রাশিদ রিয়াজ : করোনা মহামারিকালে খাদ্য ও অন্যান্য খরচ অস্বাভাবিক বৃদ্ধির কারণে ব্রিটেনে বসবাসরত বাংলাদেশি সম্প্রদায়ের মধ্যে দারিদ্রতা সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে। দেশটিতে থাকা বাংলাদেশি ও সোমালি সম্প্রদায়ের দারিদ্রতা নিয়ে স্কাই নিউজের এক রিপোর্টে তাদের দুর্দশার কথা বলা হয়েছে, এই দুটি সম্প্রদায় বরাবরই দেশটির দরিদ্র সম্প্রদায়গুলোর কাতারে ছিল। কিন্তু এখন তাদের পরিস্থিতি ক্রমশ খারাপ থেকে আরও খারাপ হচ্ছে। অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছে যে, অনেক মা সন্তানকে খাওয়াতে গিয়ে নিজে খেতে পারছেন না আবার নিজের খাবারের ব্যবস্থা হলেও সন্তানকে থাকতে হচ্ছে অভুক্ত।
বাংলাদেশে জন্ম নেয়া ওলিউর রহমান এমন পরিস্থিতির কথা বলতে গিয়ে জানান, তিনি গত ২০ বছরেরও বেশি সময় ধরে দেশটিতে শাক-সবজির ব্যবসা করছেন। ফলে পূর্ব লন্ডনের বাংলাদেশি সম্প্রদায়ের মধ্যে তিনি বেশ পরিচিত মুখ। এ কারণে অনেকেই অভাবের কারণে তার কাছে বিনামূল্যে শাক-সবজি চাইতে আসেন। কিন্তু তাকে তাদেরকে ফিরিয়ে দিতে হয়। কখনো কখনো ওলিউর রহমানকে বাকিতে ফল ও সবজি বিক্রি করতে হয়। তিনি জানান, মানুষের কাছে যথেষ্ট অর্থ নেই। সেখানেই একটি জুয়েলারির দোকান চালান ইমন সরোয়ার। তিনি বলেন, এখন আর কোনো ক্রেতা নেই। কেউ আর বিলাসী পণ্য কিনতে চায় না। তার একটি পোশাকের দোকানও রয়েছে। সেখানেও তাকে পণ্য বিক্রি করতে প্রচুর দর কষাকষি করতে হয়। কারণ এই মুহুর্তে মানুষকে নিত্য চাহিদা মিটাতে হিমসিম খেতে হচ্ছে। ইমন বলেন, ব্যবসা খুব কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে, জীবনও কঠিন হয়ে গেছে।
মূলত বৃটেনে দিন দিন বাড়ছে খাদ্যের দাম ও জীবন যাপনের খরচ। এতে দেশটিতে থাকা বাংলাদেশিদের একাংশ দারিদ্রতায় পতিত হচ্ছেন। স্থানীয় বাংলাদেশিদের সাহায্য করতে পূর্ব লন্ডনে ‘ইস্ট এন্ড’ নামে একটি প্রোজেক্ট পরিচালনা করেন জোসনা বেগম। তিনি বলেন, আমরা বিদেশে দরিদ্র দেশগুলোতে কোট, কম্বল ও খাবার সাহায্য পাঠাই। কিন্তু বিব্রতকর হলেও সত্যি যে, আমরা এখন লন্ডনেও একই ধরণের কার্যক্রম পরিচালনা করছি। তিনি অবাক হয়ে প্রশ্ন করেন, কেনো এমন পরিস্থিতি হলো! মানুষ কেনো হিমসিম খাচ্ছে? জোসনা বেগম আরও বলেন, আমরা কোভিড মহামারি মোকাবেলা করেছি। কিন্তু এই অর্থনৈতিক সংকট আরেকটি মহামারি। এই মহামারি দেশের সকল পরিবারের উপরেই প্রভাব ফেলবে। আমি ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তিত।
আপনার মতামত লিখুন :