সুবর্ণা হামিদ: সিলেটে হঠাৎ করে বেড়েছে চোখ ওঠা রোগ, চিকিৎসা বিজ্ঞারে ভাষায় যাকে বলা হয় কনজাংটিভাইটিস। শহর-গ্রাম সর্বত্রই দেখা গেছে এই ছোঁয়াচে রোগের প্রকোপ। গত কয়েকদিন ধরে চোখে ভাইরাসজনিত এই রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন শত শত মানুষ। ছোট বড় সব বয়েসিরা রয়েছেন আক্রান্তের তালিকায়। সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে আছেন বিদেশযাত্রীরা। কারণ চোখ ওঠা নিয়ে বিমানে যাতায়াত করতে দেয়া হয় না। অনেক ভোগান্তির পর যাতায়াত করতে হয় তাদেরকে। অনেকের বিমানের টিকেট পরিবর্তনও করতে হচ্ছে এই ভাইরাসের জন্য।
ইংল্যান্ড প্রবাসী কবির চৌধুরী বলেন, আমি দু'মাস আগে সপরিবারে বাংলাদেশে এসেছিলাম। গত ২৪ সেপ্টেম্বর আবার লন্ডন ফিরে যাওয়া কথা ছিলো কিন্তু আগের দিন থেকে আমি ও আমার পরিবারের সদস্যদের প্রায় সবার চোখ ওঠে। এই অবস্থায় আমরা বিমান বন্দর গেলে আমাদেরকে ফিরিয়ে দেওয়া হয় এবং বলা হয় ডাক্তারের অনুমতি পত্র নিয়ে আসতে।
এদিকে সারা দেশ জুড়ে চলছে মাধ্যমিক পরীক্ষা। সিলেটে অনেক শিক্ষার্থী এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন।
মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী আবু হাসান বলেন, আমি তিনটি পরীক্ষা ভালোভাবেই দিয়েছি কিন্তু এর পরে আর লেখা পড়া করতে পারছি না এই চোখ ওঠার জন্য। প্রথমে এক চোখে ছিলো পরে চোখই আক্রান্ত হয়েছে। আমার জীবনে এক সাথে দুই অভিজ্ঞতা, জীবনের প্রথম এসএসসি পরীক্ষা আর প্রথম এই চোখের আক্রান্ত হওয়া। আমার পরিবারের সবাই ও এই ভাইরাসে আক্রান্ত।
এ ব্যাপারে চক্ষু রোগ বিশেষজ্ঞ ডাক্তার জহিরুল ইসলাম বলেন, এটা এক ধরণের ভাইরাস। এই ভাইরাসের নাম হলো এডেনো ভাইরাস আর রোগের নাম হলো ভাইরাল কনজাংটিভাইটিস। এর লক্ষ্মণ হলো চোখ লাল হওয়া, পাতা ফোলা, পানি পড়া, ময়লা আসা, খচ খচ করা, অনেক সময় চুলকায় এবং ব্যথা করে। সাধারণত দুই চোখ একসাথে আক্রান্ত হয়। তবে এক চোখেও হয়। তবে এটা আপনা আপনি ৩-১৫ দিনের মধ্যে ভালো হয়ে যায়। চোখ বেশি ফুলে গেলে ঠাণ্ডা সেঁক দেওয়া যেতে পারে। ব্যথা হলে পেইনকিলার খাওয়া যেতে পারে। তবে কথায় কথায় এন্টিবায়োটিক ড্রপ ব্যবহার করা উচিত নয়। চোখ দিয়ে বেশি ময়লা বা কেতুর আসলে এন্টিবায়োটিক ড্রপ ব্যবহার করা যেতে পারে। এক্ষেত্রে মক্সিফ্লক্সাসিন বা টব্রামাইসিন ড্রপ দিনে ৪ বার ব্যবহার করা যেতে পারে। চোখের দৃষ্টি ক্ষতিগ্রস্ত হলে ও অতিরিক্ত ব্যথা হলে অবশ্যই দ্রুত চক্ষু বিশেষজ্ঞ দেখাতে হবে। সম্পাদনা: সালেহ্ বিপ্লব
আপনার মতামত লিখুন :