সুজন কৈরী: [২] মঙ্গলবার রাতে ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ ও ফরিদপুরের ভাঙ্গা এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করে র্যাব-১০। চক্রটি বিকাশ ও নগদে প্রতারণার মাধ্যমে শিক্ষা বৃত্তি, বয়স্ক ভাতা ও বিধবা ভাতা প্রদানের নামে লাখ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছে বলে জানিয়েছে র্যাব।
[৩] বুধবার দুপুরে কারওয়ান বাজারে র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে র্যাব-১০ এর অধিনায়ক অতিরিক্ত ডিআইজি মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন বলেন, কক্সবাজারের পেকুয়া থানায় বসবাসকারী ভুক্তভোগী ইসতাহাদ উদ্দিন সোহানের মোবাইল নম্বরে গত ২২ মার্চ ৩টা ৩৬ মিনিটে কল দিয়ে উপবৃত্তির টাকা পাঠানোর কথা বলে কৌশলে তার বিকাশের পিন নম্বর নিয়ে নেয় চক্রটি। পরে ৩৮ লাখ ২৫৮ টাকা তার অ্যাকাউন্ট থেকে সরিয়ে ফেলে। এ ঘটনায় তিনি কক্সবাজার জেলার পেকুয়া থানায় একটি জিডি করেন।
[৪] এছাড়া গত ২৪ মার্চ একই এলাকার জান্নাতুল ফেরদৌস নামের এক শিক্ষার্থীর কাছ থেকে চক্রটি ২০ হাজার ৪০০ টাকা ও চট্টগ্রামের বাঁশখালী থানা এলাকার লোকমান হোসেনের কাছ থেকে তার ছেলের নামে উপবৃত্তির কথা বলে ১৬ হাজার ৩০০ টাকা হাতিয়ে নেয়।
[৫] এসব অভিযোগের তদন্ত করে বুধবার রাতে র্যাব-১০ এর একটি দল গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জে অভিযান চালিয়ে চক্রের অন্যতম মূল হোতা ইসমাইল মাতুব্বর, তার ছোট ভাই ইব্রাহীম মাতুব্বর, সহযোগী মো. মানিক ওরফে মতিউর রহমান ও সিনবাদ হোসেনকে গ্রেপ্তার করে। তাদের কাছ থেকে ২২টি মোবাইল ফোন, ৩৫টি সিম কার্ড, ৫টি মোবাইলের চার্জার, ১টি ল্যাপটপ, ১টি ব্যাগ ও নগদ ৩০ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়েছে।
[৬] র্যাব কর্মকর্তা ফরিদ উদ্দিন বলেন, তদন্তে জানা যায়, অন্য আরেকটি প্রতারক চক্র গত ১৩ ফেব্রুয়ারি আব্দুল মমিন নামে একজন নতুন বিকাশ এজেন্টের কাছ থেকে প্রতারণার মাধ্যমে ৪২ হাজার ৭৭৭ টাকা হাতিয়ে নেয়। প্রতারক চক্রের বিরুদ্ধে ঢাকার ডেমরা থানায় একটি জিডি হয়। জিডির সূত্র ধরে বুধবার রাতে র্যাব-১০ এর দুটি পৃথক দল দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ ও ফরিদপুরের ভাঙ্গা এলাকায় অভিযান চালিয়ে মোবাইল ব্যাংকিং ব্যবসায় অধিক মুনাফার প্রলোভন দেখিয়ে এজেন্টদের কাছ থেকে বিপুল অর্থ আত্মসাৎকারী চক্রের অন্যতম মূল হোতা সুমন ইসলাম, মাহমুদুল হাসান পলক, সাব্বির খন্দকার, মো. সাকিব ও রাসেল তালুকদারকে গ্রেপ্তার করে। তাদের কাছ থেকে ১৪টি মোবাইল ফোন, ৯১টি সিম কার্ড, ১টি ব্যাগ, ১০৪ পিস ইয়াবা ও ৫২ হাজার ৫০০ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে।
[৭] র্যাব-১০ এর অধিনায়ক বলেন, গ্রেপ্তার ইসমাইল মাতুব্বরের নেতৃত্বে চক্রটি প্রায় দুই বছর ধরে সাধারণ মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করে অর্থ আত্মসাৎ করছিল। নিরিবিলি স্থান হিসেবে তারা দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ এলাকায় বেছে নেয় যাতে নির্বিঘ্নে প্রতারণার কার্যক্রম চালাতে পারে।
[৮] র্যাব জানায়, গত এক বছরে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে শতাধিক সাধারণ মানুষের কাছ থেকে বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা ও উপবৃত্তি প্রদানের প্রলোভন দেখিয়ে প্রায় ২০ থেকে ২৫ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছে তারা।
[৯] অন্যদিকে গ্রেপ্তার সুমনকে জিজ্ঞাসাবাদে প্রাপ্ত তথ্যের বরাতে অতিরিক্ত ডিআইজি মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন বলেন, সুমন ইসলামের নেতৃত্বে চক্রটি ২ বছরে দেশের বিভিন্ন এলাকার প্রায় ৬০-৭০ জন বিকাশ/নগদ এজেন্ট ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে প্রায় অর্ধ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে। সম্পাদনা: সমর চক্রবর্তী
আপনার মতামত লিখুন :