শিরোনাম
◈ পাবনায় হিটস্ট্রোকে একজনের মৃত্যু ◈ জলাবদ্ধতা নিরসনে ৭ কোটি ডলার ঋণ দেবে এডিবি ◈ ক্ষমতা দখল করে আওয়ামী শাসকগোষ্ঠী আরও হিংস্র হয়ে উঠেছে: মির্জা ফখরুল ◈ বেনজীর আহমেদের চ্যালেঞ্জ: কেউ দুর্নীতি প্রমাণ করতে পারলে তাকে সব সম্পত্তি দিয়ে দেবো (ভিডিও) ◈ চুয়াডাঙ্গায় তাপমাত্রা ৪২ দশমিক ৩ ডিগ্রি, হিট স্ট্রোকে একজনের মৃত্যু ◈ আইনজীবীদের গাউন পরতে হবে না: সুপ্রিমকোর্ট ◈ তীব্র গরমে স্কুল-কলেজ ও মাদরাসা আরও ৭ দিন বন্ধ ঘোষণা ◈ সিরিয়ায় আইএসের হামলায় ২৮ সেনা নিহত ◈ সরকার চোরাবালির ওপর দাঁড়িয়ে, পতন অনিবার্য: রিজভী  ◈ সরকারের বিরুদ্ধে অবিরাম নালিশের রাজনীতি করছে বিএনপি: ওবায়দুল কাদের

প্রকাশিত : ০৩ অক্টোবর, ২০২২, ১১:১১ দুপুর
আপডেট : ০৩ অক্টোবর, ২০২২, ১১:১১ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

শেল্টারসেন্টার নির্মানে অনাগ্রহ চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের 

হারুনুর রশীদ, রাঙামাটি:  পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের বান্দরবান জেলার ১১টি পাড়াকেন্দ্রের অবকাঠামোকে ইউএসএআইডির অর্থায়নে বাস্তবায়িত মাল্টি পারপাস ডিজাষ্টার শেল্টার সাপোর্ট (এমপিডিএস) প্রকল্পের কার্যক্রমের আওতায় পরিকল্পনা করা হয়েছে। পার্বত্য এলাকার টেকসই সামাজিক সেবা প্রদান প্রকল্প(২য় সংশোধিত) প্রকল্পটি টেকসই মজবুত ও উন্নতভাবে পুনঃনির্মাণের জন্য গ্রাউস নামক বান্দরবানের একটি স্থানীয় এনজিও হতে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের নিকট গত ডিসেম্বরে প্রস্তাব প্রেরণ করা হয়েছিল।

তথ্য অনুসন্ধানে জানা গেছে, গ্রাউস বান্দরবান পার্বত্য জেলায় বিভিন্ন গ্রামীন উন্নয়ন কার্যক্রম বাস্তবায়নের পাশাপাশি বর্তমানে কেয়ার বাংলাদেশ ও সেইভ দ্যা চিলড্রেন এর পার্টনারশীপে বান্দরবান সদর, লামা, নাইক্ষ্যংছড়ির দুর্যোগ প্রবণ এলাকায় জনগণের নিরাপদ আশ্রয় ও বহুমুখী সামাজিক উন্নয়নে ব্যবহার জন্য মাল্টিপারপাস ডিজাষ্টার শেল্টার সার্পোট (এমপিডিএস) প্রকল্পবাস্তবায়ন করছে।

তাদের এই বহুমুখী ব্যবহারোপযোগী সামাজিক আশ্রয়কেন্দ্রে বর্তমানে বোর্ডের আওতাধীন পাড়াকেন্দ্রের কার্যক্রমও পরিচালনা করা যাবে বলে প্রস্তাবনায় বলা হয়েছিল। সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানাগেছে, এই অবকাঠামোগুলো দুর্যোগকালীন সময়ে এলাকায় আশ্রয়কেন্দ্ররূপে ব্যবহার এবং এলাকাবাসীকে মৌলিক সামাজিক পরিসেবা প্রদানের কাজে ব্যবহার ও পাশাপাশি একই অবকাঠামোয় পাড়াকেন্দ্রের শিশুদের জন্য নিরাপদ, উদ্দীপক এবং মানসম্পন্ন শিখন পরিবেশের সুব্যবস্থা থাকার বিষয়টি উল্লেখ ছিল।

প্রকল্পটি ইউএসএআইডি’র আর্থিক সহযোতিায় কেয়ার বাংলাদেশ, সেভ দ্যা চিলড্রেন ও গ্রাউস যৌথভাবে বাস্তবায়ন করছে। প্রকল্পের অধীনে শেল্টার নির্মাণের পাশপাশি দুর্যোগ প্রতিরোধে করণীয় বিষয়ে কমিউনিটির জন্য নানা সক্ষমতা বৃদ্ধিমূলক কার্যক্রমও রয়েছে।

 উক্ত প্রকল্পের আওতায় জেলা সদর, লামা, নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলায় ১১টি পাড়াকেন্দ্রকে (কমিউনিটি সেন্টার) বহুমুখী, ব্যবহার উপযোগী নিরাপদ দুর্যোগ আশ্রয়কেন্দ্র রূপে পুনঃনির্মাণের জন্য প্রাথমিক পর্যায়ে প্রস্তাব করা হয়েছিল। পাড়াকেন্দ্র সমুহ হচ্ছে: বান্দরবান সদর,জামাছড়ি, মনজয়পাড়া ২৫০ পরিবার,কুহালং ছাউপাড়া,ত্যুংক্ষং, হেডম্যানপাড়া ৫৭০ পরিবার, সুয়ালক হেডম্যানপাড়া ৩শ পরিবার,রোযাজা পাড়া,টংক্যবতী রামড়ি পাড়া, লতাঝিরি ২৩০ পরিবার,আজিজ নগর তেলনিয়াপাড়া, দক্ষিন বাইশারী পাড়া, নাইক্ষ্যংছড়ির সনাইছড়ি রেজু নতুন পাড়া ৬৪০ পরিবার।

জানা গেছে, বিভিন্ন সরকারী-বেসরকারী সংস্থা ও তাদের সেবা প্রদানমূলক কার্যক্রম বাস্তবায়নে বোর্ডের অধীন টেকসই সামাজিক সেবা প্রদান প্রকল্পের এই পাড়াকেন্দ্র নেটওর্য়াকের সুবিধা গ্রহণ করে থাকে।

প্রকল্পের আওতায় বর্তমানে ৪৮০০টি পাড়াকেন্দ্র রয়েছে। প্রকল্পটি একনেকে অনুমোদিত এবং প্রাক্কলতি ব্যয় ৪৭৪.৫০ কোটি টাকা। সরকার ৭৪ শতাংশ ও ইউনিসেফ কারগিরী সহায়তার পাশপাশি ২৬ শতাংশ ব্যয়ভার বহন করছে। প্রকল্পটি আগামী বছর জুনেই শেষ হতে চলেছে।

প্রকল্পটির বিস্তৃত নেটওর্য়াকের মাধ্যমে পার্বত্য এলাকারমানুষকে অত্যাবশকীয় মৌলিক সেবা প্রদান করা হয় যা অন্যকোন এজেন্সী বা সংস্থার মাধ্যমে মূলত কঠিন ব্যাপার এবং প্রায় অসম্ভব একারনে বিভিন্ন পর্যায়ে এটিকে স্থায়ীকরণের দাবী দীর্ঘদিনের।

জানাগেছে, ডিপিপিতে বর্ণিত পরিকল্পনা কমিশনের সুপারিশ অনুসারে প্রকল্প কার্যক্রমের স্থায়িত্ব বিধানে টেকসইকরণ সংক্রান্ত সুপারিশ বাস্তবায়ন করা না হলে বরাবরের মত অনিশ্চিয়তায় পড়বে, হাজারো পাড়াকর্মী, মাঠকর্মী, শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীর জীবন জীবিকা, ভেঙ্গে পড়বে সুপ্রতিষ্ঠিত পাড়াকেন্দ্রের নেটওয়ার্কভিত্তিক সামাজিক পরিসেবা প্রদান ব্যবস্থা।

সামজিক অগ্রগতির সূচকে আরো পিছিয়ে পড়বে পার্বত্য চট্টগ্রাম। অনিশ্চয়তায় পড়বে ৪টি আবাসিক স্কুল ও পাড়াকেন্দ্রের ছাত্র-ছাত্রীদের শিক্ষা কার্যক্রম আর বিশেষ করে দুর্গমঞ্চলে বসবাসকারী জনগোষ্ঠী বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বে মৌলিক সামাজিক সামাজিক সেবা প্রাপ্তির বিদ্যামান সুবিধা হতে।

বর্তমান ডিপিপিতে পরিকল্পনা কমিশন হতে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের অধীনে স্বতন্ত্র শাখা সৃজনের মাধ্যমে প্রকল্প কার্যক্রমসমুহ স্থায়ী ভাবে চালু রাখা, অত্যাবশকীয় সম্পদ ও জনবল রাজস্ব খাতে আনা ও উক্ত প্রক্রিয়া সম্পাদিত না হওয়া পর্যন্ত ৮৫ কোটি টাকা বার্ষিক থোক বরাদ্দের মাধ্যমে কার্যক্রম সমুহ চলমান রাখার সুপারিশ করা হয়েছে।

তবে বছর অতিক্রান্ত হলেও বোর্ড কর্তৃপক্ষ এখনো মন্ত্রণালয়ে কোন প্রস্তাব প্রেরণ করেনি বা কার্যকর উদ্যোগ গ্রহন করেনি। প্রকল্পের পাড়াকেন্দ্রগুলোর অধিকাংশই বর্তমানে দূর্বল কাঠামো নিয়ে চলমান আছে, শিশুদের শিখন সহ অন্যান্য কাজের জন্য যথেষ্ট উপযোগী নয়।

এইসব জরাজীর্ণ পাড়াকেন্দ্র আলাদা স্কিম গ্রহণের মাধ্যমে সংস্কারের জন্য মন্ত্রণালয় হতে গতবছর নির্দেশনা প্রদান করা হলেও বোর্ড তাতে মোটেই কর্ণপাত করেনি। এছাড়া স্বতন্ত্র ডিপিপির মাধ্যমে ১০০০ পাড়াকেন্দ্রের স্থায়ী অবকাঠামো নির্মাণের জন্য প্রায় তিনবছর আগে নেয়া বোর্ডের উদ্যেগ শীর্ষ নেতৃত্বে পরিবর্তনের সাথে সাথে এখন কার্যত হিমাগারে চলে গেছে।

অন্য দিকে টঝঅওউ এর অর্থে পাড়াকেন্দ্রেও স্থায়ী অবকাঠামো নির্মাণের সুযোগও বোর্ডের অনাগ্রহের কারণে হাতছাড়া হয়েছে। উল্লেখ্য গতবছর টঝঅওউ দেশের বিভিন্ন স্থানে সংস্কার/নববায়নকৃত ৬১টি স্থাপনা সরকারের নিকট হস্তান্তরও করেছিল।

জনবল রাজস্বখাতে স্থানান্তর ও বার্ষিক ৮৫ কোটি টাকা বরাদ্দের বিষয়ে বোর্ড কোন প্রস্তাব মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করেনি। এ বিষয়ে মন্ত্রণালয় তাগিদ দিলেও বোর্ড কোনগুরুত্ব দিচ্ছেনা বলেই জানা যায়।

একসময়ের সমন্বিত সমাজ উন্নয়ন প্রকল্পটিই বর্তমানে টেকসই সামাজিক সেবা প্রদান প্রকল্প নামে পরিচালিত হচ্ছে। অথচ সমন্বিত সমাজ উন্নয়নে এবং প্রকল্পের কার্যক্রমকে টেকসইকরণে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষের যেনো চরম অনিহা দেখা যাচ্ছে।

উল্লেখ্য পাড়া কেন্দ্রের আরো কিছু অনিয়ম দেখা গেছে, অনেক কর্মচারীর মোটর বাইক চুরি হলে তা বেতন থেকে কর্তন করা হয় । মোটরবাইক অফিসে চুরি হলে কতৃপক্ষ তার দায় দায়িত্ব বহন করে। কিন্ত কোথাও বেড়াইতে গেলে মোটর বাইক চুরি হলে সেই ব্যাপারে কর্তৃপক্ষ কোন ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়নি তেমনি পুনরায় জালানী তেলের ব্যয় ভার বহন করার চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে আসে।

রুপায়ন দেওয়ান নামে এক ব্যক্তিকে কাপ্তাই বদলী করে আবার রাঙামাটি সদরে নিয়ে আসে কতৃপক্ষ। পাড়াকেন্দ্রের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক প্রকল্পের একজন কর্মকর্তা প্রতিবেদককে এইসব বিষয়ে সত্যতা স্বীকার করে বলেন, উর্ধতন কর্মকর্তারা এই বিষয়ে আরো ভাল বলতে পারবেন।

প্রকল্প পরিচালক ইফতেখার আহম্মদ সরাসরি দুইজন সংবাদকর্মী কার্য্যলয়ে গিয়ে সাক্ষ্যৎ পাওয়া যায়নি, মুঠোফোনে কয়েকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও সংযোগ পায়নি । এএইছ

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়