শিরোনাম
◈ নিত্যপণ্যের বাজারে অস্বস্তি: বাড়ল ভোজ্য তেল ও ডিমের দাম, সবজির দামও চড়া ◈ ন্যায্যমূল্য না পেয়ে মাঠে পড়ে আছে ৮ লাখ মেট্রিক টন লবণ, এর মধ্যেই আমদানির তোড়জোড় ◈ ইসরায়েলের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা চাইলো বিশ্বের খ্যাতিমান ইহুদি ব্যক্তিত্বরা ◈ বাংলাদেশে কোরিয়ান বিনিয়োগ বাড়াতে সিইপিএ চুক্তি চূড়ান্তের পথে ◈ বাংলাদেশের পাশে থাকবে যুক্তরাষ্ট্র: নতুন মার্কিন রাষ্ট্রদূত ব্রেন্ট ক্রিস্টেনসেন ◈ সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয় অধ্যাদেশ: অধস্তন আদালতের বিচারকদের বদলি-পদোন্নতির ক্ষমতা পাচ্ছেন সুপ্রিম কোর্ট ◈ নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীর পদত্যাগের গুঞ্জন, যা জানা গেল ◈ ‘সংসদ নির্বাচন পর্যবেক্ষণে হতে পারে ড্রোন ব্যবহার’ ◈ হাসিনা সরকারের কিছু প্রাথমিক ‘ভুল’ ছিল: সজীব ওয়াজেদ জয় ◈ এনসিপির কার্যালয়ের সামনে মধ্যরাতে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ

প্রকাশিত : ২০ অক্টোবর, ২০২৫, ০৯:২৯ সকাল
আপডেট : ২৪ অক্টোবর, ২০২৫, ১১:০০ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

দুই শতাব্দী পরও ব্রিটিশদের দেওয়া ঋণের অর্থ ফেরত পাচ্ছেন নবাব পরিবারের উত্তরাধিকাররা

উত্তরপ্রদেশের ঐতিহাসিক শহর লখনৌয়ের হুসেইনাবাদে এখনো টিকে আছে দুই শতাব্দী পুরোনো এক চুক্তির প্রতিধ্বনি—ব্রিটিশদের দেওয়া ঋণের সুদ হিসেবে নবাব পরিবারের উত্তরাধিকারীরা এখনো পাচ্ছেন মাসিক পেনশন।

ইতিহাসে এই পেনশন পরিচিত ‘ওয়াসিকা’ নামে, যা একসময় ছিল রাজকীয় সম্মানের প্রতীক, এখন তা হয়ে দাঁড়িয়েছে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক অতীতের এক জীবন্ত নিদর্শন।

ইতিহাস বলছে, অষ্টাদশ শতাব্দীর শেষ দিকে নবাব সুজা-উদ-দৌলার স্ত্রী বহুবেগম ১৮১৭ থেকে ১৮২২ সালের মধ্যে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানিকে দুই দফায় মোট ৪০ মিলিয়ন রুপি ঋণ দেন। কোম্পানি সেই ঋণের বিপরীতে চুক্তিবদ্ধ হয় যে, নবাব পরিবারের উত্তরাধিকারীদের মাসিক একটি নির্দিষ্ট অর্থ প্রদান করা হবে—যা ফার্সি ভাষায় ‘ওয়াসিকা’ বা “লিখিত চুক্তি” নামে পরিচিত হয়। সেই সময় থেকেই শুরু হয় ব্রিটিশ আমলের এই অনন্য ভাতা প্রথা।

দুই শতাব্দী পরেও সেই প্রথা চলছে। বর্তমানে প্রায় ১২০০ জন নবাব পরিবারের উত্তরাধিকারী এই ওয়াসিকা পেনশন পাচ্ছেন। তবে অর্থের পরিমাণ শুনলে অবিশ্বাস্য মনে হয়—কারো মাসিক পেনশন মাত্র ৯ টাকা ৭০ পয়সা!

লখনৌয়ের পিকচার গ্যালারির সামনে ৯০ বছর বয়সী ফৈয়াজ আলী খান নিয়মিত আসেন এই ওয়াসিকা তুলতে। তিনি বলেন, “এত অল্প অর্থে কিছুই হয় না, তাই বছরে একবার এসে পুরো টাকাটাই তুলে নিই।” ইতিহাসে সর্বোচ্চ ওয়াসিকা ছিল ৫৬৯ রুপি, আর সর্বনিম্ন মাত্র ১ রুপি ১ পয়সা।

ওয়াসিকা প্রদানের জন্য প্রায় ২৬ লাখ টাকার একটি মূলধন ব্যাংকে জমা আছে, যার সুদ দিয়েই এই পেনশন দেওয়া হয়। প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে ভাগ হয়ে যাওয়ায় প্রতিজনের অংশ ক্রমেই কমে গেছে। ফলে এখন এটি অর্থনৈতিক সুবিধার চেয়ে বেশি ঐতিহাসিক মর্যাদার প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়েছে।

তবে এই প্রথা নিয়ে মতভেদও আছে। কেউ কেউ বলেন, এটি সামন্ততান্ত্রিক যুগের অবশিষ্ট ব্যবস্থা, যা আর প্রাসঙ্গিক নয়। কিন্তু নবাব পরিবারের অনেক উত্তরাধিকারী মনে করেন, এটি শুধুই পেনশন নয়—এটি ইতিহাসের প্রতি সম্মান এবং একটি বৈধ চুক্তির ধারাবাহিকতা।

সম্প্রতি নবাব পরিবারের এক সদস্য, শহীদ আলী খান, আদালতে যাচ্ছেন পেনশন পুনর্মূল্যায়নের দাবিতে। তার মতে, “ওয়াসিকার পরিমাণ রুপিতে নয়, বরং রূপার প্রকৃত মূল্যের ভিত্তিতে নির্ধারণ করা উচিত।”

দুই শতাব্দী পরও ব্রিটিশদের কাছ থেকে ধার দেওয়া টাকার এই ক্ষুদ্র প্রতিদান নবাব পরিবারের ইতিহাস, সম্মান ও উত্তরাধিকারের এক অনন্য প্রতীক হয়ে আছে ভারতের উপনিবেশিক অতীতের সাক্ষী হয়ে। সূত্র: দৈনিক ইনকিলাব

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়