রাজু চৌধুরী: [২] চট্টগ্রাম জেলার বাঁশখালী, আনোয়ারা এবং কক্সবাজার জেলার পেকুয়া, কুতুবদিয়া এলাকার কুখ্যাত জলদস্যূ কবীর বাহিনীর প্রধান নূরুল কবীর, সেকেন্ড ইন কমান্ড মামুন ও তাদের ১৩ সহযোগীকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব ৭, চট্টগ্রাম। এ সময় বিপুল পরিমাণ দেশী, বিদেশী আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।
[৩] গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন- নুরুল আফসার, নুরুল কাদের, মো. হাসান, মো. মামুন, নুরুল কবির (২৯), আব্দুল হামিদ ওরফে কালা মিয়া (৩০), আবু বক্কর (৩১), মো. ইউসুফ (৪৬), গিয়াস উদ্দিন (৩৭), সফিউল আলম ওরফে মানিক (৩৬), আব্দুল খালেক (৪৪), রুবেল উদ্দিন (২৭), সাইপুল ইসলাম জিকো (২৮), মো. সুলতান (৩৬) ও মনজুর আলম। তাদের মধ্যে নুরুল কবির দলটির প্রধান বলে র্যাবের ভাষ্য।
[৪] শনিবার (২১ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় চান্দগাঁও কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র্যাব-৭ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল এম এ. ইউসুফ।
[৫] তিনি বলেন, নূরুল কবীর এই দস্যু বাহিনীর প্রধান। তার সেকেন্ড ইন কমান্ড হিসেবে দায়িত্ব পালন করত মামুন। আর নৌকা ভাড়া করত ইউসুফ। তারা চট্টগ্রাম, বাঁশখালী, কক্সবাজার, কুতুবদিয়া ও বরিশালের বিভিন্ন উপকূলীয় এলাকায় দস্যুবৃত্তি করত। তারা মূলত কুখ্যাত জলদস্যু কবীর বাহিনীর প্রধানের কথা বলে মুক্তিপণ দাবি করে। গ্রেপ্তারকৃত প্রত্যেকের বিরুদ্ধে একাধিক হত্যা ও ডাকাতির মামলা রয়েছে।
[৬] সংবাদ সম্মেলনে আরো বলা হয়, গত ১৪ জানুয়ারি বরিশালের বরগুনা থেকে ১৭ জনকে অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায়ের তথ্য র্যাব-৮ থেকে সরবরাহ করা হয়। পরবর্তীতে একই ঘটনায় অপহৃত ভুক্তভোগীদের পক্ষ থেকে র্যাব-৭ বরাবর একটি অভিযোগ দায়ের করার পর। র্যাব সদর দফতরের গোয়েন্দা বিভাগ, র্যাব-৭ ও র্যাব-৮ ভুক্তভোগীদের উদ্ধারের ব্যাপক আভিযান পরিচালনা করে। জলদস্যুরা র্যাবের অভিযান টের পেয়ে ২ লাখ টাকা মুক্তিপণ নিয়ে ১৬ জনকে ছেড়ে দেয়। তবে আনোয়ার নামে একজনকে আটকে রাখে। পরে জলদস্যু প্রধান কবীরকে গ্রেপ্তারে অভিযানে নামে র্যাব-৭। অভিযানের প্রথমে নুরুল আফসার, হাসান ও মামুনকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়।
[৭] তাদের দেওয়া তথ্যানুযায়ী অন্য জলদুস্যুদের চকরিয়া থানার ডান্ডিবাজার এলাকার কবীরের আস্তানা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। ডাকাতির প্রস্তুতিকালে ২টি বিদেশি পিস্তল, ৬টি ওয়ান শুটারগান, ৪টি কার্তুজ, ৫টি কিরিচ, ১টি ছোরা, ১টি রামদা ও ২টি হাঁসুয়া উদ্ধার করা হয়।
[৮] গ্রেপ্তারকৃত দস্যুরা অপহরণের শিকার আনোয়ার হোসেন সম্পর্কে র্যাবকে জানান, অপহৃত জেলেদের ব্যাপক নির্যাতনের ফলে জেলে আনোয়ার অসুস্থ হয়ে পড়ে। তাকে নির্মমভাবে মারধরের একপর্যায়ে জেলে আনোয়ার হোসেন অসুস্থ বোধ করলে তাকে সাগরে নিক্ষেপ করা হয়। এখনো পর্যন্ত তার ভাগ্যে কি ঘটেছে জানা সম্ভব হয়নি। তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
[৯] চট্টগ্রাম জেলার বাঁশখালী, আনোয়ারা এবং কক্সবাজার জেলার পেকুয়া, কুতুবদিয়া অঞ্চল বেছে নিলেও এই অঞ্চল গুলোতে জলদস্যূ মুক্ত করতে র্যাব-৭, চট্টগ্রামের ব্যপক অভিযান অব্যাহত থাকবে বলেও জানান র্যাব-৭, চট্টগ্রাম অধিনায়ক।
আপনার মতামত লিখুন :