ইফতেখার আলম বিশাল : রাজশাহী নগরীতে ‘লোভনীয় বেতন ও নিশ্চিত চাকরির’ প্রলোভন দেখিয়ে একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে। বুধবার (৩০ এপ্রিল) দুপুরে নগরীর উপশহর ২ নম্বর সেক্টরে অবস্থিত ‘মহানন্দা স্কুল অ্যান্ড কলেজ’ ভবনে ভুয়া নিয়োগ কার্যক্রম চালানোর সময় পুলিশ অভিযান চালিয়ে মূল হোতা জিল্লুর রহমানসহ পাঁচজনকে আটক করে। আটককৃতদের মধ্যে দুইজন নারী রয়েছেন।
জানা গেছে, ‘বেস্ট সাফা’ নামের একটি তথাকথিত সেবামূলক প্রতিষ্ঠানের ব্যানারে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ১৫টি পদে চাকরির বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ ছিল—উচ্চ বেতন, স্থায়ী নিয়োগ ও অন্যান্য সুবিধার কথা। আকর্ষণীয় প্রলোভনে শতাধিক চাকরিপ্রত্যাশী সকাল থেকে নির্ধারিত স্থানে জড়ো হন। ঘটনাস্থলে প্রতিষ্ঠানটির স্বঘোষিত পরিচালক জিল্লুর রহমান প্রার্থীদের বলেন, সিভি যাচাইয়ের পর চাকরি হয়ে গেছে। এরপর প্রাথমিক ফি হিসেবে ২ হাজার টাকা এবং পদভেদে জামানত বাবদ ২০ হাজার থেকে এক লাখ টাকা দাবি করা হয়। বিষয়টি সন্দেহজনক মনে হলে চাকরিপ্রত্যাশীরা ও স্থানীয়রা পুলিশে খবর দেন।
বাড়ির মালিক আবদুল্লাহ জানান, ভাড়াটিয়া জিল্লুর রহমান আমাদের না জানিয়ে, কোনো চুক্তি ছাড়াই ভবনটি ব্যবহার করছিলেন। ‘টু-লেট’ বোর্ড সরিয়ে দিয়ে তিনি নিয়োগ কার্যক্রম শুরু করেন। তার এসব আচরণে সন্দেহ হলে তিনি প্রশাসনকে জানান। বোয়ালিয়া মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (তদন্ত) রাকিবুল ইসলাম জানান, “প্রতারক চক্রের মূল হোতা সহ পাঁচজনকে আটক করে থানায় নেওয়া হয়েছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। অভিযোগের সত্যতা পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
এ ব্যাপারে স্থানীয় শিক্ষিত সমাজের লোকজনেরা বলেন, চাকরির ক্ষেত্রে কোন প্রতিষ্ঠান বা সংস্থার বিশ্বাসযোগ্যতা যাচাই না করে অর্থ লেনদেন করা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচারিত বিজ্ঞাপন দেখে আবেদন করার আগে প্রতিষ্ঠানটির অনুমোদন, ঠিকানা, অফিস কার্যক্রম ও রেজিস্ট্রেশন যাচাই করা উচিত। একইভাবে ভবন বা প্রতিষ্ঠান ভাড়া দেওয়ার ক্ষেত্রেও মালিকদের সচেতন থাকা জরুরি, যেন প্রতারক চক্র এ সুযোগে জনসাধারণকে বিভ্রান্ত করতে না পারে।