আবদুল্লাহ অনিক, বাগাতিপাড়া (নাটোর) : নাটোরের বাগাতিপাড়ায় পোস্ট ট্রমাটিক সেরিব্রাল পালসি জনিত রোগী ফারিহা হোসেন সাফা, পরিবার ও দেশের বোঝা হয়ে বাঁচতে চায় না। তাই নিজে লিখতে না পারায় শ্রুতি লেখকের সহযোগিতা নিয়ে অংশ নিয়েছে এবারের এসএসসি পরীক্ষায়।
জানা যায়, হার না মানা সাফার বাড়ি ঢাকার টাঙ্গাইল এলাকায়। বাবা নাটোরের বাগাতিপাড়া কাদিরাবাদ ক্যান্টনমেন্ট স্যাপার কলেজের শিক্ষক হওয়ার সুবাদে দয়ারামপুরে বসবাস তাদের। চলতি পরীক্ষায় সে বাগাতিপাড়া সরকারি পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে পরীক্ষা দিচ্ছে।
এর আগে জেএসসি পরীক্ষায় সে জিপিএ -৫ পেয়েছিল। তার বাবা-মা জানায়, কাদিরাবাদ ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল থেকে এবারের এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে সাফা।
সে নিজে লিখতে না পারায় উপজেলার পার্শ্ববর্তী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান মিশ্রিপাড়া আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী তৃষা খাতুনকে শ্রুতি লেখক হিসেবে নেওয়া হয়েছে। তারা আরো বলেন, ২০২১ সালের ২৮ অক্টোবর এক সড়ক দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হয় সাফা।
সেজন্য তাকে লাইফ সার্পোটে ৮ দিন আর আইসিইউতে ২২ দিন থাকতে হয়। এর ফলে তার ২০২১ সালে এসএসসি পরীক্ষা দেওয়ার কথা থাকলেও তা দিতে পারেনি।
আর ওই দুর্ঘটনার কারণে তার চলা-ফেরা, লেখা-পড়াসহ সকল কাজ-কর্মে খুবই ধীর গতি হয়ে পড়েছে। তাই পরীক্ষায় শ্রুতি লেখক নিতে হয়েছে। শ্রুতি লেখক তৃষা খাতুন বলেন, পরীক্ষার হলে পরীক্ষার্থী সাফা তাকে মুখে যা বলে সেগুলোই পরীক্ষার খাতায় সে লিখে দেয়।
এ বিষয়ে পরীক্ষার্থী সাফা বলেন, প্রতিবন্ধিতাকে জয় করে জ্ঞানের আলোয় আলোকিত হওয়ার পাশাপাশি কিছু একটা করে বাঁচতে চাই।
বাগাতিপাড়া সরকারি পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের কেন্দ্রসচিব আব্দুল লতিফ জানান, শ্রুতি লেখক নিয়ে পরীক্ষার আবেদন করায় বোর্ড তাকে অনুমোদন দিয়েছে।
আর বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন হওয়ায় তাকে অতিরিক্ত ১৫ মিনিট সময় দেয়া হচ্ছে ।সম্পাদনা: আল আমিন
আপনার মতামত লিখুন :