শিরোনাম

প্রকাশিত : ২৩ জুন, ২০২২, ১২:৫০ দুপুর
আপডেট : ২৩ জুন, ২০২২, ০৭:২১ বিকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

ঋণ পরিশোধে আবারো ছাড়

টাকা

মাজহারুল ইসলাম: বিশ্ববাজারে কাঁচামালের দাম ও পরিবহন ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় এখন ঋণগ্রহীতারা কিস্তি পরিশোধ করতে পারছে না। এই পরিস্থিতিতে ব্যবসায়ীদের ঋণ পরিশোধে শর্তসাপেক্ষে ডিসেম্বর পর্যন্ত ছাড় দিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক। বুধবার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত নির্দেশনা জারি করা নির্দেশনায় বলা হয়, জাতীয় শিল্প নীতির ২০১৬ এর অধ্যায়-৩ এ বর্ণিত সংজ্ঞানুযায়ী ‘বৃহৎ শিল্প’ প্রতিষ্ঠানগুলোর অনুকূলে বিতরণকৃত মেয়াদি ঋণ চলতি বছরের ১ এপ্রিল থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত সময়ে প্রদেয় কিস্তির ন্যূনতম ৫০ শতাংশ জুন মাসের শেষ কর্মদিবসের মধ্যে পরিশোধ করলে ঋণটি খেলাপি করবে না ব্যাংক।

১ জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত প্রদেয় কিস্তির ন্যূনতম ৬০ শতাংশ সেপ্টেম্বর মাসের শেষ কর্মদিবসের মধ্যে এবং অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রদেয় কিস্তির ন্যূনতম ৭৫ শতাংশ চলতি বছরের ডিসেম্বর মাসের শেষ কর্মদিবসের মধ্যে পরিশোধ করলে খেলাপি হবেন না ঋণগ্রহীতারা। এছাড়াও কুটির, মাইক্রো, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প (সিএমএসএমই) এবং কৃষি খাতে মেয়াদি ঋণের ১ এপ্রিল থেকে জুন পর্যন্ত সময়ে প্রদেয় কিস্তির ন্যূনতম ২৫ শতাংশ জুনের শেষ কর্মদিবসের মধ্যে পরিশোধ করলে ঋণটি খেলাপি করবে না ব্যাংক।

এ খাতের প্রতিষ্ঠানগুলোর মেয়াদি ঋণের জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময়ের প্রদেয় কিস্তির ন্যূনতম ৩০ শতাংশ এবং অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়ের প্রদেয় কিস্তির ন্যূনতম ৪০ (চল্লিশ) শতাংশ যথাক্রমে সেপ্টেম্বর ও ডিসেম্বর মাসের শেষ কর্মদিবসের মধ্যে পরিশোধ করলে ঋণগুলো খেলাপি করবে না ব্যাংক। ১ এপ্রিল পর্যন্ত যেসব তলবি ঋণ জুন থেকে ডিসেম্বরের মধ্যে ৩টি সমান ত্রৈমাসিক কিস্তিতে পরিশোধিত হবে সেগুলো ৩১ ডিসেম্বর তারিখ পর্যন্ত খেলাপি করবে না ব্যাংক।

দেশের উত্তর ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলের বন্যাকবলিত সুনামগঞ্জ, সিলেট, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, নেত্রকোনা, কিশোরগঞ্জ, শেরপুর, জামালপুর, রংপুর, লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় কর্তৃক চিহ্নিত বন্যা কবলিত জেলাসমূহের ক্ষেত্রে কৃষি খাতে বিতরণকৃত ঋণের বিপরীতে চলতি বছরের এপ্রিল থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়কালে প্রদেয় কিস্তি পরিশোধিত না হলেও ওই ঋণগুলো খেলাপি হবে না। সিএমএসএমই খাতে বিতরণকৃত মেয়াদি ঋণ এপ্রিল থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়কালে প্রদেয় কিস্তির ন্যূনতম ২৫ শতাংশ ডিসেম্বর মাসের শেষ কর্মদিবসের মধ্যে পরিশোধ করা হলে ওই ঋণ খেলাপি করবে না ব্যাংক।

সিএমএসএমই খাতে বিতরণকৃত চলমান প্রকৃতির ঋণের ক্ষেত্রে যেসব ঋণের মেয়াদ ইতিমধ্যে অতিবাহিত হয়েছে ও প্রচলিত নীতিমালার আওতায় ব্যাংক র্কর্তৃক নবায়ন করা হয়নি এবং ১ এপ্রিল তারিখে অশ্রেণিকৃত অবস্থায় রয়েছে, সেসব ঋণের সীমাতিরিক্ত অংশ (যদি থাকে) ডিসেম্বর মাসের শেষ কর্মদিবসের মধ্যে পরিশোধ করার শর্তে নবায়ন করা যাবে।

নির্দেশনা মোতাবেক চলতি বছরের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রদেয় কিস্তিসমূহের অবশিষ্টাংশ বিদ্যমান ঋণের পূর্বনির্ধারিত মেয়াদ শেষ হওয়ার পরবর্তী ১ বছরের মধ্যে সমকিস্তিতে (মাসিক/ত্রৈমাসিক) প্রদান করতে হবে। তবে ব্যাংকার-গ্রাহক সম্পর্কের ভিত্তিতে অবশিষ্ট মেয়াদকালের সঙ্গে বর্ধিত ১ বছর সময়কে বিবেচনায় নিয়ে কিস্তি পুনর্র্নিধারণপূর্বক নতুন সূচি অনুযায়ী ঋণের কিস্তি আদায় করতে পারবে ব্যাংক। ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ হলে ঋণসমূহ যথানিয়মে খেলাপির আওতাভুক্ত হবে

ঋণের কিস্তি পরিশোধের ক্ষেত্রে সুবিধাপ্রাপ্ত ঋণের ওপর চলতি বছরের ১ এপ্রিল থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়ের জন্য কোনো ধরনের দণ্ড সুদ বা অতিরিক্ত ফি আরোপ করা যাবে না। পুনঃতফসিলকৃত ঋণসহ অন্যান্য পুনঃতফসিলের মাধ্যমে অশ্রেণিকৃত হিসাবে প্রদর্শিত ঋণের জন্যও এ সুবিধা প্রযোজ্য হবে। ইসলামি শরিয়াহ্ভিত্তিক ব্যাংকগুলো তাদের প্রদত্ত বিনিয়োগের ক্ষেত্রে এই নীতিমালা অনুসরণ করে একই সুবিধা প্রদানের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। এ সার্কুলারের আওতায় সুবিধাপ্রাপ্ত ঋণ/বিনিয়োগের ওপর আরোপিত সুদ/মুনাফা আয় খাতে স্থানান্তর করা এবং ওই ঋণের বিপরীতে প্রভিশন সংরক্ষণের বিষয়ে পরবর্তী সমযে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

এর আগে করোনা মহামারীর দেখা দেওয়ার পর ২০২০ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত সব ধরনের ঋণ পরিশোধে ছাড় দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ২০২১ সালে ওই ছাড় তুলে নেওয়া হলেও ব্যবসায়ীদের দাবির মুখে কিস্তির ১৫ শতাংশ পরিশোধের শর্তে খেলাপি মুক্ত থাকার সুযোগ পান ব্যবসায়ীরা। চলতি বছরে বিশ্বমন্দার কথা বলে ডিসেম্বর পর্যন্ত ঋণ পরিশোধে ব্যবসায়ীদের দাবির মুখে নতুন করে আবার ছাড় দিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়