শিরোনাম
◈ যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি: কী পাচ্ছে বাংলাদেশ, কী হারাতে পারে? ◈ রাতেই সোহরাওয়ার্দীতে জড়ো হচ্ছেন জামায়াতের নেতাকর্মীরা (ভিডিও) ◈ চাপাতি হাতে ব্যাগ ছিনিয়ে পুলিশের সামনেই হেঁটে গেলো ছিনতাইকারী, ভিডিও ভাইরাল ◈ রাশিয়ার সঙ্গে সম্পৃক্ত ভারতের বৃহত্তম তেল শোধনাগার নায়ারা রিফাইনারির ওপর ইইউর নিষেধাজ্ঞা ◈ রাতের আকাশে ভেসে উঠলো ‘নাটক কম করো পিও’ (ভিডিও) ◈ জটিল ভয়ানক যে রোগে আক্রান্ত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প! ◈ কুড়িগ্রামে চাঁদা দাবি করা জামায়াতের সেই নেতা সাময়িক বহিষ্কার ◈ বড়াইগ্রামে এক বিষয়ে পরীক্ষা দিয়ে দুই বিষয়ে দুই পরীক্ষার্থী ফেল! ◈ টাঙ্গাইলে পুলিশ হেফাজতে বিএনপি নেতার রহস্যজনক মৃত্যু ◈ এনসিপি’র মার্চ টু গোপালগঞ্জ তলিয়ে দেখা দরকার: শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি

প্রকাশিত : ১৯ জুলাই, ২০২৫, ০২:০২ রাত
আপডেট : ১৯ জুলাই, ২০২৫, ০৯:০০ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

রাশিয়ার সঙ্গে সম্পৃক্ত ভারতের বৃহত্তম তেল শোধনাগার নায়ারা রিফাইনারির ওপর ইইউর নিষেধাজ্ঞা

নায়ারা এনার্জি লিমিটেডের মালিকানার বড় একটি অংশ রাশিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান রসনেফটের। ছবি: সংগৃহীত

রাশিয়ার জ্বালানি খাতকে লক্ষ্য করে ঘোষিত নতুন নিষেধাজ্ঞার অংশ হিসেবে ভারতের বৃহত্তম তেল শোধনাগারের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। এই তেল শোধনাগারটি পরিচালনা করে নায়ারা এনার্জি লিমিটেড, যার মালিকানার বড় একটি অংশ রাশিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান রসনেফটের।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইইউর এই ঘোষণা এমন এক সময়ে এসেছে, যখন যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেস রাশিয়ার তেল ক্রেতাদের ওপর আরও কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপের বিষয়টি নিয়ে বিতর্ক করছে। মার্কিন আইনপ্রণেতারা এরই মধ্যে ভারত, চীন ও ব্রাজিলের নাম উল্লেখ করেছেন—যারা রাশিয়ার জ্বালানি কেনার জন্য শাস্তির মুখে পড়তে পারে।

ইইউর ঘোষিত নতুন নিষেধাজ্ঞার প্যাকেজে রাশিয়ার তেল পরিবহনে ব্যবহৃত জি-৭ দেশগুলোর (উন্নত অর্থনীতির সাত দেশের জোট) জাহাজ ও বিমাব্যবস্থাকে ব্যবহার করে রাশিয়ার তেল কেনার ক্ষেত্রে দামের সর্বোচ্চ সীমা ৬০ ডলার থেকে কমিয়ে ৪৭ দশমিক ৬ ডলার নির্ধারণ করা হয়েছে। এই নতুন তেলের মূল্যসীমা রাশিয়ান তেলের গড় বাজারমূল্যের ১৫ শতাংশ কমে নির্ধারিত হয়েছে। যদিও জি-৭-এর সব দেশ এই সীমা নেয়নি, তবে যুক্তরাজ্য এই সীমা নিয়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির পররাষ্ট্র দপ্তর।

এ ছাড়া রাশিয়ান তেল দিয়ে প্রস্তুত যেসব পরিশোধিত পেট্রোলিয়াম পণ্য রয়েছে, সেগুলোর ওপর ইইউজুড়ে আমদানি নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। পাশাপাশি জার্মানির সঙ্গে রাশিয়াকে সংযুক্ত করা নর্ড স্ট্রিম ১ ও ২ গ্যাস পাইপলাইনের ওপর পুরোপুরি লেনদেন নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

ইইউর শীর্ষ কূটনীতিক কায়া কাল্লাস এক্সে দেওয়া বিবৃতিতে বলেন, ‘এই প্রথমবারের মতো আমরা একটি পতাকাবাহী নিবন্ধন সংস্থা ও ভারতের সবচেয়ে বড় রসনেফট সম্পৃক্ত তেল শোধনাগারকে নিষিদ্ধ করেছি।’

নায়ারা এনার্জির মালিকানার ৪৯ দশমিক ১৩ শতাংশ রয়েছে রাশিয়ার রসনেফটের হাতে। অন্য মালিকানা রয়েছে কেসানি এন্টারপ্রাইজেস কোম্পানি লিমিটেড এবং কিছু স্থানীয় বিনিয়োগকারীর হাতে। গুজরাটের ভাদিনারে অবস্থিত নায়ারার শোধনাগারটি ভারতের দ্বিতীয় বৃহত্তম তেল শোধনাগার, যা প্রতিদিন ৪ লাখ ব্যারেল তেল প্রক্রিয়াজাত করে এবং সারা দেশে ৬ হাজার ৩০০টির বেশি পেট্রলপাম্প পরিচালনা করে।

ভারতের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, নিষেধাজ্ঞার পর রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজের সঙ্গে তাদের অংশীদারত্ব বিক্রি নিয়ে আলোচনা চলছে।

ইইউর বিবৃতিতে বলা হয়েছে, নায়ারা রিফাইনারির ওপর পূর্ণাঙ্গ নিষেধাজ্ঞা (যেমন—ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা, সম্পদ জব্দ, আর্থিক লেনদেন নিষেধ) কার্যকর হবে।

১৮তম এই প্যাকেজে ১৪ ব্যক্তি ও ৪১টি সংস্থাকেও নতুন করে নিষেধাজ্ঞার আওতায় আনা হয়েছে, ফলে ইইউর নিষিদ্ধ তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ২ হাজার ৫০০ ছাড়িয়েছে। এবার নিষেধাজ্ঞার আওতায় এসেছে রাশিয়ার তথাকথিত ‘ছায়া জাহাজবহর’ (শ্যাডো ফ্লিট)–এর অনেক জাহাজ, যেগুলো নিষিদ্ধ পণ্য পরিবহন করছে বা নিষেধাজ্ঞা লঙ্ঘন করছে। নতুন করে ১০৫টি জাহাজকে ইইউ বন্দরে প্রবেশ ও নৌসেবা নেওয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে, যার ফলে মোট নিষিদ্ধ জাহাজের সংখ্যা দাঁড়াল ৪৪৪-এ।

একটি ছায়া বহরের জাহাজের ক্যাপ্টেন ও একটি অজ্ঞাতনামা পতাকা নিবন্ধন সংস্থার অপারেটরকেও নিষিদ্ধ তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যাংক খাতের নিষেধাজ্ঞা আরও বিস্তৃত করা হচ্ছে। মোট ৪৫টি রুশ ব্যাংকের ওপর পুরোপুরি লেনদেন নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে ২৬টি নতুন সংস্থাকে নিষিদ্ধ তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, যারা রাশিয়াকে দ্বৈত ব্যবহারের (সামরিক ও বেসামরিক) পণ্য সরবরাহ করছে। একই সঙ্গে রাশিয়া ও বেলারুশের সামরিকশিল্প খাতে পণ্য সরবরাহে জড়িত আরও কয়েকটি সংস্থাকে নিষেধাজ্ঞার আওতায় আনা হয়েছে।

একই দিনে রাশিয়ার সামরিক গোয়েন্দা সংস্থা জিআরইউর তিনটি ইউনিট ও ১৮ জন গোয়েন্দা কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাজ্য। যুক্তরাজ্যের মতে, এসব ইউনিট বছরের পর বছর ধরে সাইবার হামলার মাধ্যমে ইউরোপে অস্থিতিশীলতা তৈরি করছে।

ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ল্যামি বলেন, জিআরইউ গুপ্তচরেরা ইউরোপকে অস্থিতিশীল করতে, ইউক্রেনের সার্বভৌমত্ব ক্ষুণ্ন করতে ও ব্রিটিশ নাগরিকদের নিরাপত্তা হুমকির মুখে ফেলতে অপারেশন চালাচ্ছে।

যুক্তরাজ্য জানিয়েছে, এই ইউনিটগুলো ২০২২ সালে মারিউপোল শহরে রাশিয়ার বিমান হামলায়, বিশেষ করে, মারিউপোল থিয়েটারে হামলায় সহযোগিতা করেছিল, যেখানে শিশুসহ শত শত মানুষ নিহত হয়েছিল।

এ ছাড়া সাবেক রুশ ডাবল এজেন্ট সের্গেই স্ক্রিপাল ও তাঁর মেয়ে ইউলিয়ার ওপর সাইবার হামলায় জড়িত ব্যক্তিদেরও নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। উল্লেখ্য, ২০১৮ সালে ব্রিটেনের সালিসবারিতে ‘নভিচক’ নার্ভ গ্যাস দিয়ে তাঁদের হত্যাচেষ্টা করা হয়েছিল। সূত্র: আজকের পত্রিকা

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়