শিরোনাম
◈ চট্টগ্রামে জুতার কারখানায় আগুন, নিয়ন্ত্রণে ৮ ইউনিট ◈ জিয়াও কখনো স্বাধীনতার ঘোষক দাবি করেনি, বিএনপি নেতারা যেভাবে করছে: ড. হাছান মাহমুদ ◈ আওয়ামী লীগ সবচেয়ে বড় ভারতীয় পণ্য: গয়েশ্বর ◈ সন্ত্রাসীদের ওপর ভর করে দেশ চালাচ্ছে সরকার: রিজভী ◈ ইফতার পার্টিতে আওয়ামী লীগের চরিত্রহনন করছে বিএনপি: কাদের ◈ বাংলাদেশে কারাবন্দী পোশাক শ্রমিকদের মুক্তির আহ্বান যুক্তরাষ্ট্রের ফ্যাশন লবি’র ◈ দক্ষিণ আফ্রিকায় সেতু থেকে তীর্থ যাত্রীবাহী বাস খাদে, নিহত ৪৫ ◈ ২২ এপ্রিল ঢাকায় আসছেন কাতারের আমির, ১০ চুক্তির সম্ভাবনা ◈ ইর্ন্টান চিকিৎসকদের দাবি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী’র সঙ্গে কথা বলেছি: স্বাস্থ্যমন্ত্রী ◈ উন্নয়ন সহযোগীদের একক প্ল্যাটফর্মে আসা প্রয়োজন: পরিবেশমন্ত্রী

প্রকাশিত : ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০২২, ১২:২৫ দুপুর
আপডেট : ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০২২, ১২:৫৮ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

কালকিনিতে নদী ভাঙ্গনে নিঃস্ব পরিবার

এইচ এম মিলন, কালকিনি (মাদারীপুর) : একসময় ছিলো কয়েক বিঘা ফসলি জমি ও বসতভিটা। নদী ভাঙনে সেই সব কিছু হারিয়ে হতে হয়েছে নিঃস্ব। এরপর নদীর পাড়ের সরকারি জমিতে ছোট একটি টিনের ঘর তুলে কোন রকমভাবে বসবাস করছেন তিনি। এমন পরিস্থিতির মধ্যে আছেন মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার চর সাহেবরামপুর লঞ্চঘাট এলাকার ৮০ বছর বয়সী গিয়াসউদ্দিন সরদার।

দুপুরে বেলা নদীর পাড়ে বসে অপলক দৃষ্টিতে কি যেন দেখছিলেন তিনি। একটু এগিয়ে গিয়ে কথা হলো তার সাথে। কি দেখছিলেন তিনি? জানতে চাইলে বলেন, ওই যে নদীর ওপার দেখতেছেন না? ওই পাড়ে আমাগো বাড়িঘর সব আছিলো, এখন আর কিছুই নাই।

আমার এই জীবনে তিন বার আমাগো বাড়িঘর নদীর পেটে গেছে। জায়গা-জমি যা ছিলো, সব শ্যাষ। কতো যে না খাইয়া থাকছি হিসাব নাই। যাগো নদীতে সব লইয়া যায়, তাগো তো আর কোনো অস্তিত্ব থাহে না। গিয়াস উদ্দিনের মতো একই অবস্থা প্রতিবেশী বৃদ্ধ জয়নাল সরদারের।

একশ বছর বয়সে সাতবার নদী ভাঙনের শিকার হয়েছেন তিনি। এখন তার কিছুই নেই। সরকার থেকে পাননি কোনো আর্থিক সুবিধাও। তিনি বলেন, একবার হুনছি সরকার নাকি আমাগো একখান ঘর দিবো, কই তা–ও আহে না। না দিলো কোনো ঘর, না দিলো কোনো খাওন।

এক পোলায় বদলা দেয়, তাই দিয়া আমাগো সংসার টিক্কা আছে। জানা যায়, উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চল সাহেবরামপুর এলাকার পূর্ব সাহেবরামপুর লঞ্চঘাট ও নতুন আন্ডারচর গ্রামের উপর দিয়ে বয়ে গেছে আড়িয়াল খাঁ নদ। বছরের পর বছর আড়িয়াল খাঁর তান্ডবে বিলিন হয়ে গেছে হাজারো বাড়িঘর। এ বছর নতুন করে আড়িয়াল খাঁ নদের ভাঙনে নদী গর্ভে চলে গেছে প্রায় শতাধিক বসতঘর।

এছাড়াও একটি গ্রামীণ সড়কের ৫০০ মিটার অংশ নদের ভাঙনে বিলীন হয়ে গেছে। নতুন করে ভাঙনের আতঙ্কে রয়েছে লঞ্চঘাট এলাকার আরো শতাধিক পরিবার। এ ছাড়া নতুন আন্ডারচর এলাকার বঙ্গবন্ধু কলেজ, প্রাথমিক বিদ্যালয়, নবারুণ উচ্চবিদ্যালয়সহ বেশ কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানও ভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে।

ভাঙন ঠেকাতে মাদারীপুর পানি উন্নয়ন বোর্ড থেকে ৮০ মিটার অংশে ৪ হাজার ১০০ জিও ব্যাগ ফেলা হয়েছে। সম্প্রতি সরেজমিনে চর সাহেবরামপুর ও লঞ্চঘাট এলাকা ঘুরে দেখা যায়, আড়িয়াল খাঁ নদের পানি কমায় নদীর পাড়ের বেশ কয়েকটি জায়গায় ভাঙন দেখা দিয়েছে।

ভাঙনের ফলে লঞ্চঘাট থেকে চর সাহেবরামপুর যাওয়ার একমাত্র সড়কটির প্রায় ৫০০ মিটার অংশ নদের গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। সড়কের অপর পাশেই রয়েছে বেশকিছু বসতঘর, ফসলি জমি, স্থাপনাসহ একটি বাজার। অনেকে বসতবাড়ি ভেঙ্গে নিয়ে অন্যস্থানে আশ্রয় নিয়েছে।

এদিকে ভাঙন রোধে নদীর পাড়ের ভাঙন কবলিত কয়েকটি জায়গায় জিও ব্যাগ ফেলা হয়েছে৷ এ বিষয়ে জানতে চাইলে মাদারীপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ বিভাগীয় প্রকৌশলী এ, বি, এম মাহবুবুল আলম খন্দকার বলেন, কালকিনি সাহেবরামপুর আড়িয়াল খাঁ নদী এলাকায় আমরা পানি উন্নয়ন বোর্ড থেকে ভাঙন কবলিত এলাকায় জরুরিভাবে ৮০ মিটার জায়গায় ৩০ লক্ষ টাকা ব্যয়ে জিও ব্যাগ নিক্ষেপ করেছি। আপাতত সেখানে ভাঙন নেই। 

এ ব্যাপারে কালকিনি উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পিংকি সাহা বলেন, লঞ্চঘাট এলাকায় ভাঙন কবলিত ৫৯ জনের তালিকা করে পাঠানো হয়েছে। শিগগিরই তাঁদের সহযোগিতা করা হবে। এ ছাড়া চলতি অর্থবছরে পুরো ইউনিয়নে ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত ১৩৮ ব্যক্তিকে নগদ সহায়তা দেওয়া হয়েছে। সম্পাদনা: আল আমিন 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়