তৌহিদুর রহমান: [২] কুয়াশার চাদরে ঢাকা শীতের সকাল। শিশির ভেজা মাঠে নামতে দেখা একের পর এক ফুলকপির ক্ষেত। নারী-পুরুষ সবাই ব্যস্ত সময় পার করছেন জমি থেকে ফুলকপি তুলতে। কেউ করছেন ক্ষেতের পরিচর্যা আবার কেউ শতাধিক কপির ভাড় নিয়ে যাচ্ছে বাজারে। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলার ধরখার ইউনিয়নের কৃষ্ণনগর গ্রামে গিয়ে দেখা যায় এমন দৃশ্য।
[৪] সরেজমিনে ঘুরে স্থানীয় কৃষক জসিম মিয়ার সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, এবার ৪০ হাজার টাকা খরচ করে জমিতে ফুলকপির চাষ করেছেন। আশা করছেন এবার তার ৭০ থেকে ৮০ হাজার টাকার ফুলকপি বিক্রি হবে।
[৫] কৃষ্ণনগর গ্রামের আরেক কৃষক সুলতান ভূইয়া জানান, গ্রামের সবাই সবজি চাষী। প্রতিবারের মতো এবারও অধিক লাভের আশায় সবাই ফুলকপি চাষ করেছেন। দেড় বিঘা জমিতে দেশী জাতের ফুলকপি চাষ করেছেন। এতে তার খরচ হয়েছে ২৮ থেকে ৩০ হাজার টাকা। ইতোমধ্যে স্থানীয় বাজারে উৎপাদিত কপি ইতিমর্ধ্যে বিক্রি করেছেন ৪০/৪৫ হাজার টাকা। সবমিলিয়ে লাখ টাকার মতো ফুল কপি বিক্রি আশাবাদী আমি।
[৬] চাষী মোঃ হোসেন মিয়া জানান, এক বিঘা জমিতে কপি চারা লাগিয়েছেন। সর্বসাকল্যে তার খরচ হয়েছে ২০ হাজার টাকা। আশা করছেন শেষ পর্যন্ত আবহাওয়া অনুকূল থাকলে ৫০ হাজার টাকা বিক্রি হবে। জমি ও বাড়ির আঙ্গিনায় সবাই কমবেশি ফুলকপিসহ শীতকালীন সবজি চাষ করে। পরিবারের সবাই মিলে পরিচর্যা করে বলে খরচের তুলনায় লাভের হার বেশি।
[৭] কাঁচামাল ব্যবসায়ি মিলন মিয়া বলেন, কৃষ্ণনগর গ্রামের ফুলকপির স্বাদ বেশি, তাই ক্রেতাদের কাছে চাহিদা-কদর বেশি।এই মৌসুমের শুরু থেকেই ক্রেতা-বিক্রেতারা অপেক্ষায় থাকে কখন কৃষ্ণনগর গ্রামের কপি বাজারে আসবে।
[৮] উপজেলা কৃষি অফিস জানায়, কৃষ্ণনগর গ্রামের প্রায় ২০ -থেকে ৩০ হেক্টর জমিতে ফুলকপি চাষ হয়। এই গ্রামে আগামসহ তিনবার ফুল কপি চাষ হয়। তারা বীজ থেকে চারা করে পর্যায়ক্রমে সেই চারা রোপন করেন। ক্ষেতে রাসানিক সারের পরিবর্তে সবাই জৈব সার ও প্রচুর পরিমানে গোবর ব্যবহার করেন। এ ছাড়া প্রতিবছরই নদীর পলি জমিতে এসে পড়ে। এতে জমি আরো উর্বর হয়ে উঠে। ফলন ভালো হয় বলে কৃষকরাও অনেক লাভবান হয়। কৃষি অফিস থেকে তাদেরকে পরামর্শসহ সব ধরনের সহযোগিতা দেওয়া হচ্ছে।
আপনার মতামত লিখুন :