বুধবার সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে পাকিস্তানের এশিয়া কাপের ম্যাচটা ছিল নকআউট। এই ম্যাচের জয়ী দলেরই নিশ্চিত হওয়ার কথা সুপার ফোর। অথচ এমন গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ ছাপিয়ে আলোচনায় ছিল পাকিস্তানের ম্যাচ বয়কট ইস্যু। ভারতের ক্রিকেটাররা করমর্দন না করায় ম্যাচ রেফারি অ্যান্ডি পাইক্রফটকে কাঠগড়ায় দাঁড় করায় পাকিস্তান। তার অপসারণ দাবিতে বুধবার বিকালের পর থেকে নানা নাটকীয়তার জন্ম দেয় পিসিবি। শেষ পর্যন্ত অবশ্য এক ঘণ্টা বিলম্বে গড়িয়েছে ম্যাচ। সেই ম্যাচ ৪১ রানে জিতে গ্রুপ ‘এ’ থেকে ভারতের পর সুপার ফোর নিশ্চিত হয়েছে পাকিস্তানেরও।
শুরুতে টস হেরে ব্যাট করতে নামা পাকিস্তানকে ৯ উইকেটে ১৪৬ রানে আটকে দেয় সংযুক্ত আরব আমিরাত। দলের পেসার জুনাইদ সিদ্দিক ১৮ রানে ৪ উইকেট নেন। সঙ্গে বাঁহাতি স্পিনার সিমরনজিৎ সিং শিকার করেছেন ৩ উইকেট। পাকিস্তানকে লড়াইয়ের মতো স্কোর এনে দেন মূলত শাহীন শাহ আফ্রিদি। শেষ দিকে মাত্র ১৪ বলে ২৯ রানের ক্যামিও ইনিংস খেলেন তিনি। তাতে ছিল ৩টি চার ও ২টি ছক্কার মার। তার মধ্যে শেষ ওভারেই দুটি চারের সঙ্গে ছিল একটি ছয়!
দুবাইয়ের ঘাসের উইকেটে টস জিতে আগে বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত যথার্থ প্রমাণ করেন জুনাইদ। পাকিস্তানের ওপেনার সাইম আয়ুবকে শূন্য রানে ফেরান তিনি। যা পাকিস্তানি ব্যাটারের টানা তৃতীয় ‘ডাক’। শাহেবজাদা ফারহান রিভিউ নিয়ে এলবিডাব্লিউ থেকে বাঁচলেও বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। পুল করতে গিয়ে ক্যাচ তুলে দেন লং লেগে। ৩ ওভারে পাকিস্তানের স্কোর তখন ৯ রানে দুই উইকেট।
সেখান থেকে কিছুটা ঘুরে দাঁড়াতে ভূমিকা রাখেন ফখর জামান ও সালমান আগা। দুজন মিলে তৃতীয় উইকেটে ৫০ বলে ৬১ রান যোগ করেন। ফখর ছিলেন আক্রমণাত্মক, ধ্রুব পারাশারকে টানা দুই ছক্কা হাঁকিয়ে ৩৫ বলে পূর্ণ করেন হাফসেঞ্চুরি। কিন্তু নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারানো থেকে রেহাই মেলেনি পাকিস্তানের। সালমান আগা (২০) কভার দিয়ে বড় শট খেলতে গিয়ে ধরা পড়েন ডিপ কভারে। এরপর সিমরনজিৎ এক ওভারে দুটি উইকেট তুলে নেন। হাফসেঞ্চুরির পরই ফখর ক্যাচ তুলে ফেরেন শর্ট এক্সট্রা কভারে। কিছুক্ষণ পর হাসান নওয়াজ হন এলবিডাব্লিউ। এরপর জুনাইদ তুলে নেন মোহাম্মদ নওয়াজকেও। পরে লেগকাটারে মোহাম্মদ হারিসকেও বোল্ড করেছেন। তার পর ঝড়ো ব্যাটিংয়ে স্কোরবোর্ড ১৪৬ রানে নেন শাহীন। শেষ বলে রান বাড়াতে গিয়ে রান আউট হন হারিস রউফ। তাতে পড়ে নবম উইকেট।
তার পর পাকিস্তানের দুর্দান্ত বোলিং নৈপুণ্য ১৪৬ রান ডিফেন্ড করতে ভূমিকা রেখেছে। বল হাতে তারা এমন চাপ তৈরি করেছিল যে সেই চাপের মুখেই ধস নামে ইনিংসে। শেষ ৭ উইকেট হারায় ২০ রানে।
পাওয়ার প্লেতে ৩৭ রানে ৩ উইকেট হারালে তার পর আমিরাতকে টেনে নেওয়ার চেষ্টায় ছিলেন রাহুল চোপরা ও ধ্রুব পরাশার। চতুর্থ উইকেটে ৪৮ রান যোগ করেন তারা। ১৪তম ওভারে দলের ৮৫ রানে পরাশারকে (২০) ফিরিয়ে জুটি ভাঙেন হারিস। রান রেটের চাপ বাড়তে থাকায় তার পরেই ধস নামে ইনিংসে। ৯৬ রানে ষষ্ঠ উইকেট হিসেবে বিদায় নেন রাহুল চোপড়াও (৩৫)। বাকি উইকেট পড়তেও বেশি সময় লাগেনি। ১৭.৪ ওভারে ১০৫ রানে গুটিয়ে যায় স্বাগতিক দল।
১৩ রানে দুটি উইকেট নেন লেগ স্পিনার আবরার আহমেদ। ১৬ রানে দুটি নেন শাহীন আফ্রিদিও। ব্যাট হাতেও অবদান রাখায় ম্যাচসেরা তিনি। ১৯ রানে সম সংখ্যক উইকেট নেন হারিস রউফ। ৯ রানে একটি নিয়েছেন সালমান আগা।