শিরোনাম
◈ ভুটানের রাজার সঙ্গে থিম্পু পৌঁছেছেন তথ্য প্রতিমন্ত্রী ◈ চট্টগ্রামের জুতার কারখানার আগুন নিয়ন্ত্রণে ◈ জিয়াও কখনো স্বাধীনতার ঘোষক দাবি করেনি, বিএনপি নেতারা যেভাবে করছে: ড. হাছান মাহমুদ ◈ আওয়ামী লীগ সবচেয়ে বড় ভারতীয় পণ্য: গয়েশ্বর ◈ সন্ত্রাসীদের ওপর ভর করে দেশ চালাচ্ছে সরকার: রিজভী ◈ ইফতার পার্টিতে আওয়ামী লীগের চরিত্রহনন করছে বিএনপি: কাদের ◈ বাংলাদেশে কারাবন্দী পোশাক শ্রমিকদের মুক্তির আহ্বান যুক্তরাষ্ট্রের ফ্যাশন লবি’র ◈ দক্ষিণ আফ্রিকায় সেতু থেকে তীর্থ যাত্রীবাহী বাস খাদে, নিহত ৪৫ ◈ ২২ এপ্রিল ঢাকায় আসছেন কাতারের আমির, ১০ চুক্তির সম্ভাবনা ◈ ইর্ন্টান চিকিৎসকদের দাবি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী’র সঙ্গে কথা বলেছি: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

প্রকাশিত : ০২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩, ০৬:২৫ বিকাল
আপডেট : ০২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩, ০৬:২৫ বিকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

শস্যভাণ্ডার গুমাই বিল রক্ষায় কঠোর অবস্থানে প্রশাসন 

গুমাই বিল

আশিক এলাহী, রাঙ্গুনিয়া: শস্যভান্ডার’ হিসেবে খ্যাত চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ার গুমাই বিলে দেশের আড়াই দিনের খাদ্য উৎপাদন হয়। দেশের অর্থনীতিতে গুমাই বিলের গুরুত্ব অপরিসীম। তবে সম্প্রীতি ক্রমেই ছোট হয়ে আসছে।

দেশের অন্যতম বৃহৎ এই বিলে ধানের জমির শ্রেণি পরিবর্তন করে ভরাট করে গড়ে তোলা হচ্ছে বসতবাড়িসহ বিভিন্ন স্থাপনা। অনেক জায়গায় গড়ে তোলা হয়েছে ফসল বিধ্বংসী ইটভাটা। এতে ক্রমেই ছোট হয়ে আসছে বিলের আকার। কমে আসছে ফসলি জমি। এই প্রবণতাকে রোধ করতে কঠোর অবস্থান নিয়েছে উপজেলা প্রশাসন।

সরেজমিনে শস্যভাণ্ডার রাঙ্গুনিয়ার গুমাইবিলে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আদেশক্রমে গুমাই বিলের বিভিন্ন স্থানে টাঙানো হয়েছে গনবিজ্ঞপ্তি আকারে সাইনবোর্ড। এতে বলা হয়েছে, গুমাইবিলে অবৈধ কোন স্থাপনা করতে দেওয়া হবে না। রাষ্ট্রীয় অধিগ্রহণ ও প্রজাস্বত্ত আইন ১৯৫০ এর ১০৭ (৩) ধারা এবং জাতীয় ভূমি ব্যবহার নীতির মাধ্যমে গুমাইবিল রক্ষার্থে কাজ করবে প্রশাসন।

রাঙ্গুনিয়া উপজেলার চন্দ্রঘোনা, মরিয়মনগর, হোসনাবাদ, স্বনির্ভর রাঙ্গুনিয়া, লালানগর ইউনিয়ন ও পৌরসভার ৭, ৮ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে গুমাই বিলের অবস্থান। গুমাই বিলের জমিতে প্রতি বছরই ইরি ও আমনের বাম্পার ফলন হয়।

গুমাই বিল রক্ষার্থে রাঙ্গুনিয়ার সচেতন নাগরিক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আন্দোলনের ঝড় তোলে। বিভিন্ন সময় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার মাধ্যমে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান এবং গুমাইবিলে ফসলি জমির টপ সয়েল কাটার দায়ে অর্থদণ্ড করেন প্রশাসন। 

সম্প্রতি জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জনাব নু-এমং মার্মা মং এর নেতৃত্বে গুমাই বিলে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালিত হয়েছে। গেল ২ মাসে দখলদারদের প্রায় ৩টি বসতঘরের নির্মাণ কাজ বন্ধ করেছে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আতাউল গনি ওসমানী।

গনবিজ্ঞপ্তি জারির বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. জামশেদুল আলম জানান, চট্টগ্রামের শস্যভাণ্ডার নামে খ্যাত গুমাইবিল রাঙ্গুনিয়ার সম্পদ। তাই গুমাইবিল রক্ষা করা সকলের দায়িত্ব। ভূমি ব্যবহার নীতিমালা ২০০১ এবং রাষ্ট্রীয় অধিগ্রহণ ও প্রজাস্বত্ত আইন ১৯৫০ অনুযায়ী শ্রেণি পরিবর্তন করতে জেলা প্রশাসকের পূর্বানুমোদন প্রয়োজন। যেহেতু গুমাই বিলের জমি নাল শ্রেণির তাই আইনত এ শ্রেণি অপরিবর্তনীয় রাখার বাধ্যবাধকতা আছে। ফসলের আবাদ বাড়াতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সুস্পষ্ট অনুশাসন রয়েছে। তাই সামগ্রিক দিক বিবেচনায় গুমাই বিল রাক্ষায় প্রশাসন কঠোর অবস্থানে রয়েছে বলে জানান এই কর্মকর্তা। 

জামশেদুল আলম আরও বলেন, প্রশাসনের এই কঠোর অবস্থানে সাধারণ কৃষক ও রাঙ্গুনিয়াবাসী সম্পৃক্ত হয়ে আন্দোলন হিসেব দেখতে চান। সমগ্র গুমাইবিলে শ্রেণি পরিবর্তন করে গুমাই বিলে কোন স্থাপনা না করতে গণবিজ্ঞপ্তি জারী করা হয়েছে। এবং মাইকিং করে তা সকলকে জানিয়ে সচেতনতা সৃষ্টির উদ্যোগ নিয়েছেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) জনাব মোহাম্মদ জামশেদুল আলম।

এদিকে রাঙ্গুনিয়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. জামশেদুল আলমের উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে গুমাইবিলের সাধারণ কৃষকেরা। সালেহ আহমেদ নামে গুমাইবিলের এক কৃষক বলেন, কুড়ি বছর ধরে গুমাইবিলে চাষাবাদ করে সংসার চালিয়ে যাচ্ছি। তবে ব্যবসায়ী ও শিল্পপতিরা এসে গুমাইবিলে বিভিন্ন দোকানপাট ও মাটি কেটে নিয়ে যাওয়াতে আমরা শঙ্কায় ছিলাম। 

তিনি আরও বলেন, গতকাল দেখেছি প্রশাসন অবৈধ স্থাপনা বন্ধে সাইনবোর্ড লাগিয়েছে। এতে আমরা কৃষকরা খুশি। এই বিল থেকে উৎপাদিত ধান বাংলাদেশের আড়াইদিনের খাদ্য চাহিদা পূরণ করে। গুমাইবিল বাঁচলে আমরা কৃষকরা বাঁচি।

প্রতিনিধি/জেএ

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়