শিরোনাম
◈ ভুটানের রাজার সঙ্গে থিম্পু পৌঁছেছেন তথ্য প্রতিমন্ত্রী ◈ চট্টগ্রামের জুতার কারখানার আগুন নিয়ন্ত্রণে ◈ জিয়াও কখনো স্বাধীনতার ঘোষক দাবি করেনি, বিএনপি নেতারা যেভাবে করছে: ড. হাছান মাহমুদ ◈ আওয়ামী লীগ সবচেয়ে বড় ভারতীয় পণ্য: গয়েশ্বর ◈ সন্ত্রাসীদের ওপর ভর করে দেশ চালাচ্ছে সরকার: রিজভী ◈ ইফতার পার্টিতে আওয়ামী লীগের চরিত্রহনন করছে বিএনপি: কাদের ◈ বাংলাদেশে কারাবন্দী পোশাক শ্রমিকদের মুক্তির আহ্বান যুক্তরাষ্ট্রের ফ্যাশন লবি’র ◈ দক্ষিণ আফ্রিকায় সেতু থেকে তীর্থ যাত্রীবাহী বাস খাদে, নিহত ৪৫ ◈ ২২ এপ্রিল ঢাকায় আসছেন কাতারের আমির, ১০ চুক্তির সম্ভাবনা ◈ ইর্ন্টান চিকিৎসকদের দাবি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী’র সঙ্গে কথা বলেছি: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

প্রকাশিত : ১৯ মার্চ, ২০২৩, ০৯:০২ রাত
আপডেট : ১৯ মার্চ, ২০২৩, ০৯:০২ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

কিশোরগঞ্জের ৪ উপজেলাকে ভূমিহীন ও গৃহহীনমুক্ত ঘোষণা 

কিশোরগঞ্জ

ফারুকুজ্জামান, কিশোরগঞ্জ: কিশোরগঞ্জের চার উপজেলাকে আগামী ২২ মার্চ ভূমিহীন ও গৃহহীনমুক্ত ঘোষণা করা হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সিং এর মাধ্যমে এ ঘোষণা দেবেন। ভূমিহীন ও গৃহহীনমুক্ত ঘোষণার জন্য মোট ভূমিহীন পরিবারের সংখ্যা ৫৬০টি। এরমধ্যে কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলায় ১১২টি, ভৈরব উপজেলায় ১৬০টি, অষ্টগ্রাম উপজেলায় ১২২টি, পাকুন্দিয়া উপজেলায় ১৬৬টি।

কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি আরও জানান, কিশোরগঞ্জ জেলায় উদ্ধারকৃত খাস জমির পরিমান ৬২.২৯ একর, যার স্থানীয় বাজারমূল্য ৮৪ কোটি ৮২ লক্ষ ৭৫ হাজার টাকা। এছাড়া এ জেলায় ক্রয়কৃত জমির পরিমান ১১২.৮২ শতক, যার স্থানীয় বাজারমূল্য ১ কোটি ৩৯ লক্ষ ১৬ হাজার ৫০০ টাকা।

জেলা প্রশাসক জানান, বিশেষ এই প্রকল্পের উপকারভোগী বাছাই প্রক্রিয়া প্রকল্পের নীতিমালা অনুযায়ী অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে করা হয়েছে। এ জন্য উপজেলা ও ইউনিয়ন কমিটি কর্তৃক ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবার যাচাই বাছাইয়ের দিন মাইকিং করে ভূমিহীনদের জড়ো করা হয়। পরে উপস্থিত ভূমিহীনদের সঙ্গে সরাসরি কথা বলে প্রাথমিক বাছাই করা হয়।

প্রত্যেক উপজেলায় অধিকাংশ ক্ষেত্রে এ ঘরগুলো স্থানীয় গ্রোথসেন্টারের নিকটবর্তী স্থানে স্থাপন করা হয়েছে, যাতে ভূমিহীন ও গৃহহীন ব্যক্তিদের শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কর্মসংস্থানসহ সকল ক্ষেত্রের সুযোগ সুবিধা সহজলভ্য হয়। ইতোমধ্যে ঘরসমূহের বিদ্যুৎ ও খাবার পানীয়ের জন্য টিউবয়েল স্থাপনের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। গৃহনির্মাণের ক্ষেত্রে অনুমোদিত প্রাক্কলন ও ডিজাইন অনুযায়ী সর্বোচ্চ গুণগত মান বজায় রেখে
নির্মাণকাজ সম্পন্ন হয়েছে।

এক্ষেত্রে নীতিমালা অনুযায়ী অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে ভূমিহীন ও গৃহহীনমুক্ত ঘোষণার পূর্বপ্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে উল্লেখ করে জেলা প্রশাসক জানান, প্রধানমন্ত্রী কার্যালয় হতে গত বছরের ৩১ মার্চ জারীকৃত পরিপত্র অনুযায়ী ভূমিহীন ও গৃহহীন (ক- শ্রেণি) পরিবারের শতভাগ পুনর্বাসন যাচাই করা হয়েছে। এ লক্ষ্যে উপজেলা টাস্কফোর্স কমিটি তাদের সর্বশেষ হালনাগাদকৃত তালিকা শতভাগ পুনর্বাসন হয়েছে কিনা তা যাচাই করেছেন।

উপজেলা পর্যায়ে একটি যৌথসভায় উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান, পৌরসভার মেয়র, কাউন্সিলর, ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান, সদস্য, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, উপজেলার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ, সাংবাদিক, শিক্ষক প্রভৃতি ব্যক্তিবর্গকে আমন্ত্রণ জানিয়ে তাদেরকে নিয়ে ইউনিয়ন ভিত্তিক সর্বশেষ হালনাগাদকৃত তালিকা পূনর্বাসনের সার্বিক বিষয়টি পর্যালোচনা করেছেন। পরবর্তীতে প্রাপ্ত প্রস্তাব জেলা কমিটির টাস্কফোর্স কমিটির সভায় পর্যালোচনা করে ভূমিহীন ও গৃহহীনমুক্ত ঘোষণার জন্য প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠানো হয়।

জেলা প্রশাসকের কার্যালয় সূত্রে আরও জানা গেছে, এ জেলার সর্বমোট ২ হাজার ৭৫৮ টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারের মধ্যে এখন পর্যন্ত আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় কিশোরগঞ্জ জেলায় ১ম, ২য় ও ৩য় পর্যায়ে ১৯২০টি (৬১৬+৬৩১+৬৭৩) ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে পুনর্বাসন করা হয়েছে। এছাড়াও এই প্রকল্পের আওতায় ব্যারাক হাউস নির্মাণের মাধ্যমে ইটনা উপজেলার আড়ালিয়া ও মজলিশপুর আশ্রয়ণ প্রকল্পে মোট ২৭০টি পরিবারকে পুনর্বাসিত করা হয়েছে। পাঁচটি পরিবারকে অন্যান্য পুনর্বাসনের (উপজেলা পরিষদের অর্থায়নে) মাধ্যমে পুনর্বাসন করা হয়েছে।

বর্তমানে জেলায় ৪র্থ পর্যায়ে বরাদ্দপ্রাপ্ত ৫৬৩ টি ঘরের মধ্যে ২৯১ টি ঘরের নির্মাণকাজ সম্পন্ন হয়েছে এবং অবশিষ্ট ২৭২ টি ঘরের নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে। ৪র্থ পর্যায়ের ৫৬৩ টি ঘরের মধ্যে ২৯১ টি একক গৃহসহ মোট ৩২৬টি গৃহ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী ২২ মার্চ উদ্বোধন করবেন এবং একইদিন উপকারভোগীদের কাছে কবুলিয়ত দলিল, নামজারী এবং সনদ হস্তান্তর করা হবে।

উল্লেখ্য, ১৯৯৭ সালের ১৯ মে কক্সবাজার জেলাসহ পার্শ্ববর্তী এলাকা ঘূর্ণিঝড়ে আক্রান্ত হওয়ায় বহু পরিবার গৃহহীন হয়ে পড়ে। তদানীন্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঐ এলাকা পরিদর্শনে গিয়ে মানুষের দুঃখ দুর্দশা দেখে অত্যন্ত সহানুভূতিশীল হয়ে পড়েন এবং সকল গৃহহীন পরিবারকে পুনর্বাসনের তাৎক্ষণিক নির্দেশ দেন। তারই পরিপ্রেক্ষিতে ১৯৯৭ সালে “আশ্রয়ণ” নামে একটি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় “মুজিব শতবর্ষে

বাংলাদেশের একজন মানুষও গৃহহীন থাকবেনা” প্রধানমন্ত্রীর এ নির্দেশনা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে দেশের সকল ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে জমি ও গৃহ প্রদান কার্যক্রম চলমান রয়েছে। মার্চ/২৩ পর্যন্ত আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের অধীন বরাদ্দকৃত ঘরের সংখ্যা ২ লক্ষ ৩৭ হাজার ৮৩১টি। এরমধ্যে ২ লক্ষ ১৫ হাজার ৮২৫ টি গৃহের নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হয়েছে এবং এ পর্যায়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী ২২ মার্চ ভিডিও কনফারেন্সিং এর মাধ্যমে সারাদেশে একযোগে ৩৯ হাজার ৩৬৩ টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে ২ শতাংশ জমিসহ গৃহের কবুলিয়ত দলিল, নামজারি, গৃহ প্রদানের সনদ, ডিসিআর কপি ও ঘরের চাবি হস্তান্তর কাজের শুভ উদ্বোধন করবেন।

সারাদেশের ন্যায় কিশোরগঞ্জ জেলায়ও ভূমিহীন ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারদের সভাপতিত্বে গৃহহীন পরিবারকে জমি ও গৃহ প্রদানের লক্ষ্যে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির মাধ্যমে কর্মযজ্ঞ চলমান রয়েছে। কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ সার্বক্ষণিকভাবে সামগ্রিক কাজ তদারকি করছেন। 

ইতিপূর্বে কটিয়াদী উপজেলা ভূমিহীন ও গৃহহীনমুক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। 

প্রতিনিধি/জেএ

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়