শিরোনাম
◈ সরকারি দপ্তরগুলোতে গাড়ি কেনা ও বিদেশ সফরে কড়াকড়ি: কৃচ্ছ্রনীতির অংশ হিসেবে অর্থ মন্ত্রণালয়ের নতুন নির্দেশনা ◈ ২১ বছর বয়স হলেই স্টার্ট-আপ লোনের সুযোগ, সুদ মাত্র ৪%: বাংলাদেশ ব্যাংকের নতুন নির্দেশনা ◈ ঢাকায় একটি চায়না টাউন প্রতিষ্ঠা করা যেতে পারে: আশিক চৌধুরী ◈ তিন বোর্ডে বৃহস্পতিবারের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা স্থগিত ◈ এসএসসির ফল নিয়ে যে বার্তা দিলেন শিক্ষা উপদেষ্টা ◈ সৈক‌তের কা‌ছে দু:খ প্রকাশ ক‌রে‌ছেন ‌বি‌সি‌বির প্রধান নির্বাচক  ◈ ভারত সরকারকে আম উপহার পাঠাল বাংলাদেশ ◈ পুলিশের ঊর্ধ্বতন ১৬ কর্মকর্তা বদলি ◈ কল রেকর্ড ট্রেলার মাত্র, অনেক কিছু এখনো বাকি, অপেক্ষায় থাকুন: তাজুল ইসলাম ◈ জাতীয় নির্বাচনের সব প্রস্তুতি ডিসেম্বরের মধ্যে সম্পন্ন করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা : প্রেস সচিব

প্রকাশিত : ০১ নভেম্বর, ২০২৪, ০৬:৪২ বিকাল
আপডেট : ১০ মে, ২০২৫, ০৪:০০ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

ফরিদপুরে ঐতিহ্যবাহী পলোবাইচে হাজারো মানুষের ঢল

সনত চক্র বর্ত্তী,ফরিদপুর : ফরিদপুরে আবহমান গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী উৎসব হচ্ছে পলো বাওয়া উৎসব। একসময় এলাকাজুড়ে আশ্বিন-কার্তিক মাসে বর্ষা শেষে শীতকে উপেক্ষা করে বাঁশের তৈরি পলো দিয়ে খাল-বিলে সারিবদ্ধভাবে মাছ শিকার করতে দেখা যেত। এখন আর সেই ঐতিহ্য নাই বললেই চলে। কালের বিবর্তনে হারিয়ে যেতে বসেছে এই পলো বাওয়া উৎসব।

ফরিদপুর সদরের অম্বিকাপুর ইউনিয়নের আদমপুর বিলে প্রায় বিলুপ্তির পথে এই গ্রামীণ ‘পলো উৎসব’ পালন করতে দেখা গেছে।  শুক্রবার ভোরবেলা থেকে কয়েক হাজার এলাকাবাসী পলো উৎসবে মাছ শিকারে অংশ নেন। 

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ফরিদপুর সদর উপজেলার অম্বিকাপুর ইউনিয়নের আদমপুর বিলে ফজরের নামাজ শেষ হতেই হৈ হৈ করে একসঙ্গে পলো-জাল হাতে মাছ শিকারে নেমে পড়েন হাজারো মানুষ।

ঝপ ঝপ, চপ চপ শব্দের তালে তালে চলতে থাকে পলো বাওয়া। কয়েক ঘণ্টাব্যাপী এ ‘পলো বাওয়া উৎসবে’ আশপাশের গ্রামের বিভিন্ন বয়সের লোকজন; শিশু থেকে বৃদ্ধ যে যার মতো উৎসবে মেতে ওঠেন। বিলের মধ্যে নানা বয়সের মানুষ মাছ ধরতে নামলে তাদের মাছ ধরা দেখতে পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন গ্রামের নারীরাও। কেউ আবার জাল থেকে মাছ ধরে বাড়িতে নিয়ে যাচ্ছেন।নানা প্রজাতির মাছ ধরে হাসিমুখে ফিরতে দেখা যায় শৌখিন মাছ শিকারিদের।'

স্থানীয়রা জানান, ‘একসময় পলো দিয়ে মাছ শিকারের অপরূপ দৃশ্য দেখে মুগ্ধ হতো গ্রামের ছোট-বড় সব বয়সি মানুষ। কমবেশি প্রায় সবাই বিভিন্ন প্রজাতির মাছ শিকার করে নিয়ে যেত। আর সেই মাছ দিয়ে পরিবারের সবাই আনন্দের সঙ্গে রান্না করে খেত। কিন্তু সেই বাংলার ঐহিত্য আজ হারিয়ে যেতে বসেছে।

এখন তেমন খাল-বিলে পানি থাকতে দেখা যায় না। যতটুকু আছে, সেখানে অসাধু মাছ শিকারিরা চায়না দুয়ারি, কারেন্ট জালের ফাঁদ পেতে ছোট মাছগুলো মেরে দেশীয় মাছের বংশবিস্তারে বাধা সৃষ্টি করছে। তবে এবার মাছ ধরার সেই ঐতিহ্যে ফিরে যাওয়ার চেষ্টায় ফরিদপুর সদরের অম্বিকাপুর ইউনিয়নের আদমপুর বিলে পলো দিয়ে মাছ শিকার উৎসবের আয়োজন করা হয়।’ 

এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ‘পূর্ব থেকেই নির্ধারিত ছিল শুক্রবার (১ নভেম্বর) সকাল ৮টায় আদমপুর বিলে পলো দিয়ে মাছ শিকার করা হবে। এ সংবাদে কয়েকটি গ্রাম থেকে শৌখিন মাছ শিকারিরা ভোর থেকে জড়ো হন বিলপাড়ে। ‘উন্মুক্ত জলাশয়ে ভেসাল, কারেন্ট জাল ও চায়না দুয়ারি চাই না’ স্লোগানে এ উৎসব দেখতে জড়ো হয় আশপাশের গ্রামের নানা বয়সি মানুষ।’

মাছ শিকারি ও উৎসুক একাধিক ব্যক্তি জানান, ‘যান্ত্রিক যুগে আমরা ভুলেই গিয়েছিলাম পলো দিয়ে মাছ ধরার গল্প। আজ এই উৎসবের মধ্য দিয়ে শৈশব ফিরে পেলাম।’

আয়োজকরা জানান, ‘স্থানীয় প্রশাসনের আন্তরিকতা থাকলে উন্মুক্ত জলাশয়ে কারেন্ট জাল বা চায়না দুয়ারি দিয়ে দেশীয় মাছের বংশক্রম ধ্বংস করতে পারত না। প্রশাসনের আন্তরিকতা না বাড়ালে একসময় দেশীয় মাছ চায়না জাল, কারেন্ট জালের বুকে বিলীন হয়ে যাবে। হারিয়ে যাবে গ্রামীণ ঐতিহ্য পলো দিয়ে মাছ শিকারের মতো নানা উৎসবও।’

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়