শিরোনাম
◈ দক্ষিণ আফ্রিকায় সেতু থেকে তীর্থ যাত্রীবাহী বাস খাদে, নিহত ৪৫ ◈ প্রাথমিকের তৃতীয় ধাপের পরীক্ষা শুরু, মানতে হবে কিছু নির্দেশনা ◈ ভারত থেকে ১৬৫০ টন পেঁয়াজ আসছে আজ! ◈ বিশ্ববাজারে সোনার সর্বোচ্চ দামের নতুন রেকর্ড ◈ ২২ এপ্রিল ঢাকায় আসছেন কাতারের আমির, ১০ চুক্তির সম্ভাবনা ◈ চেক প্রতারণার মামলায় ইভ্যালির রাসেল-শামিমার বিচার শুরু ◈ ইর্ন্টান চিকিৎসকদের দাবি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী’র সঙ্গে কথা বলেছি: স্বাস্থ্যমন্ত্রী ◈ প্রফেসর ইউনূসকে প্রদত্ত "ট্রি অব পিস" প্রধানমন্ত্রীকে প্রদত্ত একই ভাস্করের একই ভাস্কর্য: ইউনূস সেন্টার ◈ নির্বাচনী বন্ড কেবল ভারত নয়, বিশ্বের সবচেয়ে বড় কেলেঙ্কারি: অর্থমন্ত্রীর স্বামী ◈ কুড়িগ্রামে অর্থনৈতিক অঞ্চলের স্থান পরিদর্শন করে দেশে ফিরলেন ভুটানের রাজা

প্রকাশিত : ০২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩, ০৮:৩৪ রাত
আপডেট : ০৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩, ০৩:০৪ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

সাত মাসে রিজার্ভ থেকে রেকর্ড ৯২০ কোটি ডলার বিক্রি

ডলার

মনজুর এ আজিজ: এ অর্থবছরের সাত মাসে (জুলাই-জানুয়ারি) ৯২০ কোটি বা ৯ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার বিক্রি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। দেশের ইতিহাসে পুরো অর্থবছরেও রিজার্ভ থেকে এত পরিমাণ ডলার বিক্রি হয়নি। এর আগে ২০২১-২২ অর্থবছরের পুরো সময় রিজার্ভ থেকে ৭ দশমিক ৬২ বিলিয়ন বা ৭৬২ কোটি ডলার বিক্রি করেছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। বৃহস্পতিবার (২ ফেব্রুয়ারি) সমসাময়িক বিষয় নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মেজবাউল হক। 

তিনি জানান, দেশের মধ্যে ডলারের তীব্র সংকট চলছে দীর্ঘদিন ধরে। ডলারের এ সংকট কাটাতে উচ্চাভিলাষী পণ্য আমদানি নিরুৎসাহিতের পাশাপাশি বিভিন্ন পদক্ষেপও নিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এরপরও সংকট কাটছে না। এ কারণে জরুরি আমদানি দায় মেটাতেই বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ থেকে প্রতিনিয়ত ডলার সহায়তা দিচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

তারপরও আটকে থাকছে কোটি কোটি টাকার পণ্য। ১০০ ভাগ মার্জিন দিয়েও অনেক ব্যবসায়ী ডলার সংকটে এলসি খুলতে পারছেন না। অধিকাংশ ব্যাংকও আমদানিকারকদের চাহিদা মেটাতে পারছে না। এসব সমস্যার সমাধান দিতেই অর্থবছরের সাত মাসে (জুলাই-জানুয়ারি) ৯২০ কোটি বা ৯ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার বিক্রি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

এদিকে বৈদেশিক মুদ্রার মজুত থেকে ডলার সহায়তা দেওয়ার কারণে রপ্তানি আয় ও প্রবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্স বাড়ার পরও রিজার্ভ কমছে। বাংলাদেশ ব্যাংক রিজার্ভ থেকে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের কাছে ডলার বিক্রি করেছে। ফলে দিন শেষে রিজার্ভের পরিমাণ কমে ৩২ বিলিয়ন ডলারের ঘরে অবস্থান করছে।

অন্যদিকে ব্যাংক সংশ্লিষ্টরা বলছেন, রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রিতে নতুন রেকর্ড তৈরি হয়েছে। ২০২১-২২ অর্থবছরে রিজার্ভ থেকে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ৭৬২ কোটি বা ৭.৬২ বিলিয়ন ডলার বিক্রি করেছিল। তার আগের ২০২০-২১ অর্থবছরে ডলারের সরবরাহ বেড়ে যাওয়ায় বাজার থেকে উল্টো প্রায় ৮০০ কোটি বা ৮ বিলিয়ন ডলার কিনেছিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক। তবে রেমিটেন্স ব্যাংকিং চ্যানেলে আরও বাড়াতে হবে। পাশাপাশি রপ্তানিও বাড়াতে পারলে দেশের ডলার সংকট কমে আসবে। সদ্যবিদায়ী মাস জানুয়ারিতে ১৯৫ কোটি ৮৮ লাখ ডলারের রেমিট্যান্স এসেছে দেশে।

সংবাদ সম্মেলনে সদ্য শেষ হওয়া জানুয়ারি মাসের এলসির তথ্য বিষয়ে মুখপাত্র মেজবাউল হক বলেন, আসন্ন রমজানে পাঁচ পণ্যের চাহিদা বেশি থাকে। বাজার স্বাভাবিক রাখতে বাংলাদেশ ব্যাংক প্রয়োজন মতো এসব পণ্যের এলসি খুলতে সহায়তা করছে। 

তিনি বলেন, বিভিন্ন গগণমাধ্যমে এলসি না খুলতে পারার খবর এসেছে। আমরা মনে করছি পবিত্র রমজান মাসে চিনি, ভোজ্যতেল, খেজুর, পেঁয়াজ ও ছোলার কোনো ঘাটতি হবে না। গত বছরের প্রথম মাসে (জানুয়ারি) ৫ লাখ ১১ হাজার ৪৯২ মেট্রিক টন চিনির এলসি খোলা হয়েছিল। চলতি বছর একই মাসে চিনির এলসি খোলা হয়েছে ৫ লাখ ৬৫ হাজার ৯৪১ মেট্রিক টন। এ বছর জানুয়ারিতে ৩ লাখ ৯০ হাজার ৮৫৩ মেট্রিক টন তেলের এলসি খোলা হয়েছে, যা গত ২০২২ সালের জানুয়ারিতে খোলা হয়েছিল ৩ লাখ ৫২ হাজার ৯৫৯ মেট্রিক টন। চলতি বছর জানুয়ারিতে পেঁয়াজের এলসি খোলা হয়েছে ৪২ হাজার ৫৬২ মেট্টিক টন, যা গত বছর একই সময়ে এর পরিমাণ ছিল ৩৬ হাজার ২২৫ মেট্রিক টন।

এছাড়াও চলতি বছরের জানুয়ারিতে ছোলার এলসি খোলা হয়েছে ২ লাখ ২৪ হাজার ৫৬৬ মেট্রিক টন। গত বছরের একই সময়ে ছোলার এলসি খোলা হয়েছিল ২ লাখ ৬৫ হাজার ৫৯৬ মেট্রিক টন। চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে খেজুর আমদানিতে ২৯ হাজার ৪৮১ মেট্রিক টন এলসি খোলা হয়েছিল, যা গত বছরের জানুয়ারি মাসে খোলা হয়েছিল ১৬ হাজার ৪৯৮ মেট্রিক টন। আসন্ন রোজার আগেই আমাদের এসব পণ্য চলে আসবে। এজন্য কোনো নীতিসহায়তার প্রয়োজন হলে সেটাও দেওয়া হবে বলে জানান তিনি।

শিল্পের কাঁচামাল আমদানিতে সংকট দেখা দিচ্ছে বলে ব্যবসায়ীদের অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, শিল্পের কাঁচামাল আমদানিও হচ্ছে প্রয়োজনমতো। গত নভেম্বর থেকে ৫ বিলিয়ন ডলার করে রপ্তানি হচ্ছে। আমাদের রেমিটেন্স ও রপ্তানি মিলে ৪৪ বিলিয়ন আয় হয়েছে। আর এলসিতে আমদানির দায় পরিশোধ হয়েছে ৩৯ বিলিয়ন ডলার। আমাদের এক্সপোর্ট বা রপ্তানিতে মিসম্যাস আছে, যেটা ১৮০ দিনে আয় আসলে তখন সমন্বয় হয়।

ডলার সংকট প্রসঙ্গে তিনি বলেন, চলতি বছরের প্রথম সাত মাসে সংকট মোকাবিলায় ৯.২ বিলিয়ন বা ৯২০ কোটি ডলার রিজার্ভ থেকে বিক্রি করা হয়েছে। আমাদের ব্যবস্থাপনার নিজস্ব পদ্ধতিতে শুধু ডলার না স্থানীয় মুদ্রার বিষয়ও দেখা হয়েছে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ও কোভিড-১৯ এর কারণে একসময় তারল্য তৈরি হয়েছিল, সে সংকটও দূর হয়েছে। তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, শিগগিরই ডলার সংকট কেটে যাবে।  

এমএ/এসবি২

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়