শিরোনাম

প্রকাশিত : ২৮ মার্চ, ২০২৩, ০১:৫০ দুপুর
আপডেট : ২৮ মার্চ, ২০২৩, ০১:৫২ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

রূপপুর প্রকল্পের

গাড়িচালক সম্রাট হোসেন হত্যার প্রধান আসামি গ্রেপ্তার

গ্রেপ্তারকৃত আব্দুল মমিন

রিয়াদ ইসলাম, ঈশ্বরদী (পাবনা): পরকীয়া প্রেমের সম্পর্কের কারণে ব্যক্তিগত প্রতিহিংসার বশবর্তী হয়ে রূপপুর প্রকল্পের গাড়িচালক সম্রাট হোসেনকে হত্যা করা হয়েছে। র‌্যাবের অভিযানে গ্রেপ্তার সম্রাট হত্যা মামলার প্রধান আসামি আব্দুল মমিন (৩২) প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে এমনই তথ্য জানিয়েছেন।

রোববার রাতে ঢাকার হাতিরঝিল থানার বাংলামোটর এলাকা থেকে মমিনকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব। গ্রেপ্তারকৃত মমিন পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার বাঁশেরবাদা মধ্যপাড়া (দোকানপাড়া) গ্রামের বাহাদুর খাঁর ছেলে। নিহত সম্রাট একই উপজেলার মধ্য অরনকোলা রিফুজি কলোনী এলাকার আবু বক্কার সিদ্দিকের ছেলে।

র‌্যাব-১২, সিরাজগঞ্জের অধিনায়ক অতিরিক্ত ডিআইজি মারুফ হোসেন পিপিএম জানান, হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় নিহতের বাবা বাদী হয়ে ঈশ্বরদী থানায় শনিবার রাতে হত্যা মামলা করেন। মামলায় সম্রাটের বন্ধু মমিনকে এক নাম্বার ও তার স্ত্রী সীমাকে দুই নাম্বার আসামিসহ আরও ৩ থেকে ৪ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে। হত্যাকাণ্ডের পর থেকেই আসামি মমিন আত্মগোপনে ছিলেন। পরবর্তীতে আধুনিক তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় র‌্যাব-১২, সিরাজগঞ্জের একটি দল, র‌্যাব-৩ এর সহযোগিতায় ঢাকার হাতিরঝিল থানার বাংলামোটর এলাকা থেকে মমিনকে গ্রেপ্তার করেন।

তিনি আরো জানান, গ্রেপ্তারকৃত আসামি মমিনকে সোমবার ঈশ্বরদী থানায় মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তার কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। পরবর্তী আইনগত প্রক্রিয়া তারা গ্রহণ করবে।

র‌্যাব জানায়, নিহত সম্রাট প্রায় তিন বছর ধরে রূপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের নিকিম কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইউরি ফেদারোপের গাড়িচালক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। সম্রাট প্রতিদিন রাত সাড়ে দশটার মধ্যে ডিউটি শেষ করে বাড়িতে যেতেন। কিন্তু গত বৃহস্পতিবার (২৩ মার্চ) সম্রাট ডিউটি শেষে বাড়িতে না ফিরলে পরিবারের লোকজন তার মোবাইলে ফোন দিলে মোবাইল ফোনটি বন্ধ পায়। 

পরদিন শুক্রবার নিকিম কোম্পানির অন্য চালকদের কাছে নিহতের বাবা সম্রাটের ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করলে তারা জানায়, সম্রাট বৃহস্পতিবার রাত ৮টায় ডিউটি শেষ করে অফিসের গাড়ি নিয়ে অফিস থেকে বেরিয়ে গেছেন। তখন বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুজির এক পর্যায়ে তারা জানতে পারেন সম্রাট অফিসের গাড়িসহ বাঁশেরবাদা মধ্যপাড়ায় তার পূর্ব পরিচিত বন্ধু আব্দুল মমিনের বাসায় গিয়েছিলেন। সেই সূত্র ধরে সম্রাটের পরিবারের লোকজন মমিনের বাসায় গিয়ে মমিনকে না পেয়ে তার স্ত্রী সীমা খাতুনের কাছে সম্রাটের ব্যাপারে জানাতে চাইলে তিনি উত্তেজিত হন এবং সম্রাটের পরিবারের লোকজনের সঙ্গে কথা বলা থেকে বিরত থাকেন।

খোঁজাখুজির এক পর্যায়ে শনিবার সকালে কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার আড়ুয়াবান্দা গ্রামের শিলাইদহ ঘাট নামকস্থান থেকে পুলিশ একটি সাদা জিপ গাড়িসহ চালক সম্রাটের বস্তাবন্দী মরদেহ উদ্ধার করেন। এর আগে শুক্রবার রাতে পুলিশ সম্রাটের বন্ধু আব্দুল মমিনের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে তার স্ত্রী সীমা খাতুনকে জিজ্ঞাসাবাদের
জন্য আটক করে।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সীমা জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার রাতে সম্রাট তাদের বাসায় গিয়ে তার মাথা ধরেছে বলে বিছানায় শুয়ে পড়ে। পরে মমিন ওষুধ আনতে বাইরে গেলে সম্রাট সীমার শরীরে হাত দেয়। তখন তিনি রাগে ও ক্ষোভে হাতুড়ি দিয়ে মাথায় ও গোপানাঙ্গে আঘাত করলে সম্রাট মারা যায়। পরে মমিন বাসায় ফিরলে মরদেহ বস্তায় ভরে গাড়িসহ শিলাইদহ ঘাটে রেখে পালিয়ে যায়।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ঈশ্বরদী থানার এসআই তহিদ হোসেন জানান, জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সীমা খাতুনকে রোববার দুপুরে আদালতে সোপর্দ করে পাঁচদিনের রিমান্ড আবেদন জানানো হয়। পাবনা আমলী আদালত-২ এর বিচারক শামসুজ্জামান দুইদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। সম্পাদনা: অনিক কর্মকার

প্রতিনিধি/একে

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়