অপূর্ব চৌধুরী: কোনো রকমে টিকে আছে পুরান ঢাকার ঐতিহ্যবাহী ঘোড়ার গাড়ি। নানাবিধ সংকট আর পরিবর্তনে জৌলুস হারিয়েছে এই টমটম।
একসময় টমটম গাড়িতে প্রচুর লোকজন যাতায়াত করতো, গাড়িও ছিল অনেক। এখন যান্ত্রিক বাহনের যুগ। রাস্তায় তীব্র যানজট থাকে। আর ঘোড়া রক্ষণাবেক্ষণের খরচও মাত্রাতিরিক্ত। আয়ের তুলনায় খরচ বেশি। এসব কারণে টমটম গাড়ি বাজার হারিয়েছে। এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অধিকাংশ মানুষ অন্যান্য পেশায় যাচ্ছেন জীবিকা নির্বাহের তাগিদে।
তবে পারিবারিক ঐতিহ্যের কারণে এখনো অনেকে ধরে রেখেছেন টমটম গাড়ি, অনেকটা কষ্ট করেই জীবিকা নির্বাহ করছেন।
সদরঘাট-গুলিস্তান রোডে আগে শতাধিক ঘোড়ার গাড়ি চলত। করোনার পর সেই সংখ্যা নেমে আসে ২৫-৩০টিতে। ধীরে ধীরে আরো কমছে।
আগে প্রতিদিন ঘোড়ার রক্ষণাবেক্ষণে ৫০০-৬০০ টাকা খরচ হতো। এখন খরচ হয় ১০০০-১২০০ টাকা। গাড়ির কোচোয়ান ও হেল্পাররা জানান, প্রতিদিন মালিকের জমার টাকা উঠাতেই হিমশিম খেতে হয়। এই অবস্থা চলতে থাকায় অনেকেই বাধ্য হয়ে এই পেশা থেকে সরে গিয়েছেন।
যারা এখনো ঘোড়ার গাড়ি চালাচ্ছেন, তাদের শংকা; অচিরেই ঘোড়ার গাড়ির প্রচলন একেবারে বন্ধ হয়ে যাবে। এই সংস্কৃতি টিকিয়ে রাখতে ঘোড়ার পরিচর্যা খরচ কমানোর পাশাপাশি বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি তাদের।
সরেজমিন দেখা যায়, বাংলাবাজার ফুটওভার ব্রিজের নিচ থেকে গুলিস্তান যাবার জন্য যাত্রীদের ডাকছেন কোচোয়ান ও হেল্পাররা। তবে দীর্ঘক্ষণ হাঁকডাকের পরও যাত্রীদের তেমন সাড়া পাওয়া যায় না।
সদরঘাট-গুলিস্তান রুটের ভাড়া ৩৫টাকা। প্রতিটি ঘোড়ার গাড়িতে ১৫টি আসন থাকলেও ৫-৬ জন হলেই গুলিস্তানের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায় গাড়িগুলো। কিন্তু ৫-৬ জন যাত্রী পেতেও অনেক সময় লাগে, সামনের দিনগুলো নিয়ে তাই শংকা এই পেশায় জড়িতদের। সম্পাদনা: সালেহ্ বিপ্লব
এমএইচ
আপনার মতামত লিখুন :