পূর্ব চীন সাগরে ভূ-রাজনৈতিকভাবে কয়েকটি দ্বীপ প্রশাসনিকভাবে জাপানের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। তবে দীর্ঘদিন থেকে চীন এগুলোর ওপর সার্বভৌমত্ব দাবি করে আসছে। এই প্রেক্ষাপটে সম্প্রতি দ্বীপগুলোর কাছে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। যা নিয়ে দেশ দুটি ভিন্ন ব্যাখ্যা দিচ্ছে। এর মাধ্যমে চীন ও জাপানের মধ্যকার চলমান উত্তেজনা এবার আরও প্রকাশ্য রূপ পেল।
মঙ্গলবার চীনের কোস্টগার্ড জানিয়েছে, দিয়াওয়ু দ্বীপপুঞ্জের জলসীমায় একটি জাপানি মাছ ধরার নৌকা অবৈধভাবে প্রবেশ করেছিল। টোকিও যেগুলোকে সেনকাকু দ্বীপ বলে অভিহিত করে।
অন্যদিকে, জাপানের কোস্টগার্ড বলছে, তারা দুটি চীনা কোস্টগার্ড জাহাজকে নিরাপত্তার কারণে এলাকা থেকে তাড়িয়ে বের করে দিয়েছে। কারণ, জাহাজগুলো জাপানি মাছ ধরার নৌকা লক্ষ্য করে এগিয়ে আসছিল।
চায়না কোস্ট গার্ড (সিসিজি)-এর মুখপাত্র লিউ দেজুন বলেন, মঙ্গলবার চীনা জাহাজগুলো একটি জাপানি মাছ ধরার নৌকার কাছে গিয়ে সতর্কবার্তা দেয়। কারণ হিসেবে তারা জানায়, নৌকাটি চীনের দিয়াওয়ু দ্বীপের আঞ্চলিক জলসীমায় অবৈধভাবে প্রবেশ করেছিল।
দ্বীপগুলোকে চীনের ভূখণ্ড দাবি করে লিউ বলেন, সিসিজি আইন অনুযায়ীই পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। একই সঙ্গে জাপানকে এই জলসীমায় সব ধরনের লঙ্ঘন ও উসকানি বন্ধ করার আহ্বান জানাচ্ছে।
অন্যদিকে জাপান কোস্টগার্ড (জেসিজি) বলেছে, মঙ্গলবার ভোরে চীনা জাহাজগুলো জাপানের জলসীমায় প্রবেশ করার পর তারা এগুলোকে তাড়া করে জলসীমা ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছে। তারা আরও বলছে, টহল জাহাজ মাছ ধরার নৌকার নিরাপত্তা নিশ্চিতে এ পদক্ষেপ নেয়।
পূর্ব চীন সাগরে যৌথভাবে সম্পদ আহরণের জন্য ২০০৮ সালে জাপান ও চীনের চুক্তি রয়েছে। তবে কয়েক বছর ধরে সেনকাকু বা দিয়াওয়ু নিয়ে উত্তেজনা বেড়েছে।
প্রসঙ্গত, গত মাসে জাপানের প্রধানমন্ত্রী তাইওয়ান নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করার পর থেকে দুই দেশের সম্পর্ক ক্রমাগত অবনতি হচ্ছে। সর্বশেষ এ ঘটনা ঘটেছে ওই উত্তেজনা বাড়ার প্রেক্ষাপটে।
গত মাসে পার্লামেন্টে জাপানের প্রধানমন্ত্রী সানায়ে তাকাইচি ইঙ্গিত দেন বেইজিং তাইওয়ানের ওপর আক্রমণ করলে টোকিও সামরিক পদক্ষেপ নিতে পারে। মঙ্গলবার সংঘর্ষের ঘটনা ঘটা সেনকাকু বা দিয়াওয়ু দ্বীপপুঞ্জের দক্ষিণ-পশ্চিমে প্রায় ১৬০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত তাইওয়ান।
সূত্র: বিবিসি, বাংলাদেশ প্রতিদিন