মোরশেদ শফিউল হাসান: নিজের শিক্ষকতা জীবনে এমন কিছু সহকর্মীর সাক্ষাৎ পেয়েছি, যারা হতে চেয়েছিলেন হয়তো পুলিশ, প্রশাসক কিংবা কাস্টমস কর্মকর্তা, নিতান্ত ভাগ্যদোষে কিংবা ঘটনাক্রমে শিক্ষক হয়ে পড়েছেন। না, কোনো পেশা বা চাকরিকে আমি অসম্মান বা হেয় করছি না। সব পেশাতেই সৎ, বিনয়ী, বিবেচক ও বিচারবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষ কমবেশি আছেন, আমি জানি। দেখা বা পরিচয়ও পেয়েছি। তবে আমি যেসব শিক্ষকের কথা বলছি তাঁদের অতৃপ্ত আকাক্সক্ষা বা বিশেষ মনোবৃত্তির প্রকাশ ঘটে ছাত্র-ছাত্রী এমনকি সুযোগমতো সহকর্মীদের সঙ্গে আচরণেও। পদ, ক্ষমতা, প্রভাব ও বিত্ত-বৈভবকে জীবনের লক্ষ্য বা মোক্ষ জ্ঞান করার ফলে আত্মসম্মানবোধ বা চক্ষুলজ্জার বিষয়টিও একপর্যায়ে তাঁদের কাছে তুচ্ছ হয়ে যায়।
উচ্চপদ লাভের জন্য ক্ষমতাসীনদের তোষামোদিতে তাঁরা যেমন একে অপরের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় নামেন, তাতে অন্যায় বা দোষের কিছু দেখেন না, তেমনি সে পদ টিকিয়ে রাখতে হেন কাজ নেই যা করতে পারেন না। এ যেন টাকা দিয়ে পুলিশের চাকরি বা বিশেষ জায়গায় পোস্টিং নিয়ে তা টিকিয়ে রাখার জন্য চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাস করার মতো ব্যাপার। নিজের শিক্ষক পরিচয় ভুলে, শিক্ষার্থী ও সহকর্মীদের সঙ্গে সমদর্শী ব্যবহারের পরিবর্তে দলীয় ক্যাডারের মতো আচরণে অভ্যস্ত হয়ে পড়েন তাঁরা। নিজের স্বার্থে ছাত্র ও সহকর্মীদের ব্যবহার করেন, তাঁদের মধ্যে বিভেদ-সংঘাত উসকে দেন। উপরে-নিচে সুযোগ-সুবিধার ভাগ ছড়িয়ে নিজেকে সুরক্ষিত রাখা এবং শেষ মুহূর্ত অবধি পদ আঁকড়ে থাকার মরিয়া চেষ্টা করেন।
সাম্প্রতিককালে দেশের বেশ কটি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পদাধিকারীর আচরণ এই সত্য বা বাস্তবতাকেই অত্যন্ত কুশ্রীভাবে আমাদের চোখের সামনে তুলে ধরেছে। সর্বশেষ শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের চলমান ঘটনাপ্রবাহ তারই একটি প্রকট দৃষ্টান্ত। আলাদা বা বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। ফেসবুক থেকে
আপনার মতামত লিখুন :