রাশিদুল ইসলাম: ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও বিজেপির সিনিয়র নেতা অমিত শাহ কথিত বাংলাদেশি অনুপ্রবেশ প্রসঙ্গে বলেছেন, ত্রিপুরায় বাংলাদেশি অনুপ্রবেশ জনজাতি অধ্যুষিত এলাকায় জনসংখ্যার আনুপাতিক হারে ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে। এতে জনজাতিদের ক্ষতি হয়েছে। পারসটুডে
সোমবার দক্ষিণ ত্রিপুরা জেলায় শান্তিরবাজারে বিজয় সংকল্প সমাবেশে তিনি বামফ্রন্ট ও কংগ্রেসকে নিশানা করে বলেন, ‘কিছু রাজনৈতিক দল বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের ভোট ব্যাংক হিসেবে ব্যবহার করছে। একমাত্র বিজেপি ওই সমস্যার বিরুদ্ধে কড়া অবস্থান নিয়েছে।’ এ সময়ে তিনি অনুপ্রবেশ ঠেকাতে আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপিকে ভোট দেওয়ার আবেদন জানান।
এ প্রসঙ্গে ভারতের ছত্তিশগড়ের ডিএক্সার ও রেডিও তেহরানের শ্রোতা আনন্দ মোহন বাইন মঙ্গলবার এক প্রতিক্রিয়ায় বলেছেন, ‘যেহেতু এখন ওখানে নির্বাচন হচ্ছে, সেজন্য আমার মনে হয়, সে যেকোনও রাজনৈতিক দল হোক না কেন, তাদের এই কথাটা বেশি করে বলা উচিত, বিশেষ করে যারা শাসন করছেন, আমরা কী প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম আর আমরা এ পর্যন্ত কতটা সেই প্রতিশ্রুতি পালন করেছি। কিন্তু তা হচ্ছে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘যে কোনও রাজ্যের লোক হোক না কেন, তারা প্রথমেই দেখছে বেকারত্ব সবচেয়ে বড় সমস্যা। কিন্তু সেই বিষয়ে কম কথা বলছে শাসক দল। আমার মনে হয় এবার সত্যিই ত্রিপুরার নির্বাচনটা একটু কঠিন হবে।’
এদিকে, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেছেন, ‘ত্রিপুরা একসময় মাদক, মানব পাচার, বাংলাদেশি অনুপ্রবেশ, দুর্নীতি এবং আদিবাসীদের ওপর অত্যাচারের জন্য পরিচিত ছিল কিন্তু বিজেপি শাসনে সড়ক তৈরি করা হচ্ছে, মানুষ পানীয় জল পাচ্ছে, জৈব চাষ করা হচ্ছে এবং বিশেষ করে আদিবাসীরা তাদের অধিকার ভোগ করছে।’
বিজেপি নেতা অমিত শাহ আরও বলেন, ‘কমিউনিস্ট পার্টির শাসনামলে রাজ্যে ৪ হাজার মানুষ নিহত হয়েছিল। এখন উন্নয়নের পথে এগোচ্ছে ত্রিপুরা। কংগ্রেস আপনাদেরকে অন্ধকার দিয়েছে, আমরা আপনাদেরকে অধিকার দিয়েছি। বিজেপি উত্তর-পূর্ব ভারতে ৯ হাজারের বেশি সন্ত্রাসীকে আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য করেছে।’
গত ২০১৮ সালের বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করেছিল কিন্তু তাদের এবং সিপিএমের মধ্যে ভোট ভাগের ব্যবধান ছিল খুব কম। এমতাবস্থায় সিপিএম এবং কংগ্রেস এবার জোটবদ্ধ হয়ে মাঠে নেমেছে। অন্যদিকে, ত্রিপুরায় এ পর্যন্ত বিজেপির ৬ জন বিধায়ক ইস্তফা দিয়ে দল ছেড়েছেন। এদের মধ্যে সুদীপ রায় বর্মন, আশিস সাহা, দিবাচন্দ্র রাঙ্খল কংগ্রেসে যোগ দিয়েছেন। বুর্বমোহন ত্রিপুরা যোগ দিয়েছেন বিরোধী জনজাতি দল ‘তিপ্রা মথা’য়। আশিস দাস তৃণমূলে যোগ দিলেও পরবর্তীতে তৃণমূল শিবির ত্যাগের কথা ঘোষণা করেন।
রাজ্যটিতে ২০১৮ সালে বামফ্রন্টকে পরাজিত করে ক্ষমতায় এসেছিল বিজেপি। সে সময়ে মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন বিজেপি বিধায়ক বিপ্লব দেব। পরবর্তীতে ২০২২ সালে মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে বিপ্লব দেবকে সরিয়ে সেই দায়িত্ব মানিক সাহার হাতে তুলে দেওয়া হয়। বিজেপি নেতারা ইতোমধ্যে রাজ্যে ‘ডাবল ইঞ্জিন সরকার’ ( কেন্দ্র ও রাজ্যে বিজেপি সরকার) গড়ার স্লোগান দিয়ে মাঠে নেমেছেন।
৬০ টি বিধানসভা আসন সমন্বিত ত্রিপুরায় আগামী ১৬ ফেব্রুয়ারি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এ জন্য সব রাজনৈতিক দল নির্বাচনী তৎপরতা জোরদার করেছে। নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা করা হবে আগামী ২ মার্চ।
আপনার মতামত লিখুন :