শিরোনাম
◈ দক্ষিণ আফ্রিকায় সেতু থেকে তীর্থ যাত্রীবাহী বাস খাদে, নিহত ৪৫ ◈ প্রাথমিকের তৃতীয় ধাপের পরীক্ষা শুরু, মানতে হবে কিছু নির্দেশনা ◈ ভারত থেকে ১৬৫০ টন পেঁয়াজ আসছে আজ! ◈ বিশ্ববাজারে সোনার সর্বোচ্চ দামের নতুন রেকর্ড ◈ ২২ এপ্রিল ঢাকায় আসছেন কাতারের আমির, ১০ চুক্তির সম্ভাবনা ◈ চেক প্রতারণার মামলায় ইভ্যালির রাসেল-শামিমার বিচার শুরু ◈ ইর্ন্টান চিকিৎসকদের দাবি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী’র সঙ্গে কথা বলেছি: স্বাস্থ্যমন্ত্রী ◈ প্রফেসর ইউনূসকে প্রদত্ত "ট্রি অব পিস" প্রধানমন্ত্রীকে প্রদত্ত একই ভাস্করের একই ভাস্কর্য: ইউনূস সেন্টার ◈ নির্বাচনী বন্ড কেবল ভারত নয়, বিশ্বের সবচেয়ে বড় কেলেঙ্কারি: অর্থমন্ত্রীর স্বামী ◈ কুড়িগ্রামে অর্থনৈতিক অঞ্চলের স্থান পরিদর্শন করে দেশে ফিরলেন ভুটানের রাজা

প্রকাশিত : ০৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩, ০৭:২৪ বিকাল
আপডেট : ০৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩, ০৭:২৪ বিকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

সরকার নির্ধারিত দামে কোথাও এলপিজি বিক্রি না হওয়ায় ভোগান্তিতে গ্রাহকরা

এলপি গ্যাস

মনজুর এ আজিজ: নিত্যপণ্যের সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে দেশে রান্নার কাজে বহুল ব্যবহৃত এলপি গ্যাসের দাম। সরকারিভাবে চলতি মাসে ১২ কেজি এলপিজির দাম ১৪৯৮ টাকা নির্ধারণ করে দেওয়া হলেও বাজারে তা মানা হচ্ছে না। বরং গ্রাহকদের কাছ থেকে ইচ্ছামতো দাম নেয়া হচ্ছে। বর্তমানে গ্রাহকদের কাছ থেকে প্রতি ১২ কেজির এলপিজির দাম ১৭৫০ টাকা করে রাখা হচ্ছে। একদিকে নিত্যসব পণ্যের দাম আকাশচুম্বি। এরপর আবার বহুল ব্যবহৃত এলপিজি কিনতে গিয়ে ভোগান্তিতে পড়ছেন গ্রাহকরা। 

জানা যায়, বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) জানুয়ারি মাসের জন্য প্রতি ১২ কেজি এলপিজির দাম ১২৩২ টাকা নির্ধারণ করে দেয়। তখনও বাজারে এলপিজির সংকট দেখিয়ে ১২ কেজির প্রতি বোতল ১৫৫০ টাকার নিচে বিক্রি করেন নি ব্যবসায়ীরা। এরপর ফেব্রুয়ারি মাসে বিইআরসি কর্তৃক ১২ কেজির প্রতি বোতল ১৪৯৮ টাকা নির্ধারণ করে দেয়। কিন্তু সরকার নির্ধারিত এ দামে বাজারে কোথাও গ্যাস পাওয়া যাচ্ছেনা বলে অভিযোগ করেছেন অনেকেই। বরং কোনো কোনো এলাকায় সর্বোচ্চ ১৮০০ টাকা পর্যন্ত প্রতি বোতলের দাম রাখা হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।  

রাজধানীর রামপুরার বাসিন্দা মাহবুব মুসা জানান, তিনি গত মাসের শুরুতে ১৪০০ টাকায় ১২ কেজির এক বোতল এলপিজি কিনেছেন। মাসের শেষে এসে সেই দাম বেড়ে হয়েছে ১৭৫০ টাকা। আবার এ মাসে কিনতে গেলে একদাম ১৮০০ টাকার নিচে দেওয়া যাবে না বলে দোকানি স্পষ্ট জানিয়ে দেন। তিনি বলেন, কেন, সরকারি দাম কত? উত্তরে তিনি বলেন, সব জিনিসের দাম বেশি, আমাদেরও বেশি দামে কিনে বেশিতে বিক্রি করতে হচ্ছে। তাহলে সরকারিভাবে দাম নির্ধারণ করে লাভ কি? আমাদের ভোগান্তিতো থেকেই যাচ্ছে।  
রাজধানীর বনশ্রীর এক খুচরা এলপিজি ব্যবসায়ী জানান, তারাই ডিলারদের কাছ থেকে ১৪৫০ টাকার বেশি দামে এলপিজি কিনছেন। এর সঙ্গে প্রত্যেক বোতলের পরিবহন খরচ রয়েছে। সেটি যোগ করলে এলপিজির ক্রয়মূল্য দাঁড়ায় ১৪৮০ টাকা। এরপর তিনি পাল্টা প্রশ্ন করে বলেন, দোকান ভাড়া, কর্মচারী, আমার নিজের সংসার, আমার তাহলে কত বিক্রি করা উচিত?

১৪৯৮ টাকার ১২ কেজি এলপিজির দাম ১৮০০ টাকা পর্যন্ত রাখার কারণ জানতে চাইলে ডিলাররা বলছেন, দায় কোম্পানির। কোম্পানি বলছে ডিলারে বর্তমানে বাণিজ্যিকভাবে প্রায় ১৮টি কোম্পানি এলপিজি গ্যাস বিক্রি করছে। কাঁচা মালের দাম বেশি হওয়ার অভিযোগ এনে উৎপাদন খরচ বেশি পড়ছে বলে দামও একটু বেশি নিতে হচ্ছে বলে জানান তারা। 

কোম্পানির পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, এলসি খোলায় বড় সমস্য। আমরা প্রতি মাসে এলসি খুলে এলপিজি আমদানি করি। বর্তমান পরিস্থিতিতে ধারাবাহিকভাবে এলসি খোলা যাচ্ছে না। যদি মাসে দুটি এলসি খোলা হয়ে থাকে, তাহলে একটার সঙ্গে আরেকটা এলসি খোলার যে ধারাবাহিকতা সেখানে গ্যাপ তৈরি হচ্ছে। সে গ্যাপের সুযোগ নিচ্ছে ডিলার ও দোকানিরা। যখন ডিলাররা দেখে যে এ মাসে প্রোডাক্ট কম আসছে কোম্পানি থেকে, তখন তারা টার্গেট পূরণের জন্য বেশি দামে সিলিন্ডার বিক্রি করে। আপনি তাদের কাছে সঠিক মূল্যের হিসাব পাবেন না। আবার দোকানি যখন দেখছে সাপ্লাই কম, তারাও তখন মজুত করে দাম বাড়িয়ে ফেলে। সুতরাং সমস্যাটা সামগ্রিকভাবে তৈরি হয়। কোম্পানি যে দামে সেল করতে চায়, মধ্যস্বত্বভোগীদের কারণে গ্রাহক পর্যায়ে গিয়ে তার দাম বেড়ে যায়। আমরা সবসময় চেষ্টা করি নির্ধারিত মূল্যেই গ্যাস বিক্রি করতে।

এ বিষয়ে বসুন্ধরা এলপি গ্যাসের হেড অব সেলস প্রকৌশলী জাকারিয়া জালাল বলেন, এলপিজি সিলিন্ডারের মূল্য বেশি রাখাটা যে শুধু কোম্পানির দোষ, ব্যাপারটা তা নয়। আমাদের এই গ্যাস বিক্রির সিস্টেমে কিছু ত্রুটি আছে। সেটা নিরসনে অনেক দিন ধরেই বিইআরসিকে আমরা বলে আসছি। ত্রুটি ঠিক করা হলে নির্ধারিত মূল্যেই সিলিন্ডার বিক্রি করা সম্ভব হবে।

বিইআরসি জানায়, ডিসেম্বর মাসের জন্য সৌদি আরামকোর প্রোপেন ও বিউটেনের ঘোষিত সৌদি সিপি (কন্ট্রাক্ট প্রাইস) যথাক্রমে প্রতি মেট্রিক টন ৬৫০ মার্কিন ডলার এবং ৬৫০ মার্কিন ডলার ছিল। এটি জানুয়ারি মাসে কমে যথাক্রমে ৫৯০ এবং ৬০৯ ডলার হয়েছিল। এবার তা আবার বেড়ে প্রোপেন ও বিউটেনের ঘোষিত সৌদি সিপি (কন্ট্রাক্ট প্রাইস) ৭৯০ মার্কিন ডলারে দাঁড়িয়েছে। দেশের এলপিজির কাঁচামাল প্রোপেন ও বিউটেনের সংমিশ্রণের অনুপাত ৩৫:৬৫। প্রসঙ্গত, প্রতি মাসে এখন এলপিজির চাহিদা রয়েছে ১ লাখ ২০ হাজার টন। সেই হিসেবে বার্ষিক এলপিজির চাহিদা ২ লাখ ৪০ হাজার মেট্রিক টন।

এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের এক সদস্য বলেন, এলপিজি সিলিন্ডারের দাম বেশি রাখা হলে গ্রাহকরা অভিযোগ দিতে পারবেন। তবে আমরা এখনও এ বিষয়ে কোনও লিখিত অভিযোগ পাইনি। সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পাওয়া গেলে অবশ্যই শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। গ্রাহকরা সচেতন হলে মূল্যবৃদ্ধির এই প্রবণতা কমে যাবে। ভোক্তা অধিকারও এ বিষয়ে কাজ করছে।

এমএএ/এসএ

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়