কিডনি ড্যামেজ হওয়ার আগে শারীরিক কিছু লক্ষণ দেখে বোঝা যেতে পারে আপনার কিডনির অবস্থা। চুপি চুপি এ রোগ দেহে বাসা বেঁধে আপনাকে একদম শেষ করে দিতে পারে। সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা যায়, মানুষ মারাত্মক স্বাস্থ্য জটিলতাগুলোর মধ্যে হার্ট অ্যাটাকের পরই অবস্থান করছে কিডনি ড্যামেজ।তাই সুস্থ থাকতে কিডনির স্বাস্থ্য ঠিক রাখা জরুরি। মানুষের শরীরে কিডনির সংখ্যা দুইটি।
তাই একটি বিকল হলেও অন্যটি দিয়ে কাজ চলতে পারে। ফলে অন্যান্য অঙ্গের মতো প্রথমেই কিডনির ক্ষতির আঁচ বাইরে থেকে পাওয়া যায় না। ফলে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই কিডনির সমস্যায় চিকিৎসায় দেরি হয়ে যায়। কিডনি যদি ধীরে ধীরে কাজ করা বন্ধ করে দেয়, তখন শরীর নানা সংকেত দিতে শুরু করে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কিডনির সমস্যার প্রাথমিক লক্ষণগুলো চোখে দেখা দিতে পারে। যা উপেক্ষা না করে সময়মতো সতর্ক হওয়া সবচেয়ে জরুরি। চিকিৎসকরা জানান, কিডনি সঠিকভাবে কাজ না করলে দেহে টক্সিন জমে যায়, পানি ও খনিজের ভারসাম্য নষ্ট হয়। চোখ যেহেতু অত্যন্ত সংবেদনশীল অঙ্গ, তাই শরীরের ভেতরের পরিবর্তন অনেক সময় প্রথমে চোখেই ধরা পড়ে।
চোখ শুধু দৃষ্টি দেয় না, শরীরের ভেতরের গুরুতর অসুস্থতারও আগাম বার্তা দেয়। তাই চোখের সংকেতকে উপেক্ষা না করে সতর্ক থাকা কিডনি ফেইলিওরের ঝুঁকি কমানোর মূল উপায়। চোখে যে লক্ষণগুলো কিডনি সমস্যার ইঙ্গিত দিতে পারে তা হলো—
চোখের নিচে ফোলা : সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর চোখের নিচে যদি সারা দিন ফোলা থাকে, তবে সেটা ঘুমের অভাব বা ক্লান্তির কারণে নাও হতে পারে। কিডনির অসুস্থতায় শরীর থেকে প্রোটিন বের হয়ে যেতে পারে এবং পানি জমে এই ধরনের ফোলাভাব দেখা দেয়।
দৃষ্টিশক্তি ঝাপসা হওয়া : হঠাৎ ঝাপসা দেখা বা একই জিনিস দুই বার দেখা—এগুলো উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিসের লক্ষণ হতে পারে। যা আবার কিডনির সমস্যার সঙ্গেও জড়িত।
চোখ শুষ্ক ও জ্বালাপোড়া : চোখে বারবার শুষ্কতা, খসখসে ভাব বা জ্বালাপোড়া দেখা দিলে শরীরে টক্সিন বেড়ে গেছে বা খনিজের ভারসাম্য নষ্ট হয়েছে বলে ধরে নেওয়া যায়।
চোখ লাল হয়ে যাওয়া : কোনো কারণ ছাড়াই চোখ লাল হয়ে গেলে, তা হতে পারে কিডনি রোগের ইঙ্গিত। বিশেষ করে উচ্চ রক্তচাপ বা অটোইমিউন রোগের কারণে কিডনির ক্ষতি হলে, এই ধরনের সমস্যা চোখে ধরা পড়ে।
রং বোঝায় সমস্যা : হঠাৎ করে নীল বা হলুদ রং চিনতে সমস্যা হলে তা চোখের স্নায়ুর ক্ষতির লক্ষণ হতে পারে। কিডনির অসুখ দীর্ঘমেয়াদে এই ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে।
ডার্ক সার্কেল ও চরম ক্লান্তি : কিডনির সমস্যায় ঘুম ব্যাহত হয়, ফলে চোখের নিচে ডার্ক সার্কেল তৈরি হয় এবং সারা দিন ক্লান্তি লেগে থাকে।
চিকিৎসকরা সতর্ক করেছেন, চোখে দেখা দেওয়া এই পরিবর্তনগুলোকে অবহেলা উচিত নয়। যদি বারবার এমন উপসর্গ দেখা দেয়, তবে অবিলম্বে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি। নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা, সুষম খাদ্যাভ্যাস, পর্যাপ্ত পানি পান এবং রক্তচাপ ও ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখলে কিডনি সুরক্ষিত রাখা সম্ভব।