ইমরুল শাহেদ: পাকিস্তান ও ভারতের মধ্য দিয়ে প্রবাহমান সিন্ধু নদের পানিবণ্টন চুক্তির (আইডব্লিউটি) সংশোধন চেয়ে পাকিস্তানকে নোটিশ দিয়েছে ভারত। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র জানিয়েছে, বুধবার সিন্ধু পানিবণ্টন প্রকল্পের কমিশনারের মাধ্যমে এই নোটিশ পাঠানো হয়েছে। এনডিটিভি
বিশ্বব্যাংকের মধ্যস্থতায় ১৯৬০ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী পণ্ডিত জওহরলাল নেহরু এবং পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট আয়ুব খানের সঙ্গে সিন্ধু নদীর পানি ব্যবহার নিয়ে চুক্তি হয়। স্বাধীনতার পর থেকেই সিন্ধু নদীর পানি ব্যবহার নিয়ে দুই দেশের মধ্যে রাজনৈতিক এবং কূটনৈতিক পর্যায়ে টানাপড়েন চলছে। দীর্ঘ ৬ বছর আলাপ আলোচনার পর ১৯৬০ সালে পাকিস্তানের করাচিতে গিয়ে নেহরু এ চুক্তিটি স্বাক্ষর করেন।
চুক্তি অনুযায়ী, বিতস্তা ও চন্দ্রভাগার পানির ওপর পাকিস্তানের অধিকার ৮০ শতাংশ এবং ভারতের ২০ শতাংশ। তবে ভারত ওই পানি ব্যবহার করলেও তা ‘বাধ’ দিয়ে আটকাতে পারবে না বলে শর্তে উল্লেখ করা হয়।
ভারত সরকার বলেছে, ‘পারস্পরিকভাবে ভারত এ চুক্তিতে একটি মধ্যস্থতার পথ খুঁজে বের করার চেষ্টা করে। কিন্তু পাকিস্তান ২০১৭ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত স্থায়ী সিন্ধু কমিশনের ৫টি বৈঠকের সময় বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করতে অস্বীকার করেছে। আর এ কারণেই এখন ভারতের পক্ষ থেকে পাকিস্তানকে নোটিশ দেওয়া হয়েছে।’
উল্লেখ করার বিষয় হলো কিষেণগঙ্গা এবং রাতলে জলবিদ্যুৎ প্রকল্প চালু করে ভারত উক্ত দুই প্রবাহের পানি আটকে দিচ্ছে বলে ২০১৬ সালে অভিযোগ করে পাকিস্তান। প্রাথমিকভাবে অভিযোগের সত্যতা প্রমাণ করতে নিরপেক্ষ দেশের পর্যবেক্ষকের দাবি তুলেছিল ইসলামাবাদ। তা নিয়ে ঐকমত্যে পৌঁছানোর পরও আন্তর্জাতিক সালিশি আদালতের দ্বারস্থ হয় ইসলামাবাদ।
ভারত বলেছে, এই অভিযোগ একতরফা এবং তা সিন্ধু পানিবণ্টন চুক্তির নবম ধারার লঙ্ঘন। এই পরিস্থিতিতে বাধ্য হয়েই চুক্তি সংশোধনের নোটিশ পাঠানো হয়েছে।
ভারতের দাবি, ‘পাকিস্তানের একাধিক ভুল পদক্ষেপের ফলেই ‘সিন্ধু পানিবণ্টন চুক্তি’ বাস্তবায়নের ওপর বিরূপ প্রভাব পড়ছে এবং এ চুক্তি সংশোধনের জন্য নোটিশ দিতে বাধ্য হয়েছে ভারত সরকার। এ চুক্তি হওয়ার পর পানিবণ্টনে ভারত বরাবরই নরম মনোভাব দেখিয়ে এসেছে।’
ভারতীয় কূটনীতিকদের একাংশ মনে করেন, উচ্চ অববাহিকায় থাকা রাষ্ট্র হিসেবে ভারতের উচিত নিজের অধিকার প্রতিষ্ঠায় আরও সক্রিয় হওয়া। সিন্ধু পানিবণ্টন চুক্তি লঙ্ঘন সংশোধন করার জন্য পাকিস্তানকে ৯০ দিনের মধ্যে আন্তঃসরকারি আলোচনায় প্রবেশের সুযোগ দেওয়াই হচ্ছে এ নোটিশের উদ্দেশ্য।
আইএস/এনএইচ
আপনার মতামত লিখুন :