সোহাগ হাসান, সিরাজগঞ্জ: সিরাজগঞ্জে ভুট্টা বোঝাই ট্রাক ছিনতাই এবং চালক ও হেলপারকে খুনের ঘটনায় জড়িত দুই আসামীকে গ্রেপ্তার করেছে পিবিআই।
মঙ্গলবার গ্রেপ্তারকৃত আসামিরা নিজেদের দোষ স্বীকার আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। সাড়ে ৪ বছর আগে হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছে রংপুর জেলার ভুরারঘাট ফতেপুর গ্রামের ট্রাক চালক আল আমিন (২৪) ও হেলপার একই এলাকার সোহেল মিয়া (২৫)।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলো, রংপুর সদরের খলেয়া গ্রামের মালেক মিয়ার ছেলে আব্দুল কাদের ওরফে ড্রাইভার বাবু (২৭) ও একই জেলার হাজীর হাট উপজেলার উত্তম বাওয়াইপাড়ার নুর হোসেনের ছেলে হানিফ ইসলাম ওরফে শুকু (২৪)।
সিরাজগঞ্জ পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার রেজাউল করিম বুধবার সকালে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানান।
জানা যায়, ২০১৮ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর বিকেলে লালমনিরহাট জেলার পাটগ্রাম হতে ভুট্টা বোঝাই ট্রাক নিয়ে রংপুর শহরে আসে আল আমিন। রাত ৯টার দিকে তিনি ট্রাকটি নিয়ে নরসিংদির দিকে রওনা হয়। ট্রাকের মালিক রাত ১২টার দিকে তার নম্বরে ফোন দিলেও তা রিসিভ হয়নি। এ ঘটনায় ট্রাক ও ভুট্টার মালিকরা চিন্তায় পড়ে যান। এরপর তারা জানতে পারেন ট্রাকটি বঙ্গবন্ধু সেতুর পশ্চিম সংযোগ মহাসড়কের সিরাজগঞ্জের সয়দাবাদ এলাকায় মহাসড়কের পাশে থামানো অবস্থায় আছে। এরপর ২০১৮ সালের ১ অক্টোবর তারা ঘটনাস্থলে আসেন এবং বঙ্গবন্ধু সেতু থানা পুলিশের সহযোগিতায় ট্রাকের কেবিন থেকে চালক ও হেলপারের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
এ ঘটনায় নিহত আল আমিনের ছোট ভাই আনিছুর রহমান বাদী হয়ে বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম থানায় মামলা দায়ের করেন। ৪ অক্টোবর মামলাটি পিবিআইয়ের কাছে হস্তান্তর করা হয়। পিবিআইয়ের তৎকালীণ পরিদর্শক রওশন আলী মামলাটি তদন্ত শুরু করেন। কিছু দিনের ব্যবধানে তিনি মামলার সন্দেহভাজন আসামী রংপুর সদরের সরদারপাড়ার আনিছুর রহমানের ছেলে রফিকুল ইসলামকে (২৭) গ্রেপ্তার করেন।
এরপর পরিদর্শক রওশন আলী অন্যত্র বদলী হয়ে গেলে পিবিআইয়ের পরিদর্শক সোহেল রানা তদন্ত কর্মকর্তা নিযুক্ত হন। এ অবস্থায় মামলার প্রধান আসামী আব্দুল কাদের ওরফে বাবু ড্রাইভারকে ২০ জানুয়ারী রাতে ঢাকার দোহার এলাকায় পলাতক থাকা অবস্থায় গ্রেপ্তার করেন। এরপর তার দেয়া তথ্যমতে হানিফ ইসলাম ওরফে শুকরানকে রংপুর থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
২৩ জানুয়ারী গ্রেপ্তারদের সিরাজগঞ্জ আদালতে হাজির করা হলে তারা ঘটনার সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন। তারা বলেন চালক ও হেলপার তাদের পূর্ব পরিচিত। ট্রাক ও ভুট্টা ছিনতাইয়ের জন্যই তারা কৌশলে ট্রাকে উঠে পথিমধ্যে জুসের সাথে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে চালক ও হেলপারকে খাইয়ে দিয়ে হত্যা করেছিল। এরপর ট্রাকটি নিজেদের নিয়ন্ত্রনে নিয়ে সিরাজগঞ্জের হাটিকুমরুল মোড়ে তারা ট্রাকে থাকা ৩০ বস্তা ভুট্টা বিক্রি করেন তারা।
পরবর্তীতে ট্রাকের কেবিনে দুইজনের লাশ লুকিয়ে রেখে অবশিষ্ট ভুট্টাসহ ট্রাকটি বঙ্গবন্ধু সেতুর পশ্চিমপাড় সয়দাবাদ এলাকায় রেখে পালিয়ে যায়। গ্রেপ্তারকৃতরা বর্তমানে সিরাজগঞ্জ জেলা কারাগারে রয়েছে। সম্পাদনা: অনিক কর্মকার
প্রতিনিধি/একে/জেএ
আপনার মতামত লিখুন :