যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই (FBI) তাদের অবসরপ্রাপ্ত এজেন্ট রবার্ট লেভিনসনের অপহরণে জড়িত থাকার অভিযোগে তিন জন শীর্ষ ইরানি কর্মকর্তাকে 'মোস্ট ওয়ান্টেড' তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেছে। অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারে সহায়তার জন্য তথ্য চেয়ে সংস্থাটি মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) তাদের ছবিসহ পোস্টার প্রকাশ করেছে।
এফবিআই জানিয়েছে, অভিযুক্তদের বিচারের আওতায় আনতে একাধিক দল একযোগে কাজ করছে। এই ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে দীর্ঘদিনের উত্তেজনা আরও বাড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
অভিযুক্ত কর্মকর্তারা:
এফবিআই-এর ওয়াশিংটন ফিল্ড অফিস কর্তৃক প্রকাশিত তালিকা অনুযায়ী, এই তিন কর্মকর্তা হলেন:
১. রেজা আমিরি মোঘাদাম: তিনি বর্তমানে পাকিস্তানে ইরানের রাষ্ট্রদূত হিসেবে কর্মরত।
২. তাগি দানেশভার: তাকে একজন অভিজ্ঞ গোয়েন্দা এবং সন্ত্রাসবিরোধী কর্মকর্তা হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে।
৩. গোলামহোসেন মোহাম্মাদনিয়া: তিনি পূর্বে আলবেনিয়ায় ইরানের রাষ্ট্রদূত হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
এফবিআই-এর মতে, তিনজনই ইরানের প্রভাবশালী গোয়েন্দা ও নিরাপত্তা মন্ত্রণালয়ের (MOIS) সঙ্গে যুক্ত। বিদেশে আমেরিকানদের জিম্মি, অপহরণ এবং তাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের মূল পরিকল্পনাকারী হিসেবে তাদের চিহ্নিত করা হয়েছে। এই কর্মকর্তারা আগে থেকেই মার্কিন নিষেধাজ্ঞার আওতায় ছিলেন।
রবার্ট লেভিনসন ಪ್ರಕರಣ:
রবার্ট লেভিনসন ২০০৭ সালে ইরানের কিশ দ্বীপ থেকে নিখোঁজ হন। জানা যায়, তিনি সেখানে সিআইএ-এর একটি অননুমোদিত অভিযানে ছিলেন। মার্কিন কর্মকর্তাদের বিশ্বাস, ইরানি হেফাজতে থাকাকালীন তিনি মারা গেছেন। তবে তেহরান বরাবরই তাকে আটক করার বিষয়টি অস্বীকার করে আসছে।
২০২০ সালে লেভিনসনের পরিবার এক বিবৃতিতে জানায়, তারা মার্কিন কর্মকর্তাদের কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছে যে, তিনি ইরানে বন্দিদশায় মৃত্যুবরণ করেছেন।
মার্কিন প্রতিক্রিয়া:
এই পদক্ষেপের বিষয়ে মার্কিন সিনেটর জিম রিশ সামাজিক মাধ্যম এক্স-এ লিখেছেন, "লেভিনসন একজন নিবেদিতপ্রাণ এবং দেশপ্রেমিক আমেরিকান ছিলেন। তাকে অপহরণের জন্য ইরানকে জবাবদিহি করতে এফবিআই কাজ করছে। এই নতুন পোস্টারগুলো তার অপহরণ সম্পর্কিত তথ্য চাচ্ছে। আমরা লেভিনসন ও তার পরিবারকে কখনো ভুলব না।"
পূর্ববর্তী পদক্ষেপ:
উল্লেখ্য, লেভিনসনের অপহরণ, আটক ও সম্ভাব্য মৃত্যুর জন্য দায়ী আরও দুই ইরানি গোয়েন্দা কর্মকর্তা— মোহাম্মদ বাসেরি ও আহমদ খাজাইয়ের বিরুদ্ধে এফবিআই আগে থেকেই ২৫ মিলিয়ন ডলার পুরস্কার ঘোষণা করে রেখেছে।
সূত্র: ইরান ইন্টারন্যাশনাল, রয়টার্স এবং বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম।