শিরোনাম
◈ ৩২ বছর পর হতে যাচ্ছে জাকসু নির্বাচন, তারিখ ঘোষণা ◈ মানবিক করিডর আসলে কী, বিশ্বের কোথায় কতটা কার্যকর? ◈ ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ কি আসন্ন, হুঙ্কার-পাল্টা হুঙ্কার ◈ ব্রাজিলের কোচ হওয়ার স্বপ্ন সফল হ‌লো না আনচেলত্তির, রিয়াল মা‌দ্রিদেই থাক‌তে হ‌চ্ছে ◈ বাংলাদেশে বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনে আগ্রহী চীন ◈ উপদেষ্টা আসিফের পদত্যাগ দাবিতে বিক্ষোভ, ব্যানার কেড়ে নেয়ায় ওসির গায়ে হাত তুলতে তেড়ে আসেন বিক্ষোভকারীরা (ভিডিও) ◈ আজ মহান মে দিবস ◈ নতুন আইন হচ্ছে র‍্যাবকে ব্যক্তিস্বার্থে ব্যবহার ঠেকাতে ◈ চলতি মাসে ২৯ দিনে রেমিট্যান্স এলো ২৬০ কোটি ৭৬ লাখ ডলার ◈ মন্ত্রিপরিষদকে নির্বাচন কমিশনের ১২ প্রস্তাব

প্রকাশিত : ০৭ জুলাই, ২০২৪, ০২:৩৭ রাত
আপডেট : ০৪ এপ্রিল, ২০২৫, ১১:০০ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

চাকরিতে কোটা ব্যবস্থা না রেখেও মুক্তিযোদ্ধা পরিবারকে সুবিধা বা সম্মান দেওয়া যেতে পারে

মোজাফ্ফর হোসেন

মোজাফ্ফর হোসেন: বৈষম্যমূলক সমাজে কোটাব্যবস্থা থাকে বৈষম্য কমাতে, বাড়াতে নয়। কোটার উদ্দেশ্য তুলনামূলক অমেধাবীদের পুনর্বাসন করাও নয়, সুবিধাবঞ্চিতদের টেনে তোলা। ফলে অর্থনৈতিকভাবে দেশের সর্বস্তরের মানুষ এগিয়ে গেছে, শিক্ষার সুযোগসুবিধা সর্বোস্তরে পৌঁছে গেছে, এটা বাস্তবতা হলে কোটাসংস্কার জরুরি। নিশ্চয় বর্তমান সরকার স্বীকার করবে, গত পনেরো বছরে দেশে শিক্ষা ও অর্থনৈতিক বৈষম্য কমেছে? তাহলে সে অনুযায়ী সার্বিক কোটা পদ্ধতি সংস্কার করতে অসুবিধা কোথায়? আর ৩০% মুক্তিযুদ্ধ কোটা?  মুক্তি যে জনযুদ্ধ সেটা কি কেউ অস্বীকার করতে পারবে? তাহলে কেবল গেজেটভুক্ত মুক্তিযোদ্ধারাই (সংখ্যায় ভুয়া সনদধারীসহ ১ লাখ ৮৩ হাজার) কেন ৩০% সুবিধা একা ভোগ করবে? জনযুদ্ধের জনগণ বাদ পড়ে যাচ্ছে না? সমস্যা নেই, মুক্তিযুদ্ধের কোটা ১০০% হোক, কিন্তু সুনিশ্চিত করতে হবে দেশের প্রতিটা মুক্তিযোদ্ধা পরিবার সেই সুবিধা পাবেন, এবং একটাও ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা সনদধারী এই সুবিধা পাবে না; নিশ্চিত করতে পারবেন তো? না করতে পারলে কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সমুন্নত করার নামে ভুলণ্ঠিতই হবে। তাও হোক, কিন্তু সন্তান পর্যন্ত, নাতি-নাতনি পর্যন্ত প্লিজ না। জনযুদ্ধে অংশ নেওয়া মানুষগুলোর কথাও ভাবুন। না হলে মুক্তিযুদ্ধ জনযুদ্ধ না, এইটা সরকারিভাবে ঘোষণা দিন। 

পারলে রাজাকার পরিবারগুলো চিহ্নিত করে আলাদা করার ব্যবস্থা নিন। যদি সেটা পারেন, তাহলে আর কোনো প্রশ্ন থাকে না।  সুবিধা কিন্তু রাজাকার পরিবারগুলো ঠিকই পায়, মাঝখান থেকে জনযুদ্ধে অংশ নেওয়া মানুষগুলো ছাগলের তিন নম্বর বাচ্চা। যে পরিবার মুক্তিযোদ্ধাদের আশ্রয় দিয়েছে, খাবার দিয়েছে গোপনে, পাকিস্তানি মিলিটারি রাজাকারদের কাছে তথ্য গোপন করে মুক্তিযোদ্ধাদের জীবন বাঁচিয়েছে, যে পরিবারের নারীকে ক্যাম্পে নির্যাতন করেছে পাকিজালেমরা, যে পরিবারের মানুষকে হত্যা করা হয়েছে, প্রত্যেকে এই জনযুদ্ধের অংশীদার। ৩০ শহিদ, ২লক্ষ নির্যাতনের শিকার মা বোন, প্রত্যেকের পরিবার কি মুক্তিযোদ্ধার সনদ পেয়েছে? মুক্তিযোদ্ধা-পরিবারের সন্তানের জন্য বিশেষ সুবিধার কথা ভাবলে, এই প্রশ্নগুলোর উত্তর খোঁজা জরুরি।

আমি যেটুকু বুঝি, যুদ্ধটা হয়েছিল বৈষম্যের বিরুদ্ধে, বলা যেতে পারে কোটার বিরুদ্ধেও। মুক্তিযোদ্ধারাই সেই যুদ্ধ করেছেন। চাকরিতে কোটা ব্যবস্থা না রেখেও মুক্তিযুদ্ধপরিবারকে সুবিধা (পড়ুন সম্মান) দেওয়া যেতে পারে। মুক্তিযোদ্ধারের ভাতা আরো বাড়িয়ে দেওয়া হোক, তাদের পরিবারের চিকিৎসা ফ্রি করে দেওয়া হোক, সন্তানদের স্কলারশিপ দেওয়া হোক, ভূমিহীনদের ভূমি দেওয়া হোক, রাষ্ট্রীয়ভাবে দেশের ফার্স্ট নাগরিকের সম্মান জানানো হোক, সরকারি অফিসাররা মুক্তিযোদ্ধাদের দেখে উঠে দাঁড়াবেন, স্যার বলে সম্মোধন করবেন ইত্যাদি নানাভাবে তাঁদের মর্যাদা দেওয়া হোক, কিন্তু তরুণ ও অনাগত প্রজন্মের কোনো অধিকারের মুখোমুখি দাড় করার কারণ দেখি না। যিনি মুক্তিযুদ্ধো, এদেশের প্রতিটা সন্তানই তার সন্তান। লেখক: কথাসাহিত্যিক

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়