আমিনুল জুয়েল: অস্থিতিশীল হয়ে উঠছে কাঁচা মরিচের বাজার। যেন লাফিয়ে লাফিয়ে দাম বাড়ছে পণ্যটির। এজন্য তরকারি বাজারে আরও একদফা ঝাঁজ বেড়েছে কাঁচা মরিচের। দশ দিনের ব্যবধানে কেজিপ্রতি মরিচের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে প্রায় ৭০-৮০ টাকা। প্রতিকেজি মরিচ কিনতে ক্রেতাকে গুণতে হবে ২০০ টাকা। পাইকাররা বলছেন, আমদানির প্রভাবে কিছুটা বেড়েছে মরিচের দাম। অতি খরা, অনাবৃষ্টি, গাছ শুকিয়ে যাওয়া ছাড়াও উৎপাদন কম হওয়ায় বাড়তি দামে কিনতে হচ্ছে পণ্যটি। তবে, এলসি মরিচ আসা শুরু করলে দাম কমার সম্ভবনা রয়েছে বলেও জানান অনেক ব্যবসায়ী।
মঙ্গলবার (৯ আগস্ট) সকালে বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার পাইকারি ও খুচরা বাজার ঘুরে দেখা গেছে, অস্বাভাবিকভাবে দাম বেড়েছে কাঁচা মরিচের। তবে, প্রচুর চাহিদা বেড়েছে পণ্যটির। আর চাহিদা অনুযায়ী আমদানী খুবই কম। কৃষকরা মরিচের বস্তা বা ব্যাগ হাটে রাখা মাত্রই ছোঁ মেরে নিয়ে যাচ্ছেন ক্রেতারা। নিমিষেই হাট খালি। দাম বেশি হওয়ায় মুহূর্তের মধ্যেই কাঁচা মরিচের হাট ফাঁকা হয়ে যায়।
আদমদীঘির খুচরা বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ২৫০ গ্রাম কাঁচা মরিচ কিনতে লাগছে ৫০ থেকে ৫৫ টাকা। সে হিসাবে কেজি প্রতি দাম পড়ছে ২০০ টাকা। আবার, কোথাও কোথাও ২২০ টাকাতেও বিক্রি হচ্ছে মরিচ। প্রয়োজনের তুলনায় বাজারে মরিচের পরিমাণ অনেক কম থাকায় বাধ্য হয়ে চড়া দামে কিনতে হচ্ছে ক্রেতাসাধারণের। মরিচের দাম বেড়ে যাওয়ায় হকচকিয়ে গেছেন ক্রেতারা।
পাইকারি বাজারের মরিচ ব্যবসায়ী সোহেল রানা জানান, ‘গত ১০ বছরের মধ্যে এবার মরিচের দাম সবচেয়ে বেশি। অন্যান্য বছরগুলোতে এসময় মরিচের দাম থাকতো ৬০ থেকে ৮০ টাকা কেজি। কিন্তু এবছর মরিচের দাম বৃদ্ধি পেয়ে ২০০ টাকা কেজিতে কিনতে হচ্ছে। এছাড়াও, ভারত থেকে মরিচ আমদানি না হওয়ায় আড়তগুলোতে বেশি দামে বিক্রি করছেন কৃষকরা। আমরা ব্যবসায়ীরা পাইকারি আড়তে বেশি দামে কিনতে বাধ্য হচ্ছি। এসব কাঁচামরিচ আমরা বিশেষ করে চট্টগ্রামসহ অন্যান্য জেলা শহরে পাঠাই।’
তিনি আরও বলেন, ‘গত কয়েক দিনের তীব্র গরম এবং হঠাৎ করে বৃষ্টিতে কাঁচা মরিচের ফুল নষ্ট হয়ে গেছে। এতে উৎপাদনও কমে গেছে। ফলে বাজারে সরবরাহ কম হওয়ায় বেড়েছে মরিচের দাম।’
হাকিম নামের এক ক্যাশিয়ার জানান, ‘আজকে প্রায় ২৪ টণ (২৫ হাজার কেজি) মরিচ কিনেছি। দাম পরেছে ১৯৫ টাকা। তবে, খুব সকালে ২০০-২০৫ টাকা কেজি দরেও মরিচ কেনা হয়েছে। বাজারে আমদানি কম। এজন্য পণ্যটির দাম বেশি। ’
জাভেদ, সেলিম, লোকমান ও লিটন নামের কয়েকজন মরিচচাষী জানান, ‘এবছর মরিচ চাষে লাভবান হয়েছি। দাম অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার ভালো রয়েছে। এক বিঘা জমিতে গড়ে এক লক্ষ টাকার মরিচ বিক্রি হয়েছে। কেজি প্রতি ২০০ টাকা দরে মরিচ বিক্রি করতে পারলে মরিচ চাষিদের লাভবান হবে।’
খুচরা বাজারে কাঁচামরিচ কিনতে আসা গৃহবধূ ডেইজি আক্তার বলেন, ‘প্রতিদিন নিত্য পণ্যের দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে। গত সপ্তাহে কাঁচা মরিচের কেজি ছিল ১০০ থেকে ১২০ টাকা। আজ কিনতে হচ্ছে ২০০ টাকা কেজি দরে। আমাদের মতো সাধারণ ক্রেতাদের জন্য খুবই কষ্টকর হয়ে পড়েছে। বাজার নিয়মিত মনিটরিং না হওয়ার কারণেই কিছু অসাধু ব্যবসায়ী ইচ্ছামতো দাম বাড়াচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।’ সম্পাদনা: হ্যাপী
আপনার মতামত লিখুন :