ইমরুল শাহেদ: রাশিয়া বলেছে, ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় দোনেস্ক এলাকার পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ না পাওয়া পর্যন্ত সীমিত পর্যায়ে যুদ্ধ চালিয়ে যাবে। ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ গণমাধ্যমকে বলেছেন, রুশ প্রশাসন থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়া দোনেস্ক পিপলস রিপাবলিকের ‘স্বাধীনতা’ অর্জন না হওয়া পর্যন্ত যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়া হবে। আল-জাজিরা
রাশিয়ার মদদপুষ্ট পূর্ব ইউক্রেনের স্বঘোষিত লুহানস্ক পিপলস রিপাবলিকের নেতা অঞ্চলটিকে রাশিয়ার সঙ্গে যুক্ত করে নেওয়ার আনুষ্ঠানিক অনুরোধ জানিয়েছে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে। কিন্তু পুরো অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ নিতে গিয়ে বিপাকে পড়েছে রাশিয়া।
পশ্চিমা মিত্রদের অস্ত্র সহযোগিতা নিয়ে ইউক্রেন পাল্টা হামলা রুশ দখলে থাকা অনেক অংশ ইতোমধ্যেই উদ্ধার করেছে। বিশ্বের পাঁচ পরাশক্তির একটি হলো রাশিয়া। নিজের পরাশক্তি ইমেইজ বা শক্তি সমুন্নত রাখার জন্যে হলেও ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়াকে বিজয় লাভ করতে হবে।
এজন্য প্রয়োজনে পরমাণু অস্ত্র ব্যবহারের হুমকি দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। তিনি বলেছেন, কোনো ব্লাফ বা কথার কথা নয়।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার নিয়ে রাশিয়ার যে নীতি রয়েছে, তাতে ‘রাষ্ট্রের অস্তিত্ব হুমকির মুখে পড়লে প্রচলিত অস্ত্র দিয়ে রাশিয়ান ফেডারেশনের বিরুদ্ধে আগ্রাসন’ মোকাবিলার পর রুশ বাহিনী চাইলে পারমাণবিক হামলা চালাতে পারবে।
তবে কেউ কেউ বলছেন, ইউক্রেনে নিজের সামরিক পরাজয় এড়াতে, নিজের প্রেসিডেন্ট পদ রক্ষা করতে, পশ্চিমা দেশগুলোকে ভয় দেখাতে বা ইউক্রেনকে আত্মসমর্পণের জন্য আতঙ্কিত করতে এক বা একাধিক ছোট, কৌশলগত পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করতে পারেন প্রেসিডেন্ট পুতিন।
পূর্ব ইউক্রেনের লুহানস্ক, দোনেস্ক, খেরসন এবং জাপোরিজিয়া- এই চারটি অঞ্চলকে রাশিয়ায় অন্তর্ভুক্ত করার পর সেখানে কোনো হামলা হলে সেটা রাশিয়ার ওপর আক্রমণ হিসাবে দেখাতে পারে মস্কো। আর এটি কিয়েভ এবং তার পশ্চিমা মিত্রদের জন্য একটি সতর্কতা।
পুতিন পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নেবেন কিনা তা নির্ভর করছে তার ওপরই। মূলত চলমান এই যুদ্ধে শেষ পর্যন্ত পুতিন নিজেকে কতটা কোণঠাসা বোধ করছেন; পরমাণু হামলা হওয়া বা না হওয়াটাও অনেকাংশে এই বিষয়ের ওপরও নির্ভর করছে।
মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভান রোববার মার্কিন টিভি নেটওয়ার্ককে বলেছেন, প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসন পুতিনের মন্তব্যকে ‘মারাত্মক গুরুত্ব সহকারে’ নিচ্ছে এবং পরমাণু অস্ত্র ব্যবহার করলে মস্কোকে নির্দিষ্ট ‘বিপর্যয়কর পরিণতি’ সম্পর্কে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে।
অবশ্য পারমাণবিক হামলা হলে যুক্তরাষ্ট্রের সম্ভাব্য প্রতিক্রিয়া ঠিক কী হবে সেটি প্রকাশ করেনি ওয়াশিংটন। সম্পাদনা: আল আমিন
আপনার মতামত লিখুন :