ঈশ্বরদী (পাবনা) থেকে: পাবনার ঈশ্বরদীতে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষের সময় অস্ত্র হাতে দেখা যাওয়া ছাত্রশিবিরের কর্মী তুষার হোসেন (২১) গ্রেপ্তার হয়েছেন।
সোমবার গভীর রাতে সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার ধানবান্ধি এলাকার জে.সি. রোডের মতিন সাহেবের ঘাট সংলগ্ন এলাকা থেকে জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ তাকে আটক করে।
ডিবি সূত্রে জানা গেছে, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তুষারের অবস্থান শনাক্ত করা হয়। একটি বিশেষ টিম অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করে। তুষার ঈশ্বরদী পৌর শহরের ভেলুপাড়া মহল্লার তাহের হোসেনের ছেলে। গ্রেপ্তারের পর জিজ্ঞাসাবাদে তুষার স্বীকার করেন, তার হেফাজতে একটি অবৈধ পিস্তল ও দুই রাউন্ড কার্তুজ ছিল।পুলিশ তার দেখানো স্থানে ভেলুপাড়ায় মাটি খুঁড়ে পলিথিনে মোড়ানো অবস্থায় পিস্তল ও কার্তুজ উদ্ধার করে।
পুলিশ জানিয়েছে, অস্ত্র হাতে থাকা যুবক জামায়াতের কর্মী। ৩০ নভেম্বর ঈশ্বরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আ. স. ম. আব্দুর নূর এ তথ্য নিশ্চিত করেছিলেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ছবির মাধ্যমে তুষারের পরিচয় শনাক্ত করা হয়।
স্থানীয় সূত্র বলেছে, তুষার পাবনা জেলা জামায়াতের আমির ও পাবনা-৪ আসনের জামায়াত মনোনীত প্রার্থী অধ্যাপক আবু তালেব মণ্ডলের ভাতিজা মামুন মণ্ডলের ঘনিষ্ঠ সহযোগী হিসেবে পরিচিত।
জানা গেছে, ঘটনার পর পাল্টাপাল্টি মামলা হয়। গত্ শনিবার রাতে পুলিশ অভিযান চালিয়ে জামায়াতের দুই ও বিএনপির তিনজন কর্মীকে গ্রেপ্তার করে। রোববার আদালতের মাধ্যমে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়। বিএনপির মামলায় পাবনা-৪ আসনে জামায়াত মনোনীত প্রার্থী ও জেলা আমির আবু তালেব মণ্ডলকে প্রধান আসামি করা হয়েছে। অন্যদিকে জামায়াতের মামলায় স্থানীয় সাহাপুর ইউনিয়ন কৃষক দলের আহ্বায়ক মক্কেল মৃধাকে প্রধান আসামি করা হয়েছে।
সর্বশেষ সংঘর্ষ সংক্রান্ত মামলায় বিএনপির সহযোগী সংগঠন স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা বাঁধন হাসান আলিমের করা মামলায় পাবনা-৪ আসনের জামায়াত মনোনীত প্রার্থী ও জেলা আমিরসহ ৩১ নেতাকর্মীর জামিন মঞ্জুর করেছে আদালত। সোমবার পাবনা চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের ভারপ্রাপ্ত বিচারক তরিকুল ইসলাম তাদের জামিন অনুমোদন করেন। পাবনা জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাশিদুল ইসলাম বলেন, সংঘর্ষের পর থেকে তুষার পলাতক ছিলেন। সোমবার রাতে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তার হেফাজত থেকে দুই রাউন্ড গুলি ও সংঘর্ষে ব্যবহৃত আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। আইনি প্রক্রিয়া শেষে তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
ঘটনার দিন বৃহস্পতিবার বিকেলে জামায়াতের প্রার্থী আবু তালেব মণ্ডল ওই এলাকায় গণসংযোগে যান। এ সময় দুই পক্ষের মধ্যে কথাকাটাকাটির এক পর্যায়ে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। কিছু গুলি ছোড়া হয় এবং কয়েকটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর হয়। এতে অন্তত ২৫ জন আহত হন। স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন।