এম. মোশাররফ হোসাইন: সম্প্রতি চালু হওয়া পদ্মা সেতুতে ঘিরে ঢাকা, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের আওতাধীন দেশের দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে অবস্থিত ২১ জেলায় ১৭টি অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা)। ইতোমধ্যে কয়েকটি অর্থনৈতিক অঞ্চলের বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এরই মধ্যে বাগেরহাটের মোংলায় ২০৫ একর জমিতে মোংলা অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপন করা হয়েছে। এখানে তিনটি শিল্প নির্মাণে ইতিমধ্যে জমি বরাদ্দের চুক্তিও সম্পাদিত হয়েছে। এর পাশে প্রায় ১০৫ একর জমিতে স্থাপন করা হচ্ছে আরেকটি অর্থনৈতিক অঞ্চল। এ ছাড়া সুন্দরবন সংলগ্ন ১ হাজার ৫৪৬ একর জমি নিয়ে একটি ট্যুরিজম পার্ক স্থাপনেরও পরিকল্পনা রয়েছে।
কুষ্টিয়া জেলার ভেড়ামারা উপজেলায় ৩৮২ একর জমির ওপর নির্মিত হবে কুষ্টিয়া অর্থনৈতিক অঞ্চল। এটির সম্ভাব্যতা সমীক্ষার কাজ চলছে। ইতোমধ্যে পুরো ৩৮২ একর জমির মালিকানা গ্রহণ করেছে বেজা। এ ছাড়া ঢাকার নবাবগঞ্জে মাওয়ার কাছে প্রায় ৮০০ একর জমি নিয়ে অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনে ডিপিপি প্রস্তুত করা হয়েছে।
শরীয়তপুরের জাজিরায় ৫২৫ একর ও গোসাইরহাটে ৬৮৬ একর জমির উপর দুটি অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। ফরিদপুরের সদর উপজেলায় প্রায় ৮৮৮ একর জমি নিয়ে আরেকটি অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এ ছাড়া গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় প্রায় ২০০ একর জমিতে একটি অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনে সম্ভাব্যতা সমীক্ষার কাজ শেষ হয়েছে। খুলনার বটিয়াঘাটা উপজেলায় ২০৮ একর জমির ওপর একটি অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনে সম্ভাব্যতা সমীক্ষার কাজ হাতে নেওয়া হয়েছে।
এ ছাড়া খুলনার তেরখাদা উপজেলার ৫০৯ একর এবং মাদারীপুরের রাজৈরে ১ হাজার ১২৫ একর জমিতে দুটি অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনের নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এদিকে, মাগুরার শ্রীপুর এবং সাতক্ষীরার সদর উপজেলার অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনে সম্ভাব্যতা সমীক্ষার কাজ হাতে নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলায় অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনে সম্ভাব্যতা সমীক্ষার কাজ শেষ হয়েছে। হিজলা উপজেলায় ১ হাজার ৭২৯ একর জমি নিয়ে আরেকটি অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনের অনুমোদন রয়েছে। ভোলা সদরেও ইজেডের পরিকল্পনা রয়েছে।
বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা)’র নির্বাহী চেয়ারম্যান (সিনিয়র সচিব) শেখ ইউসুফ হারুন ‘আমাদের নতুন সময়’কে বলেন, বাগেরহাট জেলার মোংলা উপজেলায় বাস্তবায়নাধীন দুটি অর্থনৈতিক অঞ্চলে শিগগিরই শিল্প কার্যক্রম শুরু হবে। এ ছাড়া পর্যায়ক্রমে বাস্তবায়িত হবে গোপালগঞ্জ, খুলনা, মাদারীপুর, সাতক্ষীরা ও কুষ্টিয়া অর্থনৈতিক অঞ্চল।
তিনি বলেন, পদ্মা সেতু চালু হওয়ার মাধ্যমে পুরো দেশের সঙ্গে দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলোর যোগাযোগের নতুন দ্বার খুলে গেছে। এ সেতু সংযুক্ত হবে এশিয়ান হাইওয়ের সঙ্গেও। এর মাধ্যমে বিভিন্ন এলাকায় ব্যাপক শিল্পায়ন হবে। তুলনামূলকভাবে পিছিয়ে পড়া জেলাগুলোতে সুযোগ হবে নতুন কর্মসংস্থানের। সেই লক্ষ্যেই এগোচ্ছে বেজা। এসব উদ্যোগ বাস্তবায়িত হলে দেশে বিশেষ করে দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের পরিকল্পিত শিল্পায়ন আরও গতিশীল হবে।
আপনার মতামত লিখুন :