সাজ্জাদুল ইসলাম: বিশ্বের সর্বোচ্চ পর্বতমালা হিমালয়। বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি এ পর্বতমালার উপরিভাগে অবস্থিত হাজার হাজার হিমবাহ মারাত্মক হুমকির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এতে ঘন ঘন প্রাকৃতিক দুর্যোগের সৃষ্টি হচ্ছে। ঘটছে ভূমিধসের ঘটনা। হচ্ছে তুষারপাত। ভেঙ্গে পড়ছে হিমবাহগুলো। ফ্রান্স২৪
গণমাধ্যমটির সংবাদদাতা আলবান আভারেজ ও নবোদিতা কুমারী ভারতের দক্ষিণের ক্ষুদ্র রাজ্য উত্তরাখন্ডে সফর করেন সম্প্রতি। এ সময় তারা এসব বিপর্যয়ের দৃশ্য প্রত্যক্ষ করেন। তাপমাত্রা বৃদ্ধি এবং জলবিদ্যুৎ বাঁধ নির্মানের মতো দ্রুত অবকাঠামো নির্মান রাজ্যটির পরিস্থিতিকে আরো জটিল করে তুলেছে।
হিমালয়ের পাদদেশে অবস্থিত উত্তরাখন্ড রাজ্যটি। রাজ্যটি ভৌগলিক অবস্থানের সুবিধা ভারতের নরেন্দ্র মোদির সরকারের নজর কাড়ে। চীন ও নেপাল সীমান্তে অবস্থিত রাজ্যটির জনসংখ্যা মাত্র এক কোটি। সরকার রাজ্যটির অবস্থানগত সুবিধার কারণে এটিকে নবায়নযোগ্য জ্বালানীর একটি কেন্দ্রে পরিণত করেছে। ফলে রাজ্যটি একটি বিশাল উন্মুক্ত ভবন নির্মানস্থলে পরিণত হয়েছে।
বিশ্বে তৃতীয় বৃহত্তম কার্বন নি:সরণকারী দেশ হলো ভারত। দেশটির বিদ্যুতের ৮০ শতাংশই আসে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে। উত্তরাখন্ডে বড় বড় জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ করছে নয়াদিল্লী। ধারণা করা হচ্ছে, একটি করতে পারলে দেশটি ২০৭০ সাল নাগাদ কার্বন নি:সরণ বন্ধ করার লক্ষমাত্র অর্জন করতে পারবে। উত্তরাখন্ডের বড় সম্পদ হলো রাজ্যটির মধ্যদিয়ে প্রবাহিত গঙ্গা ও যমুনাসহ এক ডজনের বেশি নদী। নদীগুলো হলো রাজ্যটির বৃহত্তম নৌপথ। কিন্তু রাজ্যটির নেতিবাচক দিক হলো -এটি ভূমিকম্প প্রবন এলাকাতে অবস্থিত।
বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি উত্তরাখন্ডের জন্য হুমকি হয়ে দেখা দিয়েছে। এতে হিমালয়ের হিমবাহগুলোর গলনের মাত্রা অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। বিগত এক দশকে অঞ্চলটিতে প্রতিবছর প্রাকৃতিক দুর্যোগ দেখা গেছে। ভুমিধসের সৃষ্টি হয়্। তুষার পাত ঘটে। হিমবাহের পতন ঘটে এমনকি ‘মেঘবিস্ফোরণে’ সৃষ্ট আকস্মিক প্রচন্ড ঝড়ে কয়েক মিনিটেই একটি উপত্যাকা ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়।
হঠাৎ সৃষ্ট খারাপ আবহাওয়ার কারণে ২০১৩ সালে তীর্থস্থান পরিদর্শনে যাওয়া প্রায় ১০ হাজার হিন্দু তীর্থযাত্রী নিহত হন। নিহতদের মধ্যকার ৪ হাজারের মরদেহ পর্যন্ত উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।
এসআই/এইচএ
আপনার মতামত লিখুন :