শিরোনাম
◈ উন্নয়ন সহযোগীদের একক প্ল্যাটফর্মে আসা প্রয়োজন: পরিবেশমন্ত্রী ◈ জিয়াউর রহমানের সময়ই দেশে বিভেদের রাজনীতির গোড়াপত্তন হয়: ওবায়দুল কাদের  ◈ এলডিসি উত্তরণের পর সর্বোচ্চ সুবিধা পাওয়ার প্রস্তুতি নিতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ ◈ ড. ইউনূসকে নিয়ে শিক্ষামন্ত্রীর বক্তব্য দুঃখজনক: আইনজীবী  ◈ ত্রিশালে বাসের ধাক্কায় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রসহ অটোরিকশার ৩ যাত্রী নিহত ◈ জলদস্যুদের হাতে জিম্মি জাহাজ মুক্ত করার বিষয়ে  সরকার অনেক দূর এগিয়েছে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী  ◈ এসএসসি পরীক্ষায় আমূল পরিবর্তন, বদলে যেতে পারে পরীক্ষার নামও ◈ পঞ্চম দিনের মতো কর্মবিরতিতে ট্রেইনি ও ইন্টার্ন চিকিৎসকরা ◈ অর্থাভাবে পার্লামেন্ট নির্বাচনে লড়বেন না ভারতের অর্থমন্ত্রী ◈ কখন কাকে ধরে নিয়ে যায় কোনো নিশ্চয়তা নেই: ফখরুল

প্রকাশিত : ০২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩, ০৫:৫২ বিকাল
আপডেট : ০৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩, ০১:১৬ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

গ্রেপ্তার এড়াতে বাসা পরিবর্তন

মাদ্রাসায় শিক্ষকতার আড়ালে আত্মগোপনে ৭ বছর

আটক আব্দুল মজিদ

মাসুদ আলম: একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত আসামি আব্দুল মজিদকে গ্রেপ্তার  করেছে র‌্যাব-৩। বুধবার গভীর রাতে মাদারীপুর সদর এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। মজিদ ১৯৬৮ সাল থেকে জামায়াতে ইসলামের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত ছিলেন। ১৯৭০ সালে ঘোষিত কমিটিতে তিনি পূর্বধলা থানা জামায়াতে ইসলামের সাংগঠনিক সম্পাদক হন।

বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাব-৩ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, মজিদের বিরুদ্ধে ১৯৭১ সালে হত্যা, গণহত্যা, অপহরণ, নির্যাতন, লুণ্ঠন, অগ্নিসংযোগ ও ধর্ষণসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের সাতটি অভিযোগ আনা হয়। মজিদ আল-বদর বাহিনীর পূর্বধলা রামপুর থানা কমিটির প্রধান ছিলেন। 

তিনি আরও বলেন, পূর্বধলা রামপুর মৌদাম গ্রামে মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল খালেকসহ তার আপন দুই ভাই এবং পাঁচজন চাচাতো ভাই মিলে একই বাড়িতে সাত মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। তারা যুদ্ধে অংশগ্রহণের পাশাপাশি এলাকার বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে সহযোগিতা করেন। এজন্য আল-বদর কমিটির প্রধান আব্দুল মজিদের শত্রুতে পরিণত হয় তারা।

অধিনায়ক বলেন, ১৯৭১ সালে ২১ আগস্ট দুপুরে আব্দুল মজিদ তার দলবল নিয়ে বাড়হা গ্রামের আব্দুল খালেকের বাড়িতে আক্রমন করেন। সেসময় বাড়িতে অবস্থানরত আব্দুল খালেকসহ মুক্তিবাহিনীর সবাইকে এক এক করে আসামি ও তার সহযোগিরা নির্মমভাবে গুলি করে হত্যা করেন। হত্যার পর বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল খালেকের লাশটি পার্শ্ববর্তী কংস নদীতে ফেলে দেওয়া হয় এবং অপরাপর মুক্তিযোদ্ধাদের মরদেহ কোকখালী নদীতে বস্তাবন্দি করে ফেলে দেয়। এই হত্যাকাণ্ডের পাশাপাশি তারা আব্দুল খালেকের বাড়িতে লুটপাট চালায় এবং অগ্নিসংযোগ করে। এ ঘটনায় আব্দুল খালেকের ভাই আব্দুল কাদের বাড়ি থেকে পালিয়ে কোনও রকমে প্রাণ বাঁচায়।

তিনি আরও বলেন, ২০১৪ সালে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে আব্দুল মজিদসহ ৪ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন আব্দুল কাদের। পরবর্তী সময়ে মামলার গভীর তদন্তে আরও তিনজনের জড়িত থাকার প্রমাণ এবং আসামিদের বিরুদ্ধে আনীত সাতটি অভিযোগই প্রসিকিউশনের মাধ্যমে প্রমাণিত হলে ২০১৯ সালে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক সাত আসামির বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ডের রায় দেওয়া হয়। 

মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, বিচার চলাকালে দুজন আসামি আহম্মদ আলী ও আব্দুর রহমান মারা যায় এবং রায় হওয়ার পর পলাতক অবস্থায় মারা যায় আরও দুই আসামি রদ্দিন মিয়া ও আব্দুস সালাম বেগ। ওই মামলার আরও দুজন আসামি আব্দুল খালেক তালুকদার ও কবির খাঁ পলাতক রয়েছে। 

তিনি আরও বলেন, ২০১৫ সালে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান মামলার শুনানিতে হাজিরা না দেওয়ায় আব্দুল মজিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির পর এলাকা ছেড়ে ঢাকায় চলে আসেন এবং ফকিরাপুল এলাকায় কিছুদিন আত্মগোপন করেন। এরপর তার আত্মীয়ের সহযোগিতায় মাদারীপুরে গিয়ে আত্মগোপন করে একটি কামিল মাদ্রাসায় শিক্ষকতার মাধ্যমে পলাতক জীবন শুরু করেন। 

অধিনায়ক বলেন, গ্রেপ্তার এড়াতে তিনি নিয়মিত বাসা পরিবর্তন করতেন। এ সময় পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে তিনি অন্যের রেজিস্ট্রেশনকৃত সিমকার্ড দিয়ে মোবাইল ফোন ব্যবহার করতেন। তিনি এবং তার ছেলে-মেয়েরা আর্থিকভাবে স্বচ্ছল হওয়ায় প্রয়োজনীয় চাহিদা পূরণের জন্য তারা নিয়মিত তাকে অর্থ পাঠাতেন।

আত্মগোপনে থাকাকালে তিনি সাধারণত জনসমাগম স্থান, বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠান ছাড়াও তার ব্যক্তিগত পরিচয় প্রকাশ পায় এমন স্থান এড়িয়ে চলতেন।

এমএ/এনএইচ 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়