লাবিব হোসেন: ছাতনো ইয়ামাগুচি দুবার পারমাণবিক হামলার পরেও বেঁচে গিয়েছিলেন। তিনি ছিলেন একজন নৌ-প্রকৌশলী। ১৯৪৫ সালের ৬ আগস্ট দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধে শেষে হওয়ার ঠিক একমাস আগের কথা। হিরোশিমায় ৩ মাসের একটা অ্যাসাইনম্যান্ট শেষ করেন তিনি। সূএ: একাত্তর টিভি
[২] মিৎসুবিসি হেভি ইন্ড্রাস্ট্রিতে কাজ করতেন তিনি। নিজের বাড়ি নাগাসাকিতে ফেরার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন তিনি। রেলষ্টেশনে যাওয়ার সময় তার মনে পরে তিনি ভুলে ‘হানকো’ অফিসের কোয়াটারেই রেখে চলে এসেছেন। হানকো এমন একটি স্ট্যাম্প যা যাতয়াতের জন্য দরকার হতো। সাথে সাথেই কর্মস্থলের দিকে ফিরে যান তিনি।
[৩] হঠাৎ করেই আকাশে একটি প্লেন চলে যাওয়ার শব্দ শুনতে পান তিনি। আমেরিকান বি ২৯ মডেলের প্লেনটি থেকে প্যারাসুটে বেধে কি যেনো ফেলে দেওয়া হল। সাথে সাথে আকাশ জুড়ে বয়ে য্য় প্রচণ্ড আলোর ঝলকানি। জীবন বাঁচতেই পাশে থাকা একটা ডোবাতেই লাফ দেন তিনি।
[৪] বিষ্ফোরণ পরবর্তী শক ওয়েব তাকে বাতাশে তুলে ফেললো এবং ছুড়ে দিলো কিছুটা দূরে আলুর ক্ষেতে। বোমা হামলার স্থানের দুই মাইল কাছাকাছি ছিলেন তিনি। তবে সে যাত্রায় প্রাণে বেঁচে যান কিন্তু হিরোশিমায় অন্যান্যরা ইয়াগুচির মতো সৌভাগ্যবান ছিলেন না। পারমানবিক বোমা হামলায় শহরের আনুমানিক ৩০ শতাংশ মানুষ মারা য্য়। পরবর্তী মাসের মধ্যে মারা য্য় আরও ১০ হাজার মানুষ।
[৫] ইয়ামাগুচির হাত মুখ পুড়ে গিয়ে ছিলো এবং দু কানের পর্দাও ছিড়ে গিয়েছিল। সিপ ইয়ার্ডে দুইজন সহকর্মীকে জীবিত পান তিনি। তাদের আবস্থাও ছিলো তার মতই। সেদিন নাগাসাকি য্ওয়ার পারিকল্পনাও বাদ দেন তারা। বেলা হতেই ট্রেনস্টেশনে গেলেন তারা। সেখানে গিয়ে তার দেখেন তাদের মত এমন আরও অনেক মানুষ আছে।
[৬] ৮ আগস্ট নাগাসাকিতে পৌছে যান তিনি। তার শরীরে এমন পোড়া দাগ ছিলো য়ে তার পরিবারও তাকে চিনতে পারেনি। শরীরের অবস্থা বেশি ভালো না হলেও ৯ অগাস্ট সেই অবস্থা নিয়ে অফিসের দিকে রওনা হন তিনি। অফিসে ইয়ামা গুচি জানালেন মাত্র একটা বোমা হামলা কিভাবে একটা শহরকে শেষ করে দেয়।
[৭] কিন্তু কেউই তার কথা বিশ্বাস করেনি।কিন্তু তখনই নাগাসাকিতে ফেলা হয় দ্বিতীয় পারমানবিক বোমা। ফের আকাশে আলোর ঝলকানি দেখে তিনি বুঝতে পারেন ৬ আগস্টের ঘটনারই পুনরাবৃত্তি ঘটেছে। সৌভাগ্যক্রমে ইয়ামাগুচি বেঁচে যান দ্বিতীয় পারোমানবিক হামলায়। তবে ইয়ামাগুচি ২ পারমাণবিক হামলায় বেঁচে যাওয়া এক মাত্র ব্যক্তি নয়। এমন মানুষের সংখ্যা সারাবিশে মোটে ১৬৫ জন। সম্পাদনা: রাশিদ