
দীর্ঘ বন্দিজীবনের প্রতিটি মুহূর্তকে কাজে লাগানোর প্রবল ইচ্ছা ছিল তাঁর। অবশেষে গত ২২ অক্টোবর ৪২ বছর বয়সে জেল থেকে মুক্তি পান রামি আবু মোস্তফা। গাজার অ্যাপ্লায়েড সায়েন্স কলেজ থেকে ডিপ্লোমা, আল-আকসা ইউনিভার্সিটি থেকে ইতিহাসে অনার্স, আল-কুদস ইউনিভার্সিটি থেকে ইসরায়েল স্টাডিজ বিষয়ে মাস্টার্স ডিগ্রি এবং লেবাননের দাওয়াহ কলেজ থেকে ইসলামিক ইকোনমিকসে দ্বিতীয় মাস্টার্স ডিগ্রি লাভ করেন। এসব ডিগ্রির চেয়ে তাঁর কাছে কোরআন হিফজের বিষয়টি সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
ইসরায়েলের কারাগারে থাকা অবস্থায় কোরআন হিফজ করা ৭৭ বন্দির একজন রামি আবু মোস্তফা। গত বৃহস্পতিবার (১ ডিসেম্বর) হামাসের উদ্যোগে গাজায় তাঁদের সম্মাননায় বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। বন্দি হাফেজদের উদ্দেশে মুক্তির আশা ব্যক্ত করে শুভেচ্ছা বক্তব্যে হামাসের রাজনৈতিক শাখার প্রধান ইসমাইল হানিয়া বলেন, ‘হাফেজ বন্দিদের সবাইকে শুভেচ্ছা। পুরো কারাগারকে তারা ইউসুফের মাদরাসায় পরিণত করেছে। কেননা তারা ইউসুফ (আ.)-এর পথ অনুসরণ করেছে, যিনি কারাগারে গিয়েও দাওয়াতের কথা ভুলে যাননি। ’
দখলদার ইসরায়েলের কারাগারে দুই দশক পর মুক্তি পেয়ে রামি বলেছেন, দখলদার গোষ্ঠী আমাদের দেহ বন্দি করতে পারলেও তারা কখনো আমাদের চিন্তাশক্তি ও দৃঢ় ইচ্ছাকে বন্দি করতে পারেনি। পবিত্র কোরআন মানুষের সর্বোত্তম পাথেয়। আর একজন বন্দির জন্য তা আশা জাগায় এবং শক্তি জোগায়। তাই পুরো কোরআন হিফজ করা আমার জন্য খুবই সম্মানের ও চ্যালেঞ্জের। তা মোটেও সহজ ও নিষ্কণ্টক ছিল না; বরং নানা উপায়ে কারা কর্তৃপক্ষ আমাদের জন্য সমস্যা ও সংকট তৈরি করত। আর স্বাভাবিক পরিস্থিতি হিফজের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। তবে সমস্যায় না পড়ায় অনেক বন্দি মাত্র ছয় মাসেও হিফজ করেছেন। আবার অনেকের সমস্যায় পড়ে ১০ বছর সময় লেগেছে।
কেক/এইচএ
আপনার মতামত লিখুন :