শিরোনাম

প্রকাশিত : ১২ এপ্রিল, ২০২৪, ০৭:১৮ সকাল
আপডেট : ১৭ এপ্রিল, ২০২৪, ০৮:০৪ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

ইসরায়েলের জন্য খুব খারাপ দিন আসছে, মার্কিন চিন্তাবিদের বিশ্লেষণ

রাশিদুল ইসলাম: [২] জন মার্শেইমার একজন বিখ্যাত আমেরিকান চিন্তাবিদ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক। তিনি এক সাক্ষাতকারে, গত ১৩ এপ্রিল সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে ইরানের কনস্যুলেট বিভাগে ইসরায়েলের আক্রমণকে আন্তর্জাতিক আইনের জন্য একটি বড় আঘাত হিসাবে বর্ণনা করেছেন। পারসটুডে

[৩] ‘ইন্টারসেপ্ট’ ওয়েবসাইটের প্রতিষ্ঠাতা ‘গ্লেন গ্রিনওয়ার্ল্ড’-এর সাথে একটি সাক্ষাতকারে তিনি এ কথা বলেছেন। তিনি আরো বলেন, ‘ইসরায়েল মূলত নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে। যখন আপনি গাজায় একটি মানবিক ত্রাণ বহরের উপর ইসরায়েলের হামলার ঘটনা দেখতে পাচ্ছেন, তখন বুঝতে হবে যে ইসরায়েল যা ইচ্ছা তাই করছে এবং তারা কোনো সীমাবদ্ধতা মানছে না’।

[৪] তিনি আরো বলেন, ‘আমরা দামেস্কে ইরানের কনস্যুলেটে বোমা হামলার কথা বলছি। আমি মনে করি এটি আন্তর্জাতিক ব্যবস্থা ও নিয়ম নীতির প্রতি বড় ধরণের ধাক্কা যে ব্যাপারে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নীরব রয়েছে। ইসরায়েলিরা অবাধ্যের মতো আচরণ করছে এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যেকোনো মূল্যে তাদের রক্ষা করবে’।

[৫] জন মার্শেইমার ইসরায়েলি এই আচরণের প্রতি সমর্থনের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের সমালোচনা করে বলেন, ‘এটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জন্য ভাল হবে না এবং সামগ্রিকভাবে এটি অবশ্যই আন্তর্জাতিক রাজনীতির জন্যও মোটেই ভাল হবে না।’ আমেরিকান বিশ্ববিদ্যালয়ের এই অধ্যাপক দামেস্কে ইরানের কনস্যুলেট ভবনে ইসরায়েলি হামলার ঘটনাকে গাজা যুদ্ধে পরাজয়ের আলামত হিসাবে উল্লেখ করে বলেন, ‘আমি জানি না তাদের (ইসরায়েলের) লক্ষ্য কী এবং তাদের চিন্তাভাবনাও বোঝা কঠিন। তবে, বলা যেতে পারে তারা মরিয়া হয়ে উঠেছে ঠিক যেমনটি মৃত্যুর আগে কেউ হাত পা ছুঁড়তে থাকে। গাজার পরিস্থিতি ইসরায়েলের জন্য সুখকর নয় এবং লেবাননের হিজবুল্লাহর পক্ষ থেকেও তারা কঠিন চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হচ্ছে। সব মিলিয়ে সামনের দিনগুলো ইসরায়লের জন্য ভালো কিছু বয়ে আনবে না এবং তাদের জন্য খুব খারাপ দিন আসছে।’

[৬] অধ্যাপক জন মার্শেইমার বলেন, ‘এটা বলা যেতে পারে যে, ইসরায়েল উত্তেজনা ছড়াচ্ছে কারণ তারা বর্তমানে আটকে পড়া যুদ্ধের এই চোরাবালি থেকে নিজেদের বের করে আনার চেষ্টা করছে। এমনও হতে পারে যে তারা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে ইরানের সাথে যুদ্ধ বাধাতে চায়, যা ইসরায়েল সরকারের দীর্ঘমেয়াদী লক্ষ্যগুলার মধ্যে একটি। আর এমনটি ঘটলে তা অবশ্যই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জন্যও ভাল হবে না।’

[৭] গত ১৩ এপ্রিল ইসরায়েলি যুদ্ধবিমান দামেস্কের আল-মাজেহ সড়কে অবস্থিত ইরানি কনস্যুলেট ভবনে হামলা চালিয়ে ইরানের সাত জন সামরিক উপদেষ্টাকে শহীদ করে। সেইসঙ্গে কিছু সিরিয়ার নাগরিকও প্রাণ হারিয়েছে। বিশ্বের বহু দেশ এই হামলার নিন্দা করলেও হামলার কয়েকদিন পর, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, তার পশ্চিমা মিত্রদের সাথে একজোট হয়ে, জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদকে ওই হামলার নিন্দা জানিয়ে একটি বিবৃতি পাস করতে বাধা দেয়।

[৮] ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে, ইসরায়েল গাজায় হামলা চালিয়ে এ পর্যন্ত ৩৩০০০ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে এবং তাদের বহু বাড়িঘর ও স্থাপনা ধ্বংস করেছে। ১৯১৭ সাল থেকে ব্রিটিশদের সহযোগিতায় বিভিন্ন দেশ থেকে ফিলিস্তিনে ইহুদিদের এনে জড়ো করা হয়। এরপর ১৯৪৮ সালে ইসরায়েল রাষ্ট্রের অস্তিত্ব ঘোষণা করা হয়েছিল। তারপর থেকেই ফিলিস্তিনিদের ওপর গণহত্যা এবং তাদের সমগ্র ভূমি দখলের কাজ অব্যাহত রয়েছে।

[৯] কিন্তু ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরান শক্তভাবে ইসরায়েলি জুলুম নির্যাতনের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছে এবং ইসরায়েল নামক অবৈধ রাষ্ট্রের বিলুপ্তির জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। ইরান চায় ইহুদি অভিবাসীরা যেন নিজ নিজ দেশে ফেরত চলে যায়। 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়