সাজ্জাদুল ইসলাম: নামিবিয়ার গণহত্যার শিকার ব্যক্তিদের উত্তরসূরীরা ‘তথ্য গোপন বন্ধ করা’ এবং ক্ষতিপূরণ দানের বিষয় সরাসরি তাদের সাথে আলোচনা করা দাবি জানিয়েছেন। তাদের অনুমোদন ছাড়া বিষয়টি নিয়ে চুক্তি করার জন্য তারা নামিবিয়া সরকারের বিরুদ্ধে মামলা করার প্রেক্ষাপটে এ দাবি জানালো তারা। সূত্র গার্ডিয়ান অনলাইন।
হেরোরো ও নামা জাতিগোষ্ঠীর লোকেরা ক্ষমা প্রার্থনার বিষয়টিকে প্রত্যাখ্যান করে দেশটি আদালতে মামলা করেছে। নামিবিয়া ও জার্মানির মধ্যে আলোচনা পর ২০২১ সালে ক্ষমা প্রার্থনা করা হয়। এতে ১৯০৪ থেকে ১৯০৮ সালে পরিচালিত গণহত্যার কোন প্রতিকার বা ক্ষতিপূরণ দেয়া হয়নি। এটি ছিল বিংশ শতকের প্রথম গণহত্যার ঘটনা।
হেরোরো গোষ্ঠীর প্রধান প্রফেসর মুটজিন্দে কটজিউয়া (Prof Mutjinde Ktjiua) বিষয়টি অত্যন্তপূর্ণ বলে উল্লেখ করে বলেন, কোন পর্যায়েই আমাদেরকে এর সাথে সংশ্লিষ্ট করা হয়নি। সরকারই এজেন্ডা নির্ধারণ করেছে। তারা যা চেয়েছে তা-ই আলোচনা করেছে এবং গত বছর যৌথ ঘোষণা দেখার পূর্ব পর্যন্ত আমরা এ বিষয়ে কিছুই জানতে পারেনি। ঘোষনায় ৩০ বছরে উন্নয়ন প্রকল্পে একশ’ কোটি ডলার বিনিয়োগ করার প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছে। তবে কটজিউয়া বলেন এই দুই জাতিগোষ্ঠী তাদের দারিদ্র নিরসনে সরাসরি ক্ষতিপূরণ পেতে চায়। কেননা ঐ গণহত্যার ফলশ্রুতিতে তারা দারিদ্র্য কবলিত ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীতে পরিণত হয়েছে।
কটজিউয়া বলেন, এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কারণ আমরা সন্দেহাতীতভাবে জানি যে এ দেশে এমন একটি সরকার রয়েছে যে সম্পদের অপব্যবহার করছে। এ সরকার এতো বছর যাবত হেরোরো ও নামা জনগোষ্ঠীর (গণহত্যার শিকার হওয়ার) কথাটি অস্বীকার করে আসছিল। তাই এ সমস্যার সমাধানের বিষয়ে কিভাবে এ সরকারের ওপর আস্থা রাখবেন?
এই দুই উপজাতির মানুষ জার্মান ঐপ্যনিবেশিক শাসন মানতে অস্বীকার করলে ১৯০৪ সালে তাদের ওপর গণহত্যা চালানো হয়। এ সময় হেরোরো উপজাতির ৮০ শতাংশ মানুষকে এবং নামার ৫০ শতাংশ মানুষকে হত্যা করা হয়। হত্যার শিকার মানুষের সংখ্যা ৩৪ হাজার থেকে এক লাখ। বর্তমানে এ জাতিগোষ্ঠীর মানুষেরা নামিবিয়ায় রাজনৈতিকভাবে প্রান্তিক সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীতে পরিণত হয়েছে।
হেরোরো আইনজীবী প্যাট্রিক কাউটা বলেছেন যৌথ ঘোষনা নামিবিয়ার পার্লামেন্টের ২০০৬ সালের প্রস্তাবের লংঘন। ঐ প্রস্তাবে জার্মানির কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ আদায় করার কথা বলা হয়েছিল।
এসআই/এসএ
আপনার মতামত লিখুন :