জাফর খান: বেশ কয়েক বছর খরার পর ইরাকে নতুন করে জেগে উঠেছে বহু প্রত্যাশিত জলাভূমি। ইউনেস্কো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজের তালিকায়তেও নান্দনিক স্থান হিসেবে এরই মধ্যে তালিকায় উঠে এসেছে এ অঞ্চলটির নাম। সম্প্রতি মেসোপটেমিয়ানের তীর ঘেষে কালো মহিষের এক দল জলাধারে পানি পান করছে এমন দৃশ্যও চোখে পড়েছে। যা কিনা স্থানীয় কৃষকদের মনে নতুন করে বেচে থাকার স্বপ্ন জুগিয়েছে। এর আগে গ্রীষ্মকালীন সময়ে খরা সৃষ্টির ফলে দেশটির তাইগ্রিস ও ইউফ্রেতিসের জল হ্রাস পেতে শুরু করে।তবে এই খরার জন্য ইরান ও তুরষ্ক কর্তৃক বাধ নির্মাণকে দায়ী করে আসছে দেশটির কর্তৃপক্ষ।শীতকালীন বৃষ্টিতে এরইমধ্যে ইরান সীমান্তবর্তী চিবাইশ ও ধিকার প্রদেশের হুওয়াইজাতে দেখা গেছে সবুজের সমারোহ। আল-জাজিরা
চিবাইশের এক স্থানীয় মহিষ পালক রহিম দাউদ তার সুখকর প্রতিক্রিয়ায় জানায়, নদীর পানি বাড়াতে এখন তারা নৌকাও চালাতে পারছে। অক্টোবরে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে আল-জাজিরা জানিয়েছে, গত ছয় মাসে খরার কারনে প্রায় ১২০০ পরিবার ‘ধিকার’ ছেড়ে চলে যায়। সেসময় দক্ষিন ইরাকের অঞ্চলে প্রায় ২০০০ মহিষের মৃত্যু হয়।
এর আগে ২০২২ সালে ইরাকে টানা তিন বছর ধরে চলা খরাকালীন সময় তাপমাত্রা গিয়ে পৌছে ৫০ ডিগ্রী সেলসিয়াস (১২২২ ডিগ্রী ফারেনহাইট)। স্থানীয় সরকারের এক কৃষি কেন্দ্র প্রধান হুসেইন আল কেনানী জানিয়েছেন, ক্রমশ অবস্থার উন্নতি হচ্ছে।নদী ও খালের এই পানি সংরক্ষনের মধ্যদিয়ে জলাভূমি গুলোকে আবারও পুনজাগরিত করা হচ্ছে।
গত জুলাইয়ে আকস্মিকভাবে পানির স্তর কমে যাবার ফলে ৬০০০ পরিবার সহ অসংখ্য গবাদি পশু ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে এক পরিসংখ্যনে জানিয়েছে United Nations Food and Agriculture Organization (FAO)। তবে দীর্ঘকালীন সময়ের জন্য নদী তীরবর্তী বসবাসরত মানুষের ভাগ্যে কি নেমে আসতে পারে সে বিষয়ে শংকা প্রকাশ করেছেন দেশটির পরিবেশ বিজ্ঞানী জাসিম –আল-আসাদী। তিনি এক প্রতিক্রিয়ায় জানান,’’ তুরষ্ক সীমান্ত ঘেষে পর্যাপ্ত পানি না আসা ও পানি সংরক্ষনের ট্যাংক না থাকায় এই অঞ্চলে জলাভূমি গুলোকে রক্ষা করা কিছুটা দুষ্কর হতে পারে। যা কিনা আগামী গ্রীষ্মে আবারও শকট তৈরি করতে পারে‘’
এত কিছুর পরও ভালভাবে বেচে থাকার জন্য অবিরত সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছে এলাকার স্থানীয় বাসিন্দারা এই নতুন করে জেগে উঠা জলাভূমিকে কেন্দ্র করে।
জেকে/এসএ
আপনার মতামত লিখুন :