সুজন কৈরী : [২] মানবাধিকার লঙ্ঘনের দায়ে র্যাবকে শান্তিরক্ষা মিশন থেকে বাদ দিতে ১২টি মানবাধিকার সংস্থা জাতিসংঘকে চিঠি দেওয়ার প্রতিক্রিয়ায় বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় র্যাবের লিগ্যাল এন্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, আমরা মানবাধিকার সংস্থাগুলোর চিঠির বিষয়টি অফিসিয়াল পাইনি। তবে গণমাধ্যমের মাধ্যমে জানতে পেরেছি।
[৩] আপনাদের জানাতে চাই, আমরা সবসময় মানবিকতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করছি। অপরাধীদের আত্মসমর্পণের সুযোগ দিয়ে আমরা মানবিকতার নজির স্থাপন করেছি। আমরা বলবো, র্যাব মানবাধিকার লুণ্ঠন করেনি বরং মানবাধিকার রক্ষা করে চলছে। র্যাবের হাতে আত্মসমর্পণকারী দস্যুদের মধ্যে সুন্দরবনে ৩২৮ ও চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে ৭৭ জলদস্যু এবং ১৬ জঙ্গি রয়েছে।
[৪] র্যাবের মুখপাত্র বলেন, আমাদের নয় হাজার সদস্য। তাদের মধ্যে ২৯ জন জীবন দিয়েছেন। মানবাধিকার রক্ষায় এবং আইনশৃঙ্খলা সম্মুন্নত রাখতে আমাদের এক হাজারের বেশি সদস্যের অঙ্গহানি হয়েছে। আহত হয়েছেন দুই হাজারের বেশি সদস্য। নয় হাজার সদস্যের বাহিনীর এমন আত্মত্যাগ বিশ্বের কোনো বাহিনীর আছে কি না আমার সন্দেহ রয়েছে।
[৫] তিনি বলেন, যারা মানবাধিকার লঙ্ঘন করছে তাদের আমরা গ্রেপ্তার করে আইনের হাতে তুলে দিতে বদ্ধপরিকর। এই পর্যন্ত দুই হাজারের বেশি ধর্ষকসহ নারী পাচার ও শিশু পাচারকারীকে আটক করে র্যাব আইনের হাতে তুলে দিয়েছে। সম্প্রতি পার্শ্ববর্তী দেশে যখন নারী পাচার করা হয়েছিলো তখন র্যাবই অভিযুক্তদের ধরে। পাশাপাশি পাচার হয়ে যাওয়া নারী ও শিশুদের উদ্ধার করে ফিরিয়ে আনা হয়।
[৬] মঈন বলেন, ২০২০ সালে বাংলাদেশে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড কমেছে বলে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্ট। সেখানে তারা নিজেরাই স্বীকার করেছে, ২০২০ সালে বাংলাদেশে তিনটি সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটলেও কোনো প্রাণহানি হয়নি। সেখানে বাংলাদেশের পাশাপাশি বিভিন্ন দেশের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের চিত্র বিশ্লেষণ করা হয়। ওইসব দেশের তুলনায় বাংলাদেশে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড কমেছে বলে সেখানে তারা উল্লেখ করেছে।
[৭] প্রতিবেদনে বলা হয়, সন্ত্রাসবাদ রুখতে স্পষ্টভাবে জিরো টলারেন্স নীতি নিয়ে কাজ অব্যাহত রেখেছে বাংলাদেশ সরকার। বাহিনীর প্রশংসা করে প্রতিবেদনে র্যাবের কার্যক্রমসহ সন্ত্রাসবাদ নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশের পদক্ষেপ তুলে ধরা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, র্যাব বিদেশের সঙ্গে যুক্ত জঙ্গি বা সন্ত্রাসীদের (ফরেন টেরোরিস্ট ফাইটার- এফটিএফ) গ্রেপ্তার বা তাদের বিষয়ে অনুসন্ধনে আমূল সংস্কার ও পুর্নবাসন কর্মসূচির হাতে নিয়েছে।
[৮] মানবাধিকার লঙ্ঘনের দায়ে র্যাবকে শান্তিরক্ষা মিশন থেকে বাদ দিতে ১২টি মানবাধিকার সংস্থা জাতিসংঘকে চিঠি দিয়েছে। হিউম্যান রাইটস ওয়াচসহ ১২টি মানবাধিকার সংস্থা ২০২১ সালের নভেম্বরে জাতিসংঘের আন্ডার-সেক্রেটারি-জেনারেল জ্যঁ-পিয়েরে ল্যাক্রয়িক্সকে এই চিঠি দেয়। বৃহস্পতিবার হিউম্যান রাইটস ওয়াচের ওয়েবসাইটে এই চিঠির কথা প্রকাশ করা হয়।