শিরোনাম
◈ জিয়াউর রহমানের সময়ই দেশে বিভেদের রাজনীতির গোড়াপত্তন হয়: ওবায়দুল কাদের  ◈ এলডিসি উত্তরণের পর সর্বোচ্চ সুবিধা পাওয়ার প্রস্তুতি নিতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ ◈ ড. ইউনূসকে নিয়ে শিক্ষামন্ত্রীর বক্তব্য দুঃখজনক: আইনজীবী  ◈ ত্রিশালে বাসের ধাক্কায় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রসহ অটোরিকশার ৩ যাত্রী নিহত ◈ জলদস্যুদের হাতে জিম্মি জাহাজ মুক্ত করার বিষয়ে  সরকার অনেক দূর এগিয়েছে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী  ◈ এসএসসি পরীক্ষায় আমূল পরিবর্তন, বদলে যেতে পারে পরীক্ষার নামও ◈ পঞ্চম দিনের মতো কর্মবিরতিতে ট্রেইনি ও ইন্টার্ন চিকিৎসকরা ◈ অর্থাভাবে পার্লামেন্ট নির্বাচনে লড়বেন না ভারতের অর্থমন্ত্রী ◈ কখন কাকে ধরে নিয়ে যায় কোনো নিশ্চয়তা নেই: ফখরুল ◈ জনপ্রিয়তায় ট্রাম্পের কাছাকাছি বাইডেন

প্রকাশিত : ১৮ মার্চ, ২০২৩, ০৪:৩৭ দুপুর
আপডেট : ১৮ মার্চ, ২০২৩, ০৪:৩৭ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

ফরিদপুরে বিনা খরচে চাকরি পেলো ৭৩ পুলিশ

ফরিদপুরে বিনা খরচে ৭৩ জন পেলেন পুলিশের চাকরি

এস. এম আকাশ, ফরিদপুর: ফরিদপুরে পুলিশের ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল (টিআরসি) পদে চূড়ান্তভাবে নিয়োগ পাওয়া ৭৩ জনের অনলাইনে আবেদন ফি বাবদ নেওয়া ১২০ টাকা করে তা ফেরত দিয়েছেন পুলিশ সুপার (এসপি) মো. শাহজাহান।

শনিবার (১৮ মার্চ) দুপুরে ফরিদপুরের পুলিশ সুপার (এসপি) মো. শাহজাহান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। 

ফরিদপুরের পুলিশ সুপার মো. শাহজাহান জানান, পুলিশ হেডকোয়ার্টারের নির্দেশনায় ও ঢাকা রেঞ্জের তত্ত্বাবধানে শতভাগ স্বচ্ছভাবে আমরা ৭৩ জনকে নিয়োগ দিয়েছি। এরা প্রত্যেকেই নিজ যোগ্যতার চূড়ান্ত পরীক্ষা দিয়ে এ পর্যন্ত এসেছে। বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়তে ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে স্মার্ট সিটিজেন দরকার। তাই আমরা স্বচ্ছ নিয়োগ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে স্মার্ট ছেলে-মেয়েদের নিয়োগ দিয়েছি। এরা প্রত্যেকেই স্মার্ট পুলিশ হয়ে স্মাট বাংলাদেশ গড়তে ভূমিকা রাখবে বলে আশা করেন তিনি।


 
পুলিশ সুপার আরও বলেন, এ জেলায় চূড়ান্তভাবে নিয়োগ পাওয়া ৭৩ জন পুলিশ সদস্যদেরই অনলাইনে আবেদন ফি বাবদ নেওয়া ১২০ টাকা আমার ব্যক্তিগত ফান্ড থেকে ফেরত দিয়েছি। আমি চাই তারা বিনামূল্যে চাকরি পাক। তাদের যোগ্যতার মূল্যায়ন হোক। এসময় তিনি আরও বলেন, নিয়োগপ্রাপ্ত ৭৩ জনই সারাজীবন গর্বকরে বলতে পারবে তারা সম্পূর্ণ বিনা খরচে চাকরি পেয়েছে। 

এরআগে বুধবার (১৫ মার্চ) রাতে ফরিদপুর পুলিশ লাইন ড্রিল শেডে পুলিশ সুপার মো. শাহজাহান ট্রেইনি পুলিশ কনস্টেবল পদে নিয়োগ পরীক্ষার চূড়ান্ত ফল ঘোষণা করেন। এতে ৬২ জন পুরুষ এবং ১১ জন নারী প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তাদেরকে ফুল দিয়ে বরণ করে নেয় জেলা পুলিশ।

এসময় উপস্থিত ছিলেন- ফরিদপুরের পুলিশ সুপার ও ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল (টিআরসি) নিয়োগ বোর্ডের সভাপতি মো. শাহজাহান, পিপিএম-সেবা, নিয়োগ বোর্ডের সদস্য গোপালগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. সাখাওয়াত হোসেন, নিয়োগ বোর্ডের অপর সদস্য রাজবাড়ীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. ইফতেখারুজ্জামান।

এছাড়াও এসময় ফরিদপুর জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস্) শেখ মো. আব্দুল্লাহ বিন কালামসহ জেলা পুলিশের বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। ‘চাকরি নয়, সেবা’ এই স্লোগানে শতভাগ মেধা, যোগ্যতা ও স্বচ্ছতার মাধ্যমে এসব নিয়োগ হয়েছে। 

তাই কোনো প্রকার হয়রানি, সুপারিশ এবং ঘুষ ছাড়া পুলিশের গর্বিত সদস্য হতে পেরে খুশিতে আত্মহারা হতদরিদ্র এবং মধ্যবিত্ত পরিবারের এসব তরুণ-তরুণীরা।

এমন স্বচ্ছ নিয়োগ প্রক্রিয়ায় বিনামূল্যে চাকরি পেয়ে উচ্ছ্বসিত একজন বলেন, ‘বাবা দিনমুজুরের কাজ করে আমাদের তিন ভাইকে পড়ালেখা শিখিয়েছে। এখন তার বয়স হয়েছে, আগের মত কাজ করতে পারেন না। টিউশনি করিয়ে পড়ালেখা চালিয়ে নিচ্ছিলাম, কিন্তু পরিবারের হাল ধরার অবস্থা ছিলো না। আজকে আমি সরকারি চাকরি পেয়েছি, আমি মনে করছি আমার নড়বড়ে পরিবারের একটা খুঁটি মজবুত হলো। কখনো ভাবিনি ঘুষ ছাড়াই এমন সোনার হরিণ ধরা দেবে। ’ 

এসময় স্বচ্ছ নিয়োগ প্রক্রিয়ায় তার যোগ্যতার মূল্যায়ন করার জন্য পুলিশ সুপারসহ সংশ্লিষ্টদের ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান তিনি।

ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল (টিআরসি) পদে প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত হয়েছেন নাম প্রকাশ অনিচ্ছুক দরিদ্র বাবার এক মেয়ে। তিনি বিশ্বাসই করতে পারছিলেন না যে সে আজকে থেকে বাংলাদেশ পুলিশের গর্বিত সদস্য। আনন্দে আত্মহারা চাকরি পাওয়া ওই মেয়ে চোখের পানি ধরে রাখতে পারেননি। আবেগাপ্লুত হয়ে নিয়োগ বোর্ডে থাকা সকল অফিসারকে ধন্যবাদ জানান। এসময় তিনি বলেন, দেশের সেবায় কাজ করতে চাই।

এবিষয়ে ফরিদপুরের পাঁচ জেলার সাংবাদিকদের সংগঠন পদ্মা বিভাগীয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক এস.এম আকাশ জানান, আমাদের ফরিদপুর বাসীর ভাগ্যভালো যে কারনে আমরা সৎ, মানবিক, জনবান্ধব পুলিশ সুপার ও জেলা প্রশাসক স্যারকে পেয়েছি। তারা দুজনই অত্যান্ত ভালো মনের মানুষ।

উল্লেখ্য, ফরিদপুর জেলার ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল (টিআরসি) ৭৩ জনের শূন্য পদের বিপরীতে মোট ২৫০০ জন প্রার্থী অংশ নেন। সেখান থেকে প্রিলিমিনারি স্ক্রিনিং শেষে ১৮০০ জন প্রার্থী শারীরিক মাপ, শারীরিক সক্ষমতা যাচাই পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ পান। এখান থেকে বাদ পড়ে লিখিত পরীক্ষায় অংশ নেন ৭১৬ জন। তাদের মধ্যে লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন ১৬২ জন প্রার্থী। এদের মধ্যে মৌখিক পরীক্ষার মাধ্যমে চূড়ান্তভাবে ৭৩ জনকে মনোনীত করে নিয়োগ বোর্ড।

প্রতিনিধি/এসএ

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়