সনত চক্রবর্ত্তী, ফরিদপুর: ইলিশের ভরা মৌসুম চলছে, অথচ ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলার পদ্মা নদীতে মিলছে না কাঙ্ক্ষিত ইলিশ। প্রতিদিন জাল ফেলেও জেলেরা ফিরছেন প্রায় খালি হাতে। যে সামান্য মাছ ধরা পড়ছে, তার বেশিরভাগই আকারে ছোট। বড় ইলিশের সংকটের কারণে বাজারে দাম ছুঁয়েছে আকাশ, যা সাধারণ ক্রেতার নাগালের বাইরে।
মাছ নেই, জেলেদের হতাশা
উপজেলার দিয়ারা নারিকেলবাড়িয়া, ঢেউখালী, আকোটের চর ও চর নাসিরপুর ইউনিয়নে প্রায় সাত হাজার মানুষ ইলিশ শিকারে জীবিকা নির্বাহ করেন। এর মধ্যে কার্ডধারী জেলের সংখ্যা প্রায় ৬৫০ জন।
জেলে জাহিদ শেখ জানান, “কয়েকদিন ধরে নদীতে যাচ্ছি, কিন্তু জাল খালি নিয়েই ফিরতে হচ্ছে। যে কয়টা মাছ পাই তা বিক্রি করে তেলের খরচও ওঠে না।”
আরেক জেলে আবুল ফরাজি বলেন, “আমাদের মূল পেশাই মাছ ধরা। কিন্তু এখন নদীতে ইলিশ নেই, দু-একটা পেলেও ছোট। পরিবার নিয়ে টিকে থাকা কঠিন হয়ে পড়ছে।”
বাজারে অস্বাভাবিক দাম
ইলিশ ব্যবসায়ী জয়নাল মোল্যা জানান, “১০-১২ বছর আগে প্রচুর ইলিশ পাওয়া যেত, দামও ছিল হাতের নাগালে। এখন সংকট তীব্র। এক কেজি ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৩-৪ হাজার টাকায়, ছোটগুলোর দামও হাজার টাকার নিচে নয়।”
সদর বাজারে ইলিশ কিনতে আসা ক্রেতা আমান বলেন, “মেহমান আসায় মাছ কিনতে এসেছিলাম। কিন্তু দাম অস্বাভাবিক বেশি, আকারও ছোট। কষ্ট করে একটা ডালা ছোট মাছ কিনলাম।”
পানির প্রভাবে ইলিশের আনাগোনা
সদরপুর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. মেহেদী হাসান জানান, নদীর পানির প্রবাহের সঙ্গে ইলিশের চলাচলের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। সম্প্রতি পদ্মায় পানি বৃদ্ধির কারণে ইলিশের উপস্থিতি কম, তবে মেঘনায় প্রচুর মাছ ধরা পড়ছে। “পানি কমতে শুরু করলে পদ্মাতেও ইলিশের যোগান বাড়বে বলে আশা করা যায়,” তিনি বলেন।