শিরোনাম
◈ ভুটানের রাজার সঙ্গে থিম্পু পৌঁছেছেন তথ্য প্রতিমন্ত্রী ◈ চট্টগ্রামের জুতার কারখানার আগুন নিয়ন্ত্রণে ◈ জিয়াও কখনো স্বাধীনতার ঘোষক দাবি করেনি, বিএনপি নেতারা যেভাবে করছে: ড. হাছান মাহমুদ ◈ আওয়ামী লীগ সবচেয়ে বড় ভারতীয় পণ্য: গয়েশ্বর ◈ সন্ত্রাসীদের ওপর ভর করে দেশ চালাচ্ছে সরকার: রিজভী ◈ ইফতার পার্টিতে আওয়ামী লীগের চরিত্রহনন করছে বিএনপি: কাদের ◈ বাংলাদেশে কারাবন্দী পোশাক শ্রমিকদের মুক্তির আহ্বান যুক্তরাষ্ট্রের ফ্যাশন লবি’র ◈ দক্ষিণ আফ্রিকায় সেতু থেকে তীর্থ যাত্রীবাহী বাস খাদে, নিহত ৪৫ ◈ ২২ এপ্রিল ঢাকায় আসছেন কাতারের আমির, ১০ চুক্তির সম্ভাবনা ◈ ইর্ন্টান চিকিৎসকদের দাবি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী’র সঙ্গে কথা বলেছি: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

প্রকাশিত : ০১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩, ০৪:০৪ দুপুর
আপডেট : ০১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩, ০৪:০৪ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

মা ও শিশু স্বাস্থ্য হাসপাতাল : প্রতিদিন ২৫-৩০ নারীর স্বাভাবিক প্রসব হচ্ছে, ডা. মুনীরুজ্জামান 

ডা. মো. মুনীরুজ্জামান সিদ্দীকী

শাহীন খন্দকার: মোহাম্মদপুর ফার্টিলিটি সার্ভিসেস অ্যান্ড ট্রেনিং সেন্টার এবং ১০০ শয্যা বিশিষ্ট ‘মা ও শিশু স্বাস্থ্য হাসপাতাল’ হলেও স্থানীয়ভাবে এটি ‘মা ও শিশু হাসপাতাল’ নামেই পরিচিত।

মোহাম্মদপুরের আওরঙ্গজেব রোড ও তাজমহল রোডের মাঝামাঝিতে হাসপাতালটি অবস্থিত। প্রবেশ পথেই বড় মাঠ, নানা রকমের গাছ-গাছালী, বর্ণিল ফুলের বাহার, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ক্যাম্পাস।

হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্স, মিডওয়াইফ, এফডব্লিউভি এবং অন্যান্য কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ব্যবহার অন্য হাসপাতালের সঙ্গে চোখে আঙ্গুল দিয়ে পার্থক্যটা বুঝিয়ে দেয়। হাসপাতালটির ছয়তলা ভবনটির নিচতলায় ইপিআই কার্যক্রম, পুষ্টিসেবা, শিশু বহির্বিভাগ, ব্লাড ব্যাংক, করোনা টিকা কেন্দ্র, সারভাইকেল ক্যান্সার স্ক্রিনিং ও ভ্যাক্সিনেশন, পরিবার পরিকল্পনা সেবা ও সমাজসেবা কার্যক্রম রয়েছে।

এছাড়াও দ্বিতীয়তলায় প্রসবপূর্ব এবং প্রসব পরবর্তী চিকিৎসা, প্যাথলজিকেল ল্যাবরেটরি, নিঃসন্তান দম্পতিদের চিকিৎসাসেবা, কিশোর-কিশোরীদের প্রজনন স্বাস্থ্যসেবা ও কাউন্সিলিং, নারী-পুরুষ বন্ধ্যাকরণ সেবা দেওয়া হচ্ছে। তৃতীয় তলায় আলট্রাসনোগ্রাম এবং জরুরি ও প্রসবকালীন সেবা। চতুর্থতলায় প্রশিক্ষণ, এবং পঞ্চম তলায় মায়েদের কেবিন এবং ওয়ার্ড। ষষ্ঠ তলায় শিশুদের ওয়ার্ড। শিশু ইউনিটের ভেতরেই দশ বেড এর নিওন্যাটাল ওয়ার্ড বেড, ছয় বেড নিয়ে কেএমসি ওয়ার্ড (ক্যাঙ্গারু মাদার কেয়ার) এবং স্ক্যান জোন করা হয়েছে।

এ বিষয়ে হাসপাতালের পরিচালক ডা. মো. মুনীরুজ্জামান সিদ্দীকী জানান, ১৯৭৪ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর হাত ধরে পাথফাইন্ডার প্রজেক্ট এর অধীনে মোহাম্মদপুর ফার্টিলিটি সার্ভিসেস অ্যান্ড ট্রেনিং সেন্টারটি পথচলা শুরু। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রথম মেয়াদে ১০০ শয্যার মা ও শিশু হাসপাতাল রাজস্ব বাজেট এর অন্তর্ভুক্ত হয়। আর মা ও শিশু হাসপাতাল হিসেবে ২৪ ঘন্টা সেবাদান কার্যক্রম শুরু  হয় ২০১০ সালে।

ডা. মো. মুনীরুজ্জামান সিদ্দীকী আরো বলেন. ১০০ শয্যার হাসপাতালে বর্তমানে প্রায়শই ১৩০ জনের অধিক রোগী থাকছেন। সীমিত জনবলে এতো রোগীর চাপ সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে হাসপাতালটি। ইতোমধ্যে স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয় হাসপাতালটি ২০০ শয্যায় উন্নীত করনের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, এখানে পরিবার পরিকল্পনা সেবা, শিশুদের টিকাদান, প্রজনন স্বাস্থ্যসেবা, সন্তান প্রসবসহ মা ও শিশুদের বিভিন্ন ধরনের চিকিৎসা সেবা দেওয়া হয়। প্রতিদিন মা ও শিশু মিলিয়ে ৮০০ থেকে এক হাজার রোগী চিকিৎসা সেবা নিতে আসেন। আর প্রতি মাসে রোগী ভর্তি থাকে ছয় শতাধিক।

মাসে এখানে সিজার হচ্ছে প্রায় ৩০০টি, আর স্বাভাবিক প্রসব হচ্ছে ২৫০ জনের। এখানে উচ্চবিত্তরা খুবই কম আসেন। তবে নিম্নবিত্ব ও মধ্যবিত্ত মায়ের চিকিৎসাসেবা দেওয়া হচ্ছে বেশী।

এছাড়া  ৪৫ শতাংশ দরিদ্র অন্তসত্বা মা ও শিশুদের বিনাপয়সায়  ওষুধসহ চিকিৎসা সেবা দেওয়া হয়। তবে যারা ব্যথামুক্ত স্বাভাবিক প্রসব করতে চান সেই ক্ষেত্রে ইনজেশন বাবদ ১৫শ’ টাকা দিতে হয়। মধ্যবিত্তদের ক্ষেত্রে স্বাভাবিক প্রসবে কোন টাকা নেওয়া হয় না। তবে সির্জারিয়ান করে যেসব শিশু জন্ম নিচ্ছে, সেসব ক্ষেত্রে ৫ থেকে সাড়ে ৫ হাজার টাকা চার্জ নেওয়া হয়। গরীব রোগীদের চিকিৎসাসেবা সম্পূর্ণ সমাজকল্যাণের সহযোগিতায় সেবা দেওয়া হয়।

এখানে সব বিভাগ মিলিয়ে প্রায় ৩০ জন মেডিক্যাল অফিসার, ১২ জন কনসালটেন্ট, ৫ জন সিনিয়র কনসালটেন্ট, ৩৫জন সেবিকা আর টেকনিশিয়ান ৪ জনসহ প্রায় ২০০ জন চিকিৎসা সেবা দিয়ে থাকেন।

হাসপাতালের পরিচালক মুনীরুজ্জামান সিদ্দিকী বলেন, শিশুদের উন্নত চিকিৎসার জন্য মোহম্মদপুরের মা ও শিশু হাসপাতালে অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি সংযুক্ত করা হয়েছে। এ হাসপাতালে প্রাকৃতিক পদ্ধতিতে ডেলিভারি করানো হয়। ২২ জন গাইনী ও ৮ জন শিশু চিকিৎসকের সঙ্গে এখানে রয়েছেন ২১ জন মিডওয়াইভ (দাইমা) ও ১৯ জন নার্স। তবে শিশু বিভাগে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের প্রয়োজন রয়েছে। এছাড়াও চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী অপর্যাপ্ত। পরিবার পরিকল্পনা সেবার জন্য এফ ডাব্লিউ লাগবে। শিশু জন্মাবার পূর্বে এবং জন্মাবার পরে জন্ম নিয়ন্ত্রন পদ্ধতি সম্পর্কে এই হাসপাতালে মা ও বাবা উভয়ের জন্য রয়েছে বিশেষ কাউন্সিলিং ব্যবস্থা। 

এই হাসপাতালটির ভেতরে প্রবেশ করলেই চোখ জুড়িয়ে যায়। বড় মাঠ, নানা রকমের ফুল ও ফলের গাছ। সরকারি হাসপাতাল এতো পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন হতে পারে তার উদাহারণ এই হাসপাতাল। হাসপাতালের ছয়তলা ভবনের প্রতিটি ফ্লোর ঝকঝকে। সরকারি অন্য হাসপাতালগুলোর মতো এখানে কোথাও পানের পিক থুথর ফেলার চিহ্ন নেই। কিংবা কোথাও কোন প্লাস্টিকের বোতল কিংবা কাগজের টুকরো নেই। 

শিশু ইউনিটে ঢুকে দেখা যায়, চারপাশে নানা রকম কৃত্রিম পাখি, ফুল, ফলের ছবি দিয়ে সাজানো। লেখা রয়েছে বাংলা মাসের নাম, সপ্তাহের সাত দিনের নামসহ শিশুদের উপযোগী নানাকিছু। আলাপকাল সাড়ে নয় বছরের প্রিসিলা জানায়, এতো সুন্দর হাসপাতাল রাজধানীতে এর আগে আর দেখিনি। সম্পাদনা : মাজহারুল ইসলাম


এসকে/এমআই/এএ

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়